কৃতজ্ঞ ও গর্বিত তাসকিনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনা
কৃতজ্ঞ ও গর্বিত তাসকিনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনা
কৃতজ্ঞ ও গর্বিত তাসকিনের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভাবনা
চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলে এসেছে একেবারে দোরগোড়ায়। আগামী ২ জুন শুরু হয়ে যা চলবে ২৯ জুন পর্যন্ত। বিশ্বকাপের নবম আসরে নিজেদের সেরা সাফল্যের খোঁজে এরইমধ্যে টাইগাররা পাড়ি জমিয়েছে মার্কিন মুলুকে।
কিন্ত এর আগে বিশ্বকাপ উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে আয়োজিত 'দ্য রেড এন্ড গ্রিন' নামক একটি প্রোগ্রামে আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টিতে ৬৪ উইকেটের মালিক তাসকিন বলেন,
'আমি আগের চেয়ে উন্নতি করেছি, অভিজ্ঞ হয়েছি। এত বছর খেলে আমি যদি উন্নতি না করি তবে আমি আমার দেশের সঙ্গে ক্রা'ই'ম করছি। এত বছর ক্রিকেট বোর্ড আমাকে টেনেছে, খেলিয়েছে, সুযোগ দিয়েছে, এখন আমার সময় এসেছে পরবর্তী কয়েক বছর দেশকে ভালো কিছু দেয়ার।'
সেই সাথে ইনজুরিতে পড়ার পর শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করাতেও বোর্ডকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাসকিন।
এর আগে তাসকিন সেই ভিডিও বার্তার শুরুতেই সৃষ্টিকর্তার নিকট শুকরিয়া জ্ঞাপন করে বলেন "আলহামদুলিল্লাহ যে আমি দলে আছি, সহ অধিনায়কও হয়েছি"।
এদিন তাসকিন স্মৃতিচারণ করলেন ২০১৯ বিশ্বকাপে তার বেদনা পাওয়াকে ঘিরেও। তিনি বলেন, 'এবার যখন দল দিতে আমার জন্য অপেক্ষা করা হয়েছিল তখন মনে পড়ছে যে ২০১৯ বিশ্বকাপে মন খারাপ করে মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে চলে গিয়েছিলাম। তারপর আরেকটা বিশ্বকাপের দল আমার জন্য পিছিয়েছে বোর্ড। এটা আসলে খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য গর্বের মূহুর্ত। আমি চেষ্টা করব এই সম্মানটাকে মূল্য দেয়ার।'
তাসকিন আরও যোগ করেন- 'দেশের জন্য খেলা এটা আসলে ব্যাখা করা কঠিন আমার জন্য। আমি যখন টিমের বাহিরে ছিলাম আড়াই তিন বছর, তখন উপলব্ধি করেছি যে বাংলাদেশ দলে খেলার মতো শান্তি আর কিছুতে নেই।'
বাংলাদেশের হয়ে খেলা এটা অন্যরকম প্রশান্তি বলেও আখ্যায়িত করেছেন ঢাকা এক্সপ্রেস। একাধিকবার জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় তার চোখ অশ্রুতে ভেসে গিয়েছে বলেও তিনি জানান। সে ভিডিও বার্তায় তাসকিন বারবারই বলেছেন দেশের জন্য খেলা অন্যরকম অনুভূতি যা প্রকাশ করা সত্যিকার অর্থেই সম্ভব নয়। ইঞ্জুরিকে পরাস্ত করে পুনরায় ২২ গজে ফিরে আসা তাসকিন আহমেদ তাই নিজেকে বেশ ভাগ্যবানও মনে করছেন।
২০১৪ সালে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তাসকিনের। সাদা বলের দুই ফরম্যাটে টাইগারদের হয়ে ১০ বছর ধরে খেলছেন এই স্পিডস্টার। লম্বা এই পথচলায় একাধিকবার ইনজুরির কবলে পড়েছেন তাসকিন। ফিরেও এসেছেন সব বাধা উড়িয়ে দিয়ে। গেল কয়েক বছরে দেশের পেস ডিপার্টমেন্টের যে দাপট তার অন্যতম ভরসার নাম তাসকিন। ১০ বছর জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার বড় কিছু করার সময় এসেছে বলছেন টাইগারদের নতুন ভাইস ক্যাপ্টেন।
২০ দলের এবারের বিশ্বকাপে ৫টি করে দল নিয়ে হয়েছে চারটি গ্রুপ। ডি গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও নেদারল্যান্ডস। প্রতি গ্রুপ থেকে দু’টি দল যাবে পরের রাউন্ডে। বাংলাদেশের সুপার এইটে যাবার পথটা বেশ কঠিন। তবে পথ দুর্গম হলেও লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব বলছেন তাসকিন।
টাইগার স্পিডস্টার বলেন, 'খুব বিশ্বাস করি আমাদের দল অবশ্যই সেকেন্ড রাউন্ডে যাবে। যদিও প্রথম দুইটা ম্যাচই বড় ম্যাচ, শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টি খুবই অনিশ্চয়তার খেলা। যেকোনো দল যে কাউকে হারিয়ে দিতে পারে যেকোনো সময়। নেদারল্যান্ডস-নেপালকে হালকাভাবে নেয়ার কিছু নাই। টি-টোয়েন্টিতে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটে যেতে পারে। অবশ্যই আমরা যাবো সেকেন্ড রাউন্ডে।'
পেস আক্রমণে তাসকিনের সঙ্গে জুটি বাধবেন কাটার মাস্টার। শুধু নিজের নয়, মুস্তাফিজের কাছ থেকেও উইকেটের প্রত্যাশা করছেন। এদিন রসিকতায় মাততেও ভুলেননি তিনি। তাসকিন বলেন, 'আমি তো চাই মুস্তাফিজ ও আমার দু’জনেরই উইকেট অনেক বেড়ে যাক। কিন্তু কেউ যেন কাউকে ছাড়াতে না পারি। তাহলে দু’জনেরই উইকেট বাড়বে। দলও উপকৃত হবে।'