Image

অমিত-পিনাকের মতো বাকিরা আলো দিলেই শিরোপা সিলেটের

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ : 3 দিন আগেআপডেট: 1 সেকেন্ড আগে
অমিত-পিনাকের মতো বাকিরা আলো দিলেই শিরোপা সিলেটের

অমিত-পিনাকের মতো বাকিরা আলো দিলেই শিরোপা সিলেটের

অমিত-পিনাকের মতো বাকিরা আলো দিলেই শিরোপা সিলেটের

চলতি জাতীয় ক্রিকেট লিগের শিরোপার খুব কাছেই সিলেট বিভাগ। লিগের পঞ্চম রাউন্ড শেষে ২৯ পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে সুরমা পাড়ের দল। শিরোপার অপূর্ণতা ঘুচাতে লিগের শেষ দুই ম্যাচে ভাল করতেই হবে অমিত হাসানের নেতৃত্বে থাকা সিলেটকে। সেখানে মূল ভূমিকা পালন করতে হবে সিলেটের ব্যাটারদের।  

সিলেটের বোলিং নিয়ে কোনো সংশয় না থাকলেও ব্যাটিং নিয়ে রয়েছে যত ভয়। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শিরোপার খুব কাছে গিয়েও রানার্সআপেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে সিলেটকে। 

আর শেষ দিকের ম্যাচগুলোতে তালগোল পাকানোর নজির তো আছেই। আর ঘরের মাঠের পরিসংখ্যানও সিলেটের পক্ষে না। আর ব্যাটিংয়ে অমিত হাসান ও পিনাক ঘোষ ছাড়া বড় রানের দেখা পাচ্ছেন না আর তেমন কেউ।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকের প্রায় ছয় বছর পর সেঞ্চুরি দেখা পেয়েছেন সিলেটের আসাদুল্লাহ আল গালিব। সেঞ্চুরির পর এবার তার নামের পাশে আছে একটি ফিফটিও। অন্যদিকে ওপেনার তৌফিক খান তুষারের ব্যাটেও বড় রানের দেখা মিলছে না। পাঁচ ম্যাচের আট ইনিংসে এই ওপেনার রান করেছেন মাত্র ১৯১। যেখানে ফিফটি মাত্র একটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটিও ৪২ রানের। 

নবীনদের মধ্যে ইতিবাচক শুরু পেয়েছেন মুবিন আহমেদ দিশান। সুনামগঞ্জের এই তরুণ নিজের প্রথম তিন ম্যাচে ২০ গড়ে রান করেছেন ৮১। যেখানে ৪৩ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি তার সামর্থ্যের প্রমাণ দিচ্ছে। আরেক তরুণ তোফায়েল আহমেদ, ৯ উইকেট শিকারে পেস বোলিংয়ের নিজের প্রমাণ দিলেও ব্যাটিংয়ে এখনও আশানুরূপ কিছু করতে পারেননি। তবে লিগের সর্বশেষ ম্যাচে ৬ ছক্কায় ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংসে অবশ্যই নিজের ব্যাটিং সামর্থ্য জানান দিয়েছেন তোফায়েল। 

শিরোপার খুব কাছে থাকা সিলেটের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ লিগের শেষ দুই ম্যাচ। সেখানে ভাল করতে হলে অমিত-পিনাকের সাথে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠতে হবে তুষার-দিশান-তোফায়েলদের।

গেল বছর শেষ দুই ম্যাচের একটিতে জিতেছিল সিলেট, অন্য ম্যাচে হেরেছিল ঢাকা বিভাগের কাছে। সে বছর ৬ ম্যাচের ২ জয়ে ১৯ পয়েন্ট নিয়ে সিলেট হয়েছিল রানার্সআপ। 

তার আরো এক বছর পিছনে গেলে দেখা যাবে যে, ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শেষ দুই ম্যাচ সিলেট হেরেছে বিশাল ব্যবধানে। নিজেদের মাঠে সিলেট ঢাকার কাছে হেরেছিল ৩৩৩ রানে। আর বগুড়ায় বোলারদের ম্যাচে সিলেটকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল রংপুর বিভাগ। 

সব মিলিয়ে লিগের শেষ দুই ম্যাচ নিয়ে কী ভাবছেন সিলেটের প্রধান কোচ রাজিন সালেহ? শিরোপা ঘরে তুলতে কতটা সাবধানতা অবলম্বন করছেন সিলেটের এই কোচ। সেটাই জানা যাক রাজিনের মুখেই, ‘আসলে ছেলেরা যেভাবে খেলছে, তাতে চ্যালেঞ্জের কিছু নাই। সিলেটে খেলা, এখানে উইকেটে ঘাস থাকে৷ সকালে কুয়াশাও থাকবে, আমাদের বোলাররা যেভাবে খেলছে তাতে ব্যাটাররা দুই-একটা ভাল ইনিংস খেলে দিতে পারলে কঠিন হবে না।’ 

