পুরনো স্মৃতির ছোঁয়ায় জিম্বাবুয়ের আফগান জয়
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 3 ঘন্টা আগে আপডেট: 1 সেকেন্ড আগে
পুরনো স্মৃতির ছোঁয়ায় জিম্বাবুয়ের আফগান জয়
পুরনো স্মৃতির ছোঁয়ায় জিম্বাবুয়ের আফগান জয়
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দীর্ঘদিন ধরে কঠিন সময় পার করছে। একসময় এন্ডি ফ্লাওয়ার, গ্রান্ট ফ্লাওয়ার ও হিথ স্ট্রিকের মতো তারকাদের আলোয় উজ্জ্বল ছিল এই দল, কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই জৌলুশ অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। তবু মাঝে মাঝে এমন কিছু জয় আসে, যা হারানো দিনের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে আশার আলো ছড়িয়ে দেয়।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত টেস্টে জিম্বাবুয়ে এক ইনিংস ও ৭৩ রানে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে। টস জিতে প্রথমে বোলিংয়ে নামা জিম্বাবুয়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে দেয়। জবাবে বেন কারেনের অনবদ্য শতক এবং সিকান্দার রাজার দৃঢ় ইনিংসের উপর ভর করে ৩৫৯ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ইনিংসে আফগানিস্তান ১৫৯ রানে অলআউট হয়ে হেরে যায় এক ইনিংস ও ৭৩ রানের ব্যবধানে।
বেন কারেন ২৫৬ বল মোকাবেলা করে ১৫টি চারে ১২১ রান করেন, যা তার ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট শতক। তরুণ এই ব্যাটারের পারফরম্যান্স অনেককে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে একসময়ের ফ্লাওয়ার ভাইদের, যাদের দক্ষতায় জিম্বাবুয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে পরিচিতি পেয়েছিল। বোলিংয়ে মুজরাবানি ও রিচার্ড এনগ্রাভার দারুণ স্পেল আফগান ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন। বিশেষ করে মুজরাবানির বোলিংয়ে যেন হিথ স্ট্রিকের ছায়া দেখা গেছে।
আফগানদের প্রথম ইনিংসে ইব্রাহিম জাদরান করেন ১৯ রান, আব্দুল মালিক ৩০ এবং রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৩৭ রান করে দলের পক্ষে লড়াই করেন। তবে দলগতভাবে আফগান ব্যাটিং ছিল বেশ দুর্বল। প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়ের পেসার ব্রাড ইভান্স নেন ৫টি উইকেট।
নিজেদের ইনিংসে বেন কারেন সেঞ্চুরি করে দলের ভিত গড়ে দেন। তার সঙ্গে সিকান্দার রাজা ৮৮ বলে ৬৫ রান করেন, নিক ওয়ালস ৪৯ রান করেন এবং ব্রাড ইভান্স ৩৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। ফলে জিম্বাবুয়ে দাঁড় করায় ৩৫৯ রানের বড় সংগ্রহ।
দ্বিতীয় ইনিংসে রিচার্ড এনগ্রাভা ৫ উইকেট ও মুজরাবানি ৩ উইকেট নিয়ে আফগানদের গুঁড়িয়ে দেন। আফগানিস্তান দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৯ রানেই থেমে গেলে জিম্বাবুয়ে জেতে এক ইনিংস ও ৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে টেস্ট ম্যাচে জয় পেল তারা।
ম্যাচ শেষে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন বলেন, “এই জয় আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। আমরা কঠিন সময় পার করছি, তবে এই ধরনের জয় আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগায়। বেন কারেনের শতক আমাদের জন্য ছিল একটি বিশেষ মুহূর্ত।”
আফগান অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদি বলেন, “আমরা শুরুটা ভালো করলেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারিনি। অভিজ্ঞতার অভাবই আমাদের হারিয়ে দিয়েছে।”
জিম্বাবুয়ের এই জয় শুধু একটি ম্যাচ নয়, এটি হারানো সময়ের সোনালী স্মৃতি জাগিয়ে দেয় এবং ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখায়। আফ্রিকার এই দেশটি যদি এমন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে, তাহলে হয়তো আবার বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্রে শক্ত অবস্থান পেতে পারে।