‘ফেরার লক্ষ্য বিপিএল, রিটেনশন বাড়লে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়বে’ — খোলামেলা তামিম ইকবাল
৯৭ প্রতিবেদক: বিল্লাল হোসেন শিমুল
প্রকাশ: 11 ঘন্টা আগেআপডেট: 1 সেকেন্ড আগে
‘ফেরার লক্ষ্য বিপিএল, রিটেনশন বাড়লে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়বে’ — খোলামেলা তামিম ইকবাল
‘ফেরার লক্ষ্য বিপিএল, রিটেনশন বাড়লে ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়বে’ — খোলামেলা তামিম ইকবাল
বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক, দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ওপেনার তামিম ইকবালের সঙ্গে কথা বলেছেন ক্রিকেট৯৭ এর প্রতিবেদক বিল্লাল হোসেন শিমুল। তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা, কবে মাঠে ফিরবেন, সিএ স্পোর্টসের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততা, বিপিএল ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা, বাংলাদেশ দল নিয়ে ভাবনা- নানা ইস্যুতে উত্তর দিয়েছেন ক্রিকেট৯৭কে। ক্রিকেট৯৭ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত তামিম ইকবালের এই সাক্ষাৎকার ক্রিকেট৯৭ পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হল।
ক্রিকেট৯৭ঃ চিকিৎসক দেখাতে দ্বিতীয় দফায় সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন, তামিম ইকবাল এখন কেমন আছেন?
তামিম ইকবালঃ ভালো আছি, আলহামদুলিল্লাহ। চিকিৎসকের কাছ থেকে ভালো রিপোর্ট এসেছে। সব দিক থেকে আলহামদুলিল্লাহ, ভালো আছি।
ক্রিকেট৯৭ঃ এর আগে আমরা জেনেছিলেন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি মাঠে ফিরবেন। কবে নাগাদ ফেরা হচ্ছে মাঠে?
তামিম ইকবালঃইন শা আল্লাহ, বিপিএল খেলার চেষ্টা করব। ট্রেনিং শুরু করেছি, বাসায় জিমে অ্যাক্টিভিটি করছি। হয়তো ব্যাটিং শুরু করতে করতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে চেষ্টা করব বিপিএল খেলার।
ক্রিকেট৯৭ঃগেলবছর এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে খেলেছেন, এবারে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি শুরু হচ্ছে...
তামিম ইকবালঃনা, সুযোগ আছে খেলার (এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে), সুযোগ আছে। হয়তো পুরোটা যদি নাও খেলি, ২-৩ টা ম্যাচ খেলব।
ক্রিকেট৯৭ঃসিএ স্পোর্টসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক বহুদিনের, বাংলাদেশে সিএ স্পোর্টসকে কোথায় দেখতে চান?
তামিম ইকবালঃদেখেন, আমার কাছে মনে হয়ে এটা (সিএ স্পোর্টস) ইতোমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত একটা কোম্পানি। আমি এখানে যুক্ত হবার আগে থেকেই প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি। এখানে আমি কেবল একটা জিনিসই করার চেষ্টা করব যেনো যারা কিনছে তাঁরা যেনো ভালো প্রোডাক্ট পাক, যে টাকাটা তাঁরা দিচ্ছে সেই অনুযায়ীই প্রোডাক্ট পাক। এটাই আমার লক্ষ্য।
ক্রিকেট৯৭ঃঅনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য প্রান্তিক নওরোজ নাবিল, অসুস্থতার জন্য ক্রিকেট খেলা ছেড়ে দেওয়া ও আপনার সঙ্গে সিএ স্পোর্টস বাংলাদেশে যুক্ত হওয়া, এটা নিয়ে কিছু বলেন।
তামিম ইকবালঃআমার কাছে মনে হয়েছে সে এই জায়গাতে ভালো করতে পারবে দেখেই তাঁকে নেওয়া। সে ভালো করছেও।
ক্রিকেট৯৭ঃতামিম ইকবাল আরও কয়টা মৌসুম ঘরোয়া লিগে খেলতে চান?
তামিম ইকবালঃএটা তো বলা যায় না ভাইয়া। আসলে এই বছরটা চেষ্টা করে দেখি কেমন লাগে, কেমন ফিল করি। এরপর ডিসাইড করব।
ক্রিকেট৯৭ঃ আপনি ভারত সিরিজে ধারাভাষ্য দিয়েছিলেন, সেখানে রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথার লড়াই জমেছিল। সবাই আপনার ধারাভাষ্যের প্রশংসা করেছিল। ক্যারিয়ার শেষে ধারাভাষ্যে স্থায়ী হবার সম্ভাবনা কতটুকু?
তামিম ইকবালঃআমি নিশ্চিত না, এটা (ধারাভাষ্য ক্যারিয়ার হিসাবে নেওয়া) নিয়ে আমি বেশি চিন্তা করিনি। হয়তো বা সামনে দেখতে পারেন ধারাভাষ্য দিচ্ছি। দেখা যাক, যদি আমার কাছে মনে হয় এটা (ধারাভাষ্য) পেশা হিসাবে হতে পারে তাহলে অবশ্যই। তবে, আগেও বলেছি, আবারও বলছি ধারাভাষ্য দেওয়াটা খুব সহজ না। হয়তো প্রথমবার আমাকে শুনেছে দেখে অনেক ভালো লেগেছে। তবে বারেবারে শুনলে হয়তো ভালো নাও লাগতে পারে। এই একটা জিনিসকে যদি পেশা হিসাবে নিতে চাই তাহলে এটাকে অনেক সিরিয়াসলি নিতে হবে।
ক্রিকেট৯৭ঃ সম্প্রতি বিসিবিতে গিয়েছিলেন, সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সঙ্গে কথা হয়েছে বিপিএল নিয়ে। সেখানে আপনি কি ইনপুট দিয়েছিলেন?
