টানা পাঁচ ফিফটির পর সেঞ্চুরি, জাকিরের ব্যাটে জিইয়ে সিলেটের শিরোপার আশা

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 51 মিনিট আগে আপডেট: 12 মিনিট আগে
টানা পাঁচ ফিফটির পর সেঞ্চুরি, জাকিরের ব্যাটে জিইয়ে সিলেটের শিরোপার আশা

টানা পাঁচ ফিফটির পর সেঞ্চুরি, জাকিরের ব্যাটে জিইয়ে সিলেটের শিরোপার আশা

টানা পাঁচ ফিফটির পর সেঞ্চুরি, জাকিরের ব্যাটে জিইয়ে সিলেটের শিরোপার আশা

বরিশালের বিপক্ষে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে দলের টপ অর্ডার ভেঙে পড়ার পর একাই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সিলেটের অধিনায়ক জাকির হাসান। টানা পাঁচ ইনিংসে ফিফটির ধারাবাহিকতার পর এদিন খেলেন অপরাজিত সেঞ্চুরি। তার ধৈর্যশীল ও দৃঢ় ব্যাটিংয়ে বড় বিপর্যয় সামলে শিরোপার স্বপ্ন জিইয়ে রাখে সিলেট।

অবশেষে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন জাকির হাসান। রাজশাহীর শহীদ কামরুজ্জামান স্টেডিয়ামে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে শিরোপা সমীকরণের ম্যাচে খেলে যান অপরাজিত ১৩০ রানের ইনিংস। বরিশালের ৩১২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে চিরাচরিত ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে সিলেট। মাত্র ৪৭ রানের মধ্যেই চার ব্যাটার ফিরে যান। মুবিন আহমেদ দিশান ২, আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আসাদুল্লাহ আল গালিব ৫, ফর্মে থাকা অমিত হাসান ৫ এবং অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও থামেন মাত্র ৮ রানে।


দলের এমন বিপর্যয়ের মাঝেও স্থির ছিলেন অধিনায়ক জাকির। একপ্রান্ত আগলে ব্যাটিং করেন এবং আশরাফুল ইসলাম রিহাদকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে গড়ে তোলেন ১১৩ রানের জুটি। রিহাদ খেলেন ৪১ রানের মূল্যবান ইনিংস। এই জুটি যেমন দলকে বড় ধস থেকে রক্ষা করেছে, তেমনি জাকিরের আত্মবিশ্বাসেও ফিরিয়ে দিয়েছে আলো। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর তিনি লম্বা সময় ধরে রান খরায় ভুগছিলেন। এনসিএলের শুরুর দিকের ম্যাচগুলোতেও ধারাবাহিকতা খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি।


ময়মনসিংহের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে করেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে এক ইনিংসে ৪৩ এবং আরেক ইনিংসে অপরাজিত ১ রান। তৃতীয় ম্যাচে রংপুরের বিপক্ষে ৩ এবং ১৮ রান করে ফেরেন। তবে চতুর্থ ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে দুই ইনিংসে ৭৮ এবং ৭৭ রান করে ছন্দে ফেরেন তিনি। এরপর চট্টগ্রামের বিপক্ষে আবারো দুই ইনিংসে ফিফটি করে ৭৩ এবং ৬১ রান তোলেন। ষষ্ঠ ম্যাচে রাজশাহীর বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৬০ রান এবং দ্বিতীয় ইনিংসে ২০ রানে অপরাজিত থেকে দলের দশ উইকেটে জয়ে নেতৃত্ব দেন। পঞ্চম ও ষষ্ঠ ম্যাচে টানা জয়ে শিরোপা লড়াইয়ে ফিরে দল।


এই ম্যাচে টানা পাঁচ ফিফটির পর এসে জাকির পেলেন প্রতীক্ষিত সেঞ্চুরির দেখা। ১৮৪ বলে ১৯টি চার মেরে ১৩০ রানে অপরাজিত থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেন তিনি। যা জাকিরের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৬তম সেঞ্চুরি। সেই সাথে শতরানের ইনিংস খেলার পথে জাকির ছুয়েছেন ৬ হাজার রানের মাইলফলক।  


জাকিরের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে বরিশালের ৩১২ রানের জবাবে সিলেট দ্বিতীয় দিন শেষে ৫ উইকেটে ২১৪ রান তুলেছে।


বরিশালের ইনিংসে সোহাগ গাজীর ৬৮, ইফতেখার হোসাইন ইফতির ৬৪ এবং হাফিজুর রহমানের ৫৮ রানে দল তোলে ৩১২ রান। সিলেটের হয়ে মহিউদ্দিন তারেক তিনটি উইকেট নেন।


ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে লিগের অন্য ম্যাচে ঢাকা বিভাগ গড়ে বিশাল সংগ্রহ। আনিসুল ইসলাম ইমন ১৮৬, মার্শাল আইয়ুব ১৬৫ এবং আশিকুর রহমান শিবলির ১০০ রান মিলিয়ে দল তোলে ছয় উইকেটে ৫৪১ রান। ইমন দ্বিতীয় দিনে তিন রান যোগ করেই আউট হলেও মার্শাল পৌঁছান ১৬৫ রানে। ওপেনার শিবলি আগের দিন আহত হয়ে মাঠ ছাড়ার পর ফিরে এসে করেন সেঞ্চুরি।


তাদের জবাবে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রাম দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করে ৬ উইকেটে ৯৪ রানে। রিপন মন্ডল এবং সুমন খানের আগুনে বোলিংয়ে ২৩ রানে চার উইকেট হারায় দলটি। ইয়াসির আলী ২০ এবং ইরফান শুক্কুর ৪৩ রান করে প্রতিরোধ গড়লেও দুজনকেই শেষ পর্যন্ত ফিরতে হয়। সুমন খান তিনটি এবং রিপন মন্ডল দুটি উইকেট নেন।


বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে খুলনার ৩০৮ রানের জবাবে রংপুর বিভাগ গুটিয়ে যায় ১৭৪ রানে। খুলনার তরুণ পেসার সফর আলী একাই পাঁচ উইকেট নিয়ে রংপুরকে ধসিয়ে দেন। প্রথম ইনিংসে ১৩৪ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসেও ধস নামে খুলনায়। মাত্র ৪১ রানে হারায় পাঁচ উইকেট। মুগ্ধ দুটি এবং সোহেল রানা, শরিফুল ইসলাম ও মামুন একটি করে উইকেট নেন।


সিলেটে রাজশাহীর ২১৯ রানের জবাবে নবাগত ময়মনসিংহ প্রথম ইনিংসে থামে মাত্র ১৩৭ রানে। রাজশাহীর সানজামুল ইসলামের দুর্দান্ত স্পিনে পাঁচ উইকেট হারায় তারা। খালিদ হাসান ৩৭ এবং নাঈম শেখ ৩৩ রান করেন। ৮২ রানে এগিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে রাজশাহী ৬ উইকেটে ২১০ রান তুলে ২৯২ রানে এগিয়ে দিন শেষ করে। রাহিম আহমেদ ৪৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ময়মনসিংহের হয়ে আসাদুল্লাহ হিল গালিব তিনটি, আবু হায়দার রনি দুটি এবং রাকিবুল হাসান একটি উইকেট নেন।


শিরোপার লড়াইয়ে রয়েছে সিলেট এবং নবাগত ময়মনসিংহ। পয়েন্ট তালিকায় সিলেটের চেয়ে মাত্র দুই পয়েন্ট পিছিয়ে ময়মনসিংহ। রাজশাহীর বিপক্ষে জিতলে শিরোপা ঘরে তুলতে পারবে তারা। অন্যদিকে সিলেটের ম্যাচ এখনো সমতার অবস্থায় থাকলেও ময়মনসিংহ রাজশাহীর কাছে পিছিয়ে থাকায় তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে সিলেট।