রিশাদ যেখানেই খেলেন সেই দলই চ্যাম্পিয়ন

রিশাদ যেখানেই খেলেন সেই দলই চ্যাম্পিয়ন
রিশাদ যেখানেই খেলেন সেই দলই চ্যাম্পিয়ন
বাংলাদেশ ক্রিকেটে লেগ স্পিনারদের গল্প অনেকটাই হতাশার—সাহসী কিছু নাম উঠে এলেও স্থায়িত্ব মেলেনি তেমন। তবে এবার সেই ধারায় ভিন্ন এক আভাস দিচ্ছেন তরুণ রিশাদ হোসেন। মাঠে বল হাতে সাফল্যের পাশাপাশি এখন তিনি হয়ে উঠেছেন শিরোপার অন্য নাম।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে রিশাদ পাঁচটি ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অংশ হয়ে চারটি শিরোপা জিতেছেন, একটি দলের সঙ্গে থেকেও সেই দলকে শিরোপা জিততে দেখেছেন। হোক সেটা মাঠে খেলা কিংবা স্কোয়াডে থাকা—রিশাদ যেখানে আছেন, যেন সাফল্য সেখানেই ধরা দেয়।
সবকিছু শুরু হয় ২০২৪ সালে, গ্লোবাল সুপার লিগে রংপুর রাইডার্সের হয়ে শিরোপা জিতে। এরপর বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে বাংলাদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সেরা হওয়ার স্বাদ পান। কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতে টরন্টো ন্যাশনালসের হয়ে চুক্তিবদ্ধ হলেও ভিসা জটিলতায় মাঠে নামতে পারেননি—তবুও দল হয় চ্যাম্পিয়ন।
সবচেয়ে আলোচিত সাফল্য আসে ২০২৫ সালের পাকিস্তান সুপার লিগে। লাহোর কালান্দার্সের জার্সিতে মাঠে নামা রিশাদ ফাইনালে বল হাতে অবদান না রাখলেও দলের অংশ হিসেবে ঐতিহাসিক জয়ে ছিলেন গর্বিত প্রতিনিধি। তার আগে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগে হোবার্ট হারিকেন্সের স্কোয়াডে থেকেছেন, সেখানেও প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতে দলটি।
বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে রিশাদের গুগলি এখন অনেকটা ট্রেডমার্ক হয়ে উঠেছে। নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথ, কন্ডিশন অনুযায়ী বলের গতি পরিবর্তনের সক্ষমতা এবং সাহসী মানসিকতা তাঁকে তরুণ লেগ স্পিনারদের ভিড়ে আলাদা করেছে।
জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য না হলেও রিশাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি পারফরম্যান্স এখন নির্বাচকদের নজর কাড়ছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ যখন আক্রমণাত্মক এবং কৌশলনির্ভর বোলিং খুঁজছে, তখন রিশাদ হতে পারেন ভবিষ্যতের নির্ভরযোগ্য অস্ত্র।
বড় মঞ্চে ধারাবাহিক সফলতার পর এবার লক্ষ্য জাতীয় দলে জায়গা পাকাপোক্ত করা। নিজেকে আরও শানিত করে সাদা-লাল জার্সিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখেন রিশাদ।
একটা সময় পর্যন্ত লেগ স্পিনার খুঁজে পাওয়া ছিল বাংলাদেশের জন্য এক রকম যুদ্ধ। আজ সেই জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছেন এমন একজন তরুণ, যিনি শুধু স্পিন ঘূর্ণিতেই নন, ভাগ্যেও দলের ভরসা হয়ে উঠছেন। রিশাদ হোসেনের এই যাত্রা হয়তো এখনও শুরু, কিন্তু শুরুটা যে দুর্দান্ত—তা বলাই যায়।