তবে শিরোপা নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলতে নারাজ রাজিন, চ্যাম্পিয়নশীপের জন্য তিনি অপেক্ষা করতে চান শেষ ম্যাচের ফল অব্দি। সিলেটের প্রধান কোচ বলেন, ‘সিলেট শিরোপার দ্বারপ্রান্তে আছে এটা ঠিক। তবে এখনই ধরে নিচ্ছি না যে আমরাই চ্যাম্পিয়ন। এখনও অনেক পথ বাকী। শেষ দুই ম্যাচে ভাল খেলার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে যেতে হবে। এবং শেষ ম্যাচের ফলের আগ পর্যন্ত আমি বলতে পারছি না যে আমরা চ্যাম্পিয়ন। আসলে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে লড়াই করেই হতে হবে। শুরুর পাঁচ ম্যাচের মতো খেলতে পারলে অবশ্যই ফল আমাদের পক্ষে আসবে, ইনশাআল্লাহ।’

সিলেটের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সর্বোচ্চ (৩২০) উইকেট শিকারি এনামুল হক জুনিয়রের পরামর্শ শেষ দুই ম্যাচে খেলায় কোনো রকম পরিবর্তন না এনে আগের মতোই খেলা। এক্ষেত্রে ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে বলে মত এনামুলের। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়ের নায়ক বলেন, ‘পুরো মৌসুম যেভাবে খেলে আসছে, সেভাবেই খেলা উচিত। খেলায় কোনো রকম পরিবর্তন আনা যাবে না। আমাদের বোলাররা অসাধারণ খেলছে। শেষ দুই ম্যাচে অমিত-পিনাকের সাথে সিলেটের তরুণরা ব্যাটিংয়ে দায়িত্ব নিয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারলে দারুণ কিছু হবে, ইনশাআল্লাহ। এক্ষেত্রে ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।’

শেষটা ভাল করে শিরোপা ঘরে তুলতে পারলে এটাই হবে সিলেট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন। এনামুল বলেন, ‘আমরা আগে দ্বিতীয় স্তর থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে প্রথম স্তরে উঠি। এর আগে ওয়ানডে শিরোপা জিতেছিল সিলেট।  এবার শেষ দুই ম্যাচ ভাল করে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে, এটাই হবে সিলেট ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন। সিলেট যেহেতু এতোদূর আসতে পেরেছে, তাই শিরোপাও ঘরে তুলতে পারবে, ইনশাআল্লাহ।’

এনামুলের মতো অলক কাপালিও চান শেষ যে দুই ম্যাচে আছে সেখানে যেন কোনো পরিবর্তন না আসে। সিলেটে যেভাবে খেলে আসছে সেভাবেই খেলার পরামর্শ অলকের, ‘শেষ দুই ম্যাচে স্বাভাবিক খেলাটাই উচিত। এখানে কোনো পরিবর্তন আনা ঠিক হবে না। ড্র করার চিন্তা না করে খেলা ভাল। সিলেট যখন ব্যাটিং করবে তখন যেন লম্বা সময় ধরে ব্যাটিং করার চিন্তা থাকে, বড় সংগ্রহ দাঁড় করানো চেষ্টা করতে হবে। বোলিং করলে প্রতিপক্ষকে কম রানে আটকানোর চেষ্টা করতে হবে। যত কমে আটকানো যায়।’

ক্রিকেটারদের ভাল করার প্রবণতায় মুগ্ধ অলক, বিশেষ করে খালেদ আহমেদের ফিরে আসার চেষ্টা দেখে উচ্ছ্বসিত সিলেটের সাবেক এই তারকা অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘খালেদ দল থেকে বাদ পড়ার নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে। সে খুব ভালোভাবে ফিরে আসার চেষ্টা করছে। এটা সিলেটের জন্য একটা ইতিবাচক দিক, সে নিজেকে ফিরে পেতে আরো মরিয়া হবে, সিলেটও তাতে লাভবান হবে। রাজা (রেজাউর রহমান) দারুণ ফর্মে আছে৷ অমিতও রানের মধ্যে আছে, গালিবের ব্যাটেও রান আসছে। এদিক থেকে সিলেটের ভাল একটা সুযোগ আছে। আগে যেটা হতো, আমরা শুরুতেই পিছিয়ে পড়তাম আর লিগের মাঝে এসে ঘুরে দাঁড়াতাম। এবার শুরু থেকেই ভাল অবস্থান আছে সিলেট। এদিক থেকে ভাল অবস্থানেই আছে, শুরুর সেই রিদম ধরে রেখে শেষটা করতে পারলেই শিরোপা সিলেটেই আসবে।’

Details Bottom
Details ad One
Details Two
Details Three