তামিমের দাবি, বিসিবির নির্বাচন "বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কালো দাগ"
৯৭ প্রতিবেদক: নাজিফা তাসনিম
প্রকাশ: 5 ঘন্টা আগেআপডেট: 18 মিনিট আগে- 1
গোপন কথা ফাঁস, সাকিবকে কড়া জবাব দিলেন আসিফ মাহমুদ
- 2
ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসছে বাংলাদেশে, ওয়ানডে দিয়ে শুরু দ্বিপাক্ষিক সিরিজ, শেষ টি-টোয়েন্টিতে
- 3
বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালের রূপকথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো নবাগতরা
- 4
মনোনয়ন প্রত্যাহার, বিসিবি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না তামিম ইকবাল
- 5
ওরাই ট্রফি নিয়ে পালিয়েছে, সূর্যকুমারের বিস্ফোরক দাবি

তামিমের দাবি, বিসিবির নির্বাচন "বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কালো দাগ"
তামিমের দাবি, বিসিবির নির্বাচন "বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কালো দাগ"
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনে অন্তর্বর্তী সরকারের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও তার নির্বাচনী প্যানেল প্রত্যাহার করেছেন। এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে তামিম নির্বাচনের প্রক্রিয়া, হস্তক্ষেপ এবং তার প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দিয়েছেন।
প্রথমে তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহারের পেছনের কারণ ব্যাখ্যা করেন। তামিম জানান, প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে হয়নি এবং এতে অংশ নেয়া মানে নোংরামির অংশ হওয়া। তিনি বলেন,
"আপনারা জানেন যে আমরা আজকে আমাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছি। আমিসহ প্রায় ১৪-১৫ জনের মতো প্রত্যাহার করেছি। এবং কারণটা খুবই পরিস্কার। এখানে আমার কাছে মনে হয় না যে আমাকে খুব বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে আপনাদেরকে কোন কিছু বলার আছে। আমি শুরু থেকেই একটা কথা বলে আসছি যে নির্বাচনটা কোন দিকে যাচ্ছে বা কীভাবে হচ্ছে, এ জিনিস নিয়ে আপনারা সবাই এখন পরিস্কার। যখন যেমন মনে হচ্ছে, যখন যা মনে হচ্ছে, তখন তা করা হচ্ছে। এটা আসলে নির্বাচন না। ক্রিকেটের সঙ্গে এ জিনিসটা কোন দিক থেকেই মানায় না। আমি নিশ্চিত যখন ইসি তালিকা দিবে যে আজকে কারা কারা প্রত্যাহার করেছেন, তাদের নামগুলা আপনারা দেখলেই বুঝতে পারবেন যে তারা সবাই তাদের জায়গা থেকে হেভিওয়েট, তাদের ভোটব্যাংকও খুব শক্ত। এটা হলো আমাদের একটা প্রতিবাদ। এখান থেকে এসে যে এই নোংরামির অংশ আমরা থাকতে পারবো না।"
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অনিয়ম এবং চাপের কারণে আরও অনেক প্রার্থী হয়তো প্রত্যাহার করতে পারতেন। এটি মূলত ক্রিকেটের স্বার্থে নেওয়া একটি নৈতিক অবস্থান। তিনি বলেন,
"দ্বিতীয়ত আমি একটা জিনিস সবসময় বলেছি বাংলাদেশ ক্রিকেট এটা ডিজার্ভ করে না, বাংলাদেশের ক্রিকেট ফ্যানরাও এটা ডিজার্ভ করে না। এটাও বলে রাখি, আমি জানিনা কতজন স্বীকার করবেন কী করবেন না, কিন্তু এখানে আরও অনেকেই আজকে প্রত্যাহার করতেন। তাদেরকে বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন ওয়েতে বুঝানো হয়েছে বা চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে, তাদেরকে কোনভাবে থামানো হয়েছে। না হলে আরও অনেকেই আজকে প্রত্যাহার করতেন। তাও ১৫ জন যদি আজকে করে থাকেন, যদি আমি ঠিক হয়ে থাকি, এটা একটা সিগনিফিকেন্ট নাম্বার। অলমোস্ট পঞ্চাশ ভাগ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ... আমি এই বিষয়ে পরের সময় বিস্তারিত আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো।"
প্রকাশিত বক্তব্যে তামিম স্পষ্টভাবে জানাচ্ছেন যে, জেতা বা হারার বিষয় এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। বরং জাতীয় ক্রিকেটের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। তিনি বলেন,
"আপনারা জিততেও পারেন, হারতেও পারেন, কিন্তু আজকে ক্রিকেট শতভাগ হেরে গিয়েছে। এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই। আপনারা বড় গলায় বলেন যে বাংলাদেশে ফিক্সিং বন্ধ করা লাগবে, আগে নির্বাচনের ফিক্সিং বন্ধ করুন, পরে ক্রিকেটের ফিক্সিং বন্ধ করার চিন্তাটা করিয়েন। আমার এর চেয়ে বেশি কিছু বলার নাই।"
তামিম আরও হুঁশিয়ারি দেন যে, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ ও নিয়ম পরিবর্তনের বিষয়গুলি সকলের জন্য স্পষ্ট। তিনি বলেন,
"আমার কাছে মনে হয় যে এটা স্পষ্টভাবে ক্লিয়ার সবার কাছে, কারা কারা কোন সময়ে, কারা কারা কোন ধরনের ইনভলমেন্ট এখানে রেখেছেন, কী ধরনের হস্তক্ষেপ হয়েছে, নিয়ম ইচ্ছামত, সুবিধা মতন চেঞ্জ করা হয়েছে। আর এর সঙ্গে কারা কারা জড়িত, একদম স্পষ্টভাবে ক্লিয়ার। আমি এর চেয়ে বেশি আর কোন কথা বলব না, ইনশাল্লাহ ভবিষ্যতে আমি এটা নিয়ে অবশ্যই কথা বলব। আমি আমার স্পিচে এই কথাই বলে শেষ করব যে এই নির্বাচন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য একটা কালো দাগ হয়ে গেল। আর এই নির্বাচনের সঙ্গে যারা আছে, আমি নিশ্চিত তারাও বুঝতে পারেন যে নির্বাচন কোন দিক থেকেই এটা একটা নির্বাচন ছিল না।"
এই বক্তব্যে স্পষ্ট যে তামিম ও তার প্যানেল বাংলাদেশের ক্রিকেটকে সঠিকভাবে পরিচালিত হতে দেখার জন্য প্রক্রিয়াগত স্বচ্ছতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছেন। তার বক্তব্যে বোঝা যায়, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ ও অনিয়ম কেবল প্রার্থীদের প্রভাবিত করেনি, বরং দেশের ক্রিকেটের স্বার্থকেও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।