সাকিবকে পেছনে ফেলে ফিফটির সিংহাসনে লিটন
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 5 ঘন্টা আগেআপডেট: 11 মিনিট আগে
সাকিবকে পেছনে ফেলে ফিফটির সিংহাসনে লিটন
সাকিবকে পেছনে ফেলে ফিফটির সিংহাসনে লিটন
বাংলাদেশের ক্রিকেটে এমন ক্রিকেটারের সংখ্যা হাতে গোনা তিন, বড়জোর চার-পাঁচজন। সেই তালিকায় অন্যতম একজন লিটন দাস।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, ‘কি এমন গুণ যা এতো অল্প কজনের মাঝে সীমাবদ্ধ?’ গুণটা আহামরি কিছু নয়, তবে ক্রিকেটের ভাষায় যেটাকে বলে “ক্লাস”,ব্যাটিংয়ের পরিমিত ব্যাকরণ মেনে, সাবলীলতায়, নান্দনিকতায় নিজের স্বভাবজাত দক্ষতায় বলের সঙ্গে কব্জির দারুণ বোঝাপড়া।
এই "ক্লাস"-এর কারুকার্যে লিটন দাস হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের এক ধ্রুব তারা। তার শটের সৌন্দর্য দেখে মোহিত হয় পুরো ক্রিকেটবিশ্ব। যেমনটা বলেছিলেন ইয়ান বিশপ, "Litton seems to paint a Mona Lisa on the canvas of cricket with his bat."
ক্রিকেট মাঠ যেখানে ক্যানভাস, লিটন সেখানে যেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি; চার-ছক্কার তুলিতে আঁকেন ব্যাটিংয়ের শিল্পকর্ম।
তবে লিটনের ব্যাটে সবসময় সেই মোনালিসা অঙ্কিত হয় না। ধারাবাহিকতার ঘাটতি যেন তার ক্যারিয়ারের এক চিরচেনা সঙ্গী।
তবু যখন তিনি নিজেকে খুঁজে পান, যখন ছন্দে থাকেন, তখন তার প্রতিটি রান, প্রতিটি শট, চোখে-মনে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়।
আর সিলেটে খেললেই যেন নিজের ব্যাটিংয়ের আরেকটা গিয়ার অন করে দেন লিটন। সদ্য সমাপ্ত সিরিজে দুইটি ফিফটিতে তার ব্যাটে ফিরেছে সেই পুরোনো ধার। তিন ম্যাচে ১৪৫ রান করে হয়েছেন সিরিজ সেরাও।
সেই ধারাবাহিকতার চূড়ান্ত প্রকাশ দেখা গেল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। মাত্র ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ফিফটির মালিক হয়ে উঠলেন লিটন দাস।
লিটনের এই ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ৩টি ছক্কা, রান যেমন চোখে শান্তি দেয়, তেমনি রেকর্ড বইতেও রাখে নতুন ছাপ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বাধিক ফিফটি:
লিটন দাস ১৪টি ফিফটি (১০৮ ইনিংসে)
সাকিব আল হাসান ১৩টি ফিফটি (১২৭ ইনিংসে)
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৮টি ফিফটি (১৩০ ইনিংসে)
তবে রেকর্ড গড়ার পরও লিটন ছিলেন যথারীতি শান্ত। সংবাদ সম্মেলনে তার প্রতিক্রিয়া ছিল অনেকটাই পরিণত ক্রিকেটারের মতো, "দুটোই," বলেই নিজের স্কিল আর মানসিক দৃঢ়তার প্রসঙ্গে বলেন, "এটার আন্সার কী দিব, প্রতিবার একই প্রশ্ন আসে। আপনারা কীভাবে কামব্যাক ধরেন আমি জানি না। প্লেয়ার হিসেবে প্রতি সিরিজ ভালো খেলবেন না। এক সিরিজ ভালো, এক সিরিজ খারাপ যেতে পারে। পরের সিরিজে ভালো করলে যে কামব্যাক হয়ে যাবে, এমন না।"
নিজের পারফরম্যান্স নয়, বরং দলের সামগ্রিক উন্নতিতেই বেশি মনোযোগ লিটনের, "দল হিসেবে কীভাবে উন্নতি করা যায়, কীভাবে প্রত্যেক সিরিজে ম্যাচ জেতা যায়। এই দিকেই নজর দেওয়া উচিত। আমার মনে হয়, আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি।"
অধিনায়কত্ব উপভোগ করছেন কি না, এমন প্রশ্নে লিটনের জবাব ছিল আত্মবিশ্বাসী ও সরাসরি, "শোনা কথায় কান না দেওয়া ভালো। আমি অনেক এঞ্জয় করি। করি বলেই দায়িত্বটা নিয়েছি।"
দুই সিরিজে সাফল্য ও নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে লিটন বলেন, "টানা দুই সিরিজ ভালো গেল। আমি পারফর্ম করছি এটাও দলের জন্য ভালো। লিডার পারফর্ম করলে দলের জন্য ভালো। এদিক থেকে আমি অনেক খুশি।"
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে তিনি আরও বলেন, "এশিয়া কাপে ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। এর উপরে কিছু নেই। ভালো খেললে জিতবেন।"