আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশকে সঙ্গী করে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 5 ঘন্টা আগেআপডেট: 12 মিনিট আগে
আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশকে সঙ্গী করে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা
আফগানিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশকে সঙ্গী করে সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা
আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের মুখোমুখি লড়াই; দুবাই থেকে সেই ম্যাচে নজর ছিল বাংলাদেশের। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে বাংলাদেশের খেলা নির্ভর করছে এই ম্যাচের ফলাফলের ওপর। আফগানিস্তানের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কা জিতলেই বাংলাদেশ নিশ্চিত করবে সুপার ফোরে জায়গা, আর যদি আফগানিস্তান জিতলে জটিল হবে সমীকরণ। অতীত ভুলে তাই বাংলাদেশের সব ক্রিকেটপ্রেমী শ্রীলঙ্কার জয় দেখতে মুখিয়ে ছিলেন।
বৃহস্পতিবার টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন আফগান অধিনায়ক। শুরুতে কিছুটা খেই হারালেও মোহাম্মদ নাবীর ২২ বলে ৬ ছক্কা ও ৩ চারে সাজানো ৬০ রানের লড়াকু ইনিংসে শ্রীলঙ্কাকে ১৬৯ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দেয় আফগানরা। এই রান তাড়া করতে নেমে শ্রীলঙ্কাও শুরুতে দিশাহারা হয়, তবে কুশল মেন্ডিসের অপরাজিত ফিফটির সুবাদে শেষ পর্যন্ত লঙ্কানরা সংগ্রহ করে জয়। আফগানিস্তানকে ৬ উইকেটে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শ্রীলঙ্কা সুপার ফোর নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশকেও সঙ্গী করে সুপার ফোরে নিয়ে যায় লঙ্কানরা।
১৭০ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়ায় মাত্র ২২ রানেই ফর্মে থাকা ওপেনার নিশাঙ্কাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। এরপর তিন নম্বরে নেমে কামিল মিশারা দ্রুত ফেরেন। তাদের উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানদের রান তাড়ায় চাপ তৈরি করেন আজমতুল্লাহ ও মোহাম্মদ নাবী।
তবে সেই চাপ সামালান কুশল মেন্ডিস, যিনি একপ্রান্ত আগলে রেখে ৫২ বলে অপরাজিত ৭৪ রানে দলকে ৬ উইকেটে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
মাঝে অবশ্য শ্রীলঙ্কা আরও দুটি উইকেট হারায়। নুর আহমেদের বলে অধিনায়ক চারিথা আসালাঙ্কা ১৭ রানে ফিরে যান, আর মুজিবুর রহমানের বলে বিদায় নেন কুশল পেরেরা ২০ রানে।
এতোকিছুর পরও লঙ্কানদের জয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি আফগানরা। উইকেটের একপ্রান্তে থিতু থাকা মেন্ডিস পঞ্চম উইকেটে কামিন্দুকে সঙ্গী করে অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে ৮ বল আগেই ৬ উইকেটে জয় এনে দেন।
শ্রীলঙ্কার ৬ উইকেটের জয়ে ৫২ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ৭৪ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন কুশল মেন্ডিস। অপরপ্রান্তে কামিন্দু ১৩ বলে ২ ছক্কা মেরে অপরাজিত ২৬ রান করেন।
আফগানিস্তানের কোনো বোলারই ম্যাচে প্রভাব ফেলতে পারেননি। যারা বল ঘুরিয়েছিলেন সবাই ছিলেন ব্যয়বহুল, বলের বিপরীতে রান গুনতে হয়েছে অনেক। আফগানদের হয়ে মুজিব, আজমতুল্লাহ, নাবী ও নুর আহমেদ একটি করে উইকেট শিকার করেন। রশিদ উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ২৩ রান দেন।
টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই আফগানরা খেই হারায়। লঙ্কান পেসার নুয়ান তুশারার বোলিংয়ে মাত্র ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে আফগানরা। নুয়ান ধারাবাহিকভাবে তুলে নেন রহমতুল্লাহ গুরবাজ (১৪), করিম জান্নাত (১) ও সাদেকুল্লাহ আতাল (১৮)। গুরবাজকে ফিরান পেরেরার ক্যাচে, আর জান্নাত ও আতালকে সরাসরি বোল্ড করেন লঙ্কান এই পেসার।
এরপর দারয়ুইস রাসুলীকে ফিরান চামিরা। আজমতুল্লাহ দাসুন শানাকার বলে ৬ রানে বোল্ড হলে আফগানরা ৭১ রানে ৫ উইকেট হারায়। ব্যক্তিগত ২৪ রানে ইব্রাহিম জাদরানকে ফেরিয়ে স্বস্তি এনে দেন দুনিত ওয়ালেলাগে। ফলে একশোর আগেই ৬ উইকেট হারিয়ে আফগানরা খুব কষ্টে পড়ে।
এই বিপর্যয়ের মধ্যে আফগানদের ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন মোহাম্মদ নাবী। অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার ঝড়ো ২২ বলে ৬০ রানের ইনিংসে আফগান ডাগআউট প্রাণ সঞ্চার করেন। সপ্তম উইকেটে রশিদ (২৪) সাথে ৩৫ রান এবং অষ্টম উইকেটে নুর আহমেদ (৬*) নিয়ে আরো ৫৫ রান যোগ করেন নাবী। ইনিংসের শেষ বলে রান আউটে কাটা পড়লে আফগানিস্তান থামে ১৬৯ রানে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে নুয়ান তুশারা ৪ ওভারে ১৮ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন। চামিরা, দুনিত ও শানাকাও একটি করে উইকেট নেন।
শ্রীলঙ্কার এই জয়ে ৫২ বলে অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস খেলেছেন কুশল মেন্ডিস, যিনি ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন।