Image

বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালের রূপকথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো নবাগতরা

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 2 ঘন্টা আগেআপডেট: 2 মিনিট আগে
বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালের রূপকথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো নবাগতরা

বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালের রূপকথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো নবাগতরা

বিশ্ব ক্রিকেটে নেপালের রূপকথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে ইতিহাস গড়লো নবাগতরা

কখনো কী কল্পনা করা গিয়েছিল, বিশ্ব ক্রিকেটে এক সময়ের ‘নবাগত’ নেপাল, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সিরিজ হারিয়ে দেবে, তাও এক ম্যাচ হাতে রেখেই?

সোমবার, শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নেপাল যা করলো, তা নিছক কোনও আপসেট নয়। এটি একটি ঘোষণা, নেপাল এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হিসেবের বাইরে রাখার মতো দল নয়। 

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেপালের যাত্রা খুব বেশি দিনের নয়। নেপালের অলিগলিতে এখনো ক্রিকেট পুরোপুরি ছড়িয়ে না পড়লেও সন্দীপ লামিচানের মতো লেগস্পিনারের হাত ধরে ইতোমধ্যে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে এই হিমালয়ের দেশ। তবে এবার তারা সীমিত পরিচয়ের গণ্ডি পেরিয়ে লিখে ফেললো এক নতুন রূপকথা। 

শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৭৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৮৩ রানেই অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ! ৯০ রানের বড় জয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে নেপালের নামটা স্বর্ণাক্ষরে লিখে দিয়েছেন আসিফ শেখ, সন্দীপ জরা, আদিল আলম ও কুশল বার্টেলরা।

সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১৯ রানে জয় পেয়েছিল নেপাল। দ্বিতীয় ম্যাচে আসিফ শেখ অপরাজিত ৬৮ এবং সন্দীপ জরা ৬৩ রানের ইনিংস খেলে ৬ উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে নেপাল সংগ্রহ দাঁড় করান ১৭৩ রান। জবাবে মোহাম্মদ আদিল আলম ও কুশল বার্টেলের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ১৭.১ ওভারে মাত্র ৮৩ রানে অলআউট হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয় ব্যাটারদের মধ্যে জেসন হোল্ডার (২১) ছাড়া কেউই দাঁড়াতে পারেননি।

১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নামার শুরুতেই চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দলীয় ৪ রানে আউট হন ওপেনার জুয়েল এন্ড্রু (২), এরপর ৫ রানে ফেরেন তিনে নামা ক্যাসি কার্টি (১)। এই দুজনকে ফেরান দীপেন্দ্র সিং আইরি ও করন চেত্রী।

অন্য ওপেনার কাইল মায়ার্সকে (৬) ফিরিয়ে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামানোর শুরু করেন মোহাম্মদ আদিল। এরপর তিনিই ফিরিয়ে দেন আকিম আগাস্টে (১৭) ও আমির জঙ্গো (১৬)। ৩৮ রানে আগাস্টে এবং ৬৩ রানে আমিরের বিদায়ের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।

বোলিংয়ে আদিলের পর ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন কুশল বার্টেল। ইনিংসের ১৪তম ওভারে তিনি ফিরিয়ে দেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন (৭) ও অধিনায়ক আকিল হোসেইনকে (০)। মাঝখানে নাবিন বাদাইসিকেও (২) প্যাভিলিয়নের পথ দেখান আদিল। 

জেসন হোল্ডার কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করলেও একপ্রান্তে সঙ্গীর অভাবে ব্যর্থ হন। ৮১ রানে নবম ব্যাটার হিসেবে হোল্ডারকে (২১) ফিরিয়ে দেন ললিত রাজবান্সী। ইনিংসের শেষ ব্যাটার জিসান মোতারাকে (২) আউট করে নেপালের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেন বার্টেল। ফলে ৮৩ রানেই গুটিয়ে ক্যারিবীয়রা! 

নেপালের হয়ে ৪টি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ আদিল এবং কুশল বার্টলের ঝুলিতে পড়ে ৩ উইকেট। 

এর আগে, প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৪ রানে ২ উইকেট হারিয়েছিল নেপাল। কুশল বার্টেল (২) ফেরেন দলীয় ১০ রানে, আর তিনে নামা রোহিত পাউডেল (৩) ফিরেন ১৪ রানে। দুজনকেই আউট করেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক আকিল হোসেইন। চারে নামা কুশল মল্লা (৭) রান আউটে কাটা পড়েন দলীয় ৪৩ রানে।

চতুর্থ উইকেটে সন্দীপ জরা ও আসিফ শেখ গড়ে তোলেন শতরানের জুটি। ৬৬ বলে এই জুটিতে সন্দীপ ৬৩ রান করে আউট হলেও আসিফ শেখ শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন। তিনি ৪৭ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় খেলেন অপরাজিত ৬৮ রানের ইনিংস।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আকিল হোসেইন ও কাইল মায়ার্স। একটি উইকেট শিকার করেন জেদিয়াহ ব্লেইডস।

এটাই নেপালের প্রথম কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়। সন্দীপ লামিচানেরর একক পরিচয় ছাড়িয়ে এবার নেপাল ক্রিকেট দল হিসেবে নিজেদের জানান দিল বিশ্ব ক্রিকেটে।
 

Details Bottom
Details ad One
Details Two
Details Three