তামিম ইকবালঃ এটা (ইনপুট) ওনাদের কাছেই থাকুক। আমার কাছে যেটা মনে হয়েছে যেটা করলে ভালো হবে সেগুলো আমি তাদেরকে জানিয়েছি। রিটেনশন একটা ব্যাপার যেটা আমি বলতে পারি, দেখবেন বিশ্বের যেকোন সফল টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে ৭ টা, ৮ টা, ১০ টা প্লেয়ার রিটেইন করে। আইপিএলে পুরো স্কোয়াড রিটেইন করার সুযোগ থাকে মেগা অকশনের আগ অব্দি, মেগা অকশনে ৬ টা, পিএসএলে ৮ টা রিটেনশন থাকে। কি কারণে আমি জানি না যে আমরা কেবল ২টা, ৩ টা রিটেনশন দিই! এটা করাতে যে জিনিসটা হয় যে একটা দল কোন সময় ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করতে পারে না। কারণ আজ এই প্লেয়ার এখানে খেলছে, কাল ওখানে। আজ আমি এই টিম, কাল আমি ওই টিম করলে কখনো একটা টিমের ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি হয় না। আর ফ্র্যাঞ্চাইজির যদি ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি না হয়, তাহলে বিপিএলেরও ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ে না। তো আমার কাছে মনে হয় অন্তত ৭ জন, ৮ জন রিটেনশন হওয়া উচিত। সেটা কোন দলের নতুন মালিক আসুক বা পুরাতন মালিক থাকুক। যদি আপনার মনে থাকে আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালসকে দুই বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সেখানে কিন্তু এমন হয়নি যে নতুন দল আসছে দেখে গোটা অকশন নতুন করে করা। ওই দুই দলের জায়গায় যে দুইটি দল এসেছিল তাঁদের জন্য ড্রাফট বা অকশন করা হয়েছিল। সেখান থেকে তাঁরা প্লেয়ার নিয়েছে। তো আমার কাছে মনে হয় রিটেনশন ৭-৮ জনের হতে হবে, অন্ততপক্ষে।
ক্রিকেট৯৭ঃবিপিএলে যদি কখনও দায়িত্ব পান, তাহলে কোন জিনিসটা পরিবর্তন করতে চাইবেন, এবছরও নানা সমালোচনা ছিল।
তামিম ইকবালঃ সমালোচনা তো ছিলই, কিছু কিছু জিনিস অবশ্যই ভালো হয়নি। তবে আপনাদেরকেও (গণমাধ্যম) একটু পজিটিভ হতে হবে। কারণ, বিপিএল আসলে সমালোচনা নিয়েই আলচনা করেন, প্রশ্ন করেন। আমি এটা মানি সমালোচনা হবার মত অনেক কিছু হয় দেখেই সমালোচনা আসে। আমার মনে হয় মিডিয়া এখানে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এত নেগেটিভলি না দেখে এখানে পজিটিভলি দেখলে জিনিসটা বেটার হয়। আর বিসিবির দিক থেকে আমার মনে হয় অনেককিছু আছে যেগুলো ঠিক করা দরকার। এগুলো ঠিক হলে অটোমেটিক সমালোচনা কমে যাবে।
ক্রিকেট৯৭ঃ ডাক্তার আব্দুন নুর তুষার আপনার সঙ্গে ছবি দিয়ে আপনাকে ভবিষ্যতে বিসিবি সভাপতি হিসাবে দেখতে চেয়েছেন। আপনার মন্তব্য কি!
তামিম ইকবালঃ(হাসি), এটা তাঁর মন্তব্য। আমি কৃতজ্ঞ যদি তিনি এমনটা মনে করে থাকেন। তবে আমি এই জিনসটা নিয়ে এখন এরকম কিছু ভাবছিনা।
ক্রিকেট৯৭ঃবাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কাতে তাঁদের বিপক্ষে ও ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ (টি-টোয়েন্টি) জিতেছে, আপনি মাঠে বসে একটা ম্যাচ দেখেছেনও। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ সামনে রেখে এই দল নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?
তামিম ইকবালঃ অবশ্যই দলটা দারুণ এক্সাইটিং কিছু ক্রিকেটারে ভরা। এই দল সফল হবে, ব্যর্থও হবে। আমার কাছে মনে হয় এই দলটাকে সবার ব্যাকিংটা করা উচিত, ধৈর্য্যটা দেখান উচিত। দেখেন এই দলে বেশিরভাগ তরুণ ক্রিকেটার, তাঁরা ব্যর্থ হবেই। তবে আমরা যদি তাঁদের ঠিকঠাক ব্যাকিং করতে থাকি, আর তাঁরা তাঁদের কাজটা করতে থাকে তাহলে তাঁরা ভালো করবেই।
ক্রিকেট৯৭ঃ শেষ প্রশ্ন, তাইজুল ইসলাম কি আসলেই আন্ডাররেটেড ক্রিকেটার?
তামিম ইকবালঃহ্যাঁ, আমার মতে সে আন্ডাররেটেড ক্রিকেটার।