Image

উইকেটের ফিফটিতে রিশাদের স্বাতন্ত্র্য

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 5 ঘন্টা আগেআপডেট: 12 মিনিট আগে
উইকেটের ফিফটিতে রিশাদের স্বাতন্ত্র্য

উইকেটের ফিফটিতে রিশাদের স্বাতন্ত্র্য

উইকেটের ফিফটিতে রিশাদের স্বাতন্ত্র্য

এশিয়া কাপে হংকংকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এমন জয়ে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস। ৩৯ বলে ৫৯ রানের ইনিংস খেলার পথে ছুঁয়েছেন একাধিক মাইলফলক, ভেঙেছেন কিছু রেকর্ডও। লিটনের পাশাপাশি আলো ছড়িয়েছেন তরুণ লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনও। বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্সে তিনি স্পর্শ করেছেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ৫০ উইকেটের মাইলফলক।

হংকংয়ের ইনিংসে ১৯তম ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট তুলে নিয়ে নিজের নামের পাশে যোগ করেন কাঙ্ক্ষিত ‘৫০তম’ উইকেটটি। ৫০ সংখ্যাটি দেখতে খুব বড় মনে না হলেও একজন বোলারের জন্য এটি হতে পারে অনেক কাঙ্ক্ষিত একটি অর্জন। কারণ ব্যাটাররা যেখানে নিয়মিত ফিফটির সুযোগ পান, বোলারদের ক্ষেত্রে এমন মাইলফলকে পৌঁছানো ততটা সহজ নয়। আর যদি তিনি হন লেগ স্পিনার, তাহলে সেটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ঘটনা। কারণ লেগ স্পিনারদের প্রতি আস্থার ঘাটতি বরাবরের। ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব একটা সুযোগ পান না তাঁরা, আর জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও তা বেশ ক্ষণস্থায়ী হয়।

সেই তালিকায় পড়েন অমিত সম্ভাবনাময়ী লেগ স্পিনার জুবায়ের হোসেন লিখন। যিনি টেস্ট অভিষেকে নিজের জাত চিনিয়েও পরবর্তীতে নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও তাঁকে খুব একটা দেখা যায়নি। বাংলাদেশে লেগ স্পিনে আরেকটি নাম ছিল তানভীর হায়দার খান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেকেই পড়েন নিষেধাজ্ঞার মুখে, এরপর আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি তাঁর পক্ষে। তবে এখনও তিনি ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন।

সবদিক বিবেচনায় ব্যতিক্রম কেবল রিশাদ হোসেন। ২০২৩ সালে চট্টগ্রামে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয় এই লেগ স্পিনারের। এরপর থেকেই বাংলাদেশের জার্সিতে খেলেছেন ৪৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ৪১ ইনিংসে শিকার করেছেন ৫০টি উইকেট। হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়া কাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই দুটি উইকেট তুলে নিয়ে পৌঁছেছেন কাঙ্ক্ষিত সেই মাইলফলকে।

ইনিংসের ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ ফেরান হংকংয়ের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪২ রান করা নিজকাত খানকে। ওভারের শেষ বলে কিনসিত খানকে এলবিডব্লিউ করে রিশাদ পূর্ণ করেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিজের ৫০ উইকেট। বর্তমানে তাঁর সেরা বোলিং ফিগার ৩/১৮।

এই অর্জনের মাধ্যমে রিশাদ উঠে এসেছেন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি উইকেট শিকারিদের তালিকার ছয়ে। তালিকার শীর্ষে আছেন সাকিব আল হাসান (১২৯ ম্যাচে ১৪৯ উইকেট), এরপর রয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান (১১৪ ম্যাচে ১৪২ উইকেট), তাসকিন আহমেদ (৭৭ ইনিংসে ৯৬ উইকেট), শরীফুল ইসলাম (৫০ ইনিংসে ৫৮ উইকেট) এবং শেখ মাহেদী হাসান (৬২ ইনিংসে ৫৭ উইকেট)।

টি-টোয়েন্টির বাইরে রিশাদ খেলেছেন ৯টি ওয়ানডে, সেখানে তাঁর উইকেট সংখ্যা ৮। 

দেশের হয়ে খেলার পাশাপাশি বিপিএল-এও নিজের জায়গা পাকা করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, পিএসএল, গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি ও বিগ ব্যাশের মতো আন্তর্জাতিক ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও নিয়মিত মুখ হয়ে উঠছেন এই লেগ স্পিনার।

বাংলাদেশের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী রিশাদকে নিয়ে ম্যাচশেষে অধিনায়ক লিটন দাস বলেন, “শেষ কয়েক বছরে আমাদের পেস বিভাগ খুব ভালো করেছে। আমরা একজন লেগ স্পিনার খুঁজছিলাম, আর রিশাদ গত দুই–তিন বছর ধরে বাংলাদেশ দলের জন্য ভালো করছে।”

বাংলাদেশের ক্রিকেটে যেখানে লেগ স্পিন প্রায় বিলুপ্তপ্রায় এক শিল্প, সেখানে রিশাদ হোসেন যেন এক নতুন সম্ভাবনার নাম।
 

Details Bottom
Details ad One
Details Two
Details Three