বিসিবি ইস্যুতে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নেই

বিসিবি ইস্যুতে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নেই
বিসিবি ইস্যুতে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার সুযোগ নেই
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতির পদ থেকে অভিজ্ঞ ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব ফারুক আহমেদের অপসারণ নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠে আবার থেমেও গেছে। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) ভবিষ্যতে কোনো প্রশ্ন তোলে, তাহলে বিসিবির সামনে নিষেধাজ্ঞা কিংবা তদন্ত এড়ানোর একমাত্র কার্যকর কৌশল হতে পারে—পুরো প্রক্রিয়াটি বোর্ডের অভ্যন্তরীণ ও সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, তা স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের ৮ পরিচালকের অনাস্থা পত্রও আইসিসির কাছে পেশ করা।
ফারুক আহমেদের দাবী তাকে সরানোর পেছনে সরাসরি সরকারি প্রভাব রয়েছে। তবুও বিসিবি দাবি করতে পারে যে, এটি তাদের নিজস্ব নীতিমালার ভিত্তিতে গৃহীত একটি সিদ্ধান্ত। বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সদস্যদের বাদ দেওয়ার বিধান এবং পূর্ববর্তী দৃষ্টান্ত দেখিয়ে বিসিবি আইসিসির কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারে। এতে বোর্ডের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যাবে।
ক্রিকেটার হিসেবে ফারুক আহমেদ ছিলেন এক নিবেদিতপ্রাণ অভিভাবক। ১৯৮৮ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলে দেশের ক্রিকেটে রেখেছেন অমূল্য অবদান। ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেন তিনি, যা ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। খেলার মাঠে তার নেতৃত্বগুণ ও কৌশলী দৃষ্টিভঙ্গি দেশের ক্রিকেটে নতুন পথ দেখিয়েছে।
খেলোয়াড়ি জীবন শেষে ক্রিকেট প্রশাসনেও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন ফারুক। বিসিবির প্রধান নির্বাচক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি এমন অনেক তরুণ প্রতিভাকে জাতীয় দলে নিয়ে এসেছেন, যারা পরবর্তীতে দেশের ক্রিকেটের স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফারুকের এমন এক অভিজ্ঞ, মেধাবী ও নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্ব হয়েও হঠাৎ করে তাকে বোর্ড থেকে বাদ দেওয়াকে অনেকেই দেখছেন রাজনৈতিক প্রভাব কিংবা ব্যক্তিগত মতানৈক্যের ফল হিসেবে। দেশের ক্রিকেট বোর্ডের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত হলেও, যেহেতু বিসিবি আইসিসির অধিভুক্ত সংস্থা, তাই এরকম ঘটনায় আন্তর্জাতিক নজরদারি কিংবা প্রশ্ন তোলার সুযোগ থেকেই যায়।
ফলে ভবিষ্যতে যদি আইসিসি বিষয়টি আমলে নেয়, তাহলে বিসিবি চাইলে প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিয়মতান্ত্রিকতা তুলে ধরে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে পারে। সরকারি হস্তক্ষেপের অভিযোগ এড়াতে বোর্ডের ভেতরের নিয়ম ও গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোর দলিল দেখিয়ে বোঝাতে পারে এটি ছিল তাদের একান্ত অভ্যন্তরীণ ও স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত।
এই কৌশলই হতে পারে বিসিবির জন্য আইসিসির সম্ভাব্য প্রশ্নের মুখে নিজেদের রক্ষার সবচেয়ে সঠিক ও কার্যকর পথ। তাই আপাতত ফারুক আহমেদের অপসারণ নিয়ে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কার খুব একটা কারণ নেই।