অমিতের ২১৩, গালিবের ১৮০: টানা দুই জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে সিলেট

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 1 ঘন্টা আগে আপডেট: 4 মিনিট আগে
অমিতের ২১৩, গালিবের ১৮০: টানা দুই জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে সিলেট

অমিতের ২১৩, গালিবের ১৮০: টানা দুই জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে সিলেট

অমিতের ২১৩, গালিবের ১৮০: টানা দুই জয়ে শিরোপার লড়াইয়ে সিলেট

জাতীয় ক্রিকেট লিগে টানা চার ড্রয়ের পর চট্রগ্রাম বিভাগ হারিয়ে জয়ে ফিরে সিলেট। বুধবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রাজশাহী বিভাগকে ১০ উইকেট হারিয়ে  ফিরেছে শিরোপার লড়াইয়ে। শুরুতে পয়েন্ট টেবিলের সর্বশেষ অবস্থান থেকে এই জয়ের মাধ্যমে সিলেট আবার শীর্ষে উঠে এসেছে।

প্রথম পাঁচ ম্যাচে একটিমাত্র জয় ছাড়া সবই ড্র হওয়ায় দল ছিল ছন্দহীন। ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি লিগে টানা দুই আসরে ব্যর্থতার পর জাতীয় ক্রিকেট লিগের দীর্ঘ ফরম্যাটেও দলের প্রতিচ্ছবি একই রকম ছিল। তাই শিরোপা ধরে রাখতে সিলেটের একমাত্র উপায় ছিল জয়।

সিলেটের এই সংকটময় সময়ে দলের ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন অভিজ্ঞ পেসার আবু জায়েদ রাহি। লিগের পঞ্চম ম্যাচে চট্টগ্রাম বিভাগের বিপক্ষে দুই ইনিংসে ৯ উইকেট শিকারে তিনি দলকে জিতিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে সিলেট ২৫৫ রানের সংগ্রহ গড়ে, যেখানে ওপেনার জাকির হাসান ৭৩, রেজাউর রহমান রাজা ৫৭* এবং আশরাফুল ইসলাম রিহাদ ৪৬ রান করেন। চট্টগ্রামের হয়ে ইফরান হোসাইন ৬৫ রানে ৫ উইকেট নেন।

চট্টগ্রাম জবাবে ১১০ রানে অলআউট হয়, রাহি শিকার করেন ৫ উইকেট। সিলেট দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৭ রান তুলে চট্টগ্রামের সামনে ৩৫৩ রানের লক্ষ্য রাখে। চট্টগ্রাম লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে রাহির ৪ উইকেট শিকার সিলেটকে ১৪৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় এনে দেয়। দুই ইনিংসে ৯ উইকেট শিকার করে রাহি ম্যাচসেরা হন।

এরপর ষষ্ঠ রাউন্ডে ঘরের মাঠে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে সিলেট আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে মাঠে নেমে। প্রথম ইনিংসে রাজশাহী ২৩৭ রানে অলআউট হয়, যেখানে নাবিল সামাদ ৪ উইকেট ও রাহি ৩ উইকেট নেন। সিলেট ব্যাট করতে নেমেও শুরুতে ধাক্কা খায়, মাত্র ২৮ রানে দুই উইকেট হারায়। ওপেনার মুবিন আহমেদ দিশান ১ এবং তিনে নামা সৈকত আলী ১২ রানে আউট হন।

এরপর ওপেনার জাকির হাসান ও চারে নামা আসাদুল্লাহ গালিব তৃতীয় উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়ে দলকে স্থিতিশীল করেন। জাকির ৬০ রান করে আউট হলেও গালিব অবিচল থাকেন এবং অমিত হাসানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে চতুর্থ উইকেটে ৩৪২ রানের জুটি গড়ে দলকে আকাশছোঁয়া সংগ্রহে পৌঁছে দেন। অমিত ২৫৮ বল খেলে ২১৩ রানের অসাধারণ ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকান, যার মধ্যে ২৮ চার ও ১ ছক্কা রয়েছে। গালিব ২৯৮ বল খেলে ১৮০ রান করেন, ১৯ চার ও ২ ছক্কায়। রিহাদ ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। সিলেট ১১৯.৪ ওভারে ৮ উইকেটে ৫৩৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে। রাজশাহীর হয়ে নাহিদ রানা ৮৮ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া ২টি করে উইকেট নেন আসাদুজ্জামান পায়েল ও ওয়াসি সিদ্দিকী।

রাজশাহী দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৩ রান তুলতে সক্ষম হয়, যেখানে প্রিথম কুমার (১৪৩) সেঞ্চুরি করেন। ফলে সিলেটের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৩৮ রান। জাকির হাসান (২০*) ও মুবিন আহমেদ দিশান (১৩*) মাত্র ৯.২ ওভারে লক্ষ্য তাড়া করে ১০ উইকেটের বড় জয় নিশ্চিত করেন।

এই জয়ের ফলে সিলেট জাতীয় ক্রিকেট লিগের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে অবস্থান করছে। ছয় ম্যাচে ৪টি ড্র ও ২টি জয়ের মাধ্যমে সিলেটের পয়েন্ট ২৬। টেবিলের দুইয়ে থাকা ময়মনসিংহ বিভাগের পয়েন্ট ২৪। লিগের শেষ ম্যাচে বরিশাল বিভাগের বিপক্ষে জয় পেলে সিলেট টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতবে।

এই জয়ে দলের উজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেছেন জাকির হাসান, অমিত হাসান, আসাদুল্লাহ গালিব, নাবিল সামাদ এবং আবু জায়েদ রাহি, যাদের ব্যাট-বলেই সিলেট ফিরে এসেছে শীর্ষে।