Image

রশিদের ঘূর্ণি, তবু জয় সোহানদের

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 6 ঘন্টা আগেআপডেট: 8 মিনিট আগে
রশিদের ঘূর্ণি, তবু জয় সোহানদের

রশিদের ঘূর্ণি, তবু জয় সোহানদের

রশিদের ঘূর্ণি, তবু জয় সোহানদের

সুপার ফোরে পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে শেষ হয়েছিল বাংলাদেশের এশিয়া কাপ অভিযান। সেই ম্যাচে বাজে ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং ব্যর্থতাও ছিল স্পষ্ট। তবে সেই হতাশা পেছনে ফেলে নতুন মিশনে নামেন টাইগাররা। সংযুক্ত আরব আমিরাতেই থেকে শারজাহতে প্রস্তুতি সেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামে ফিল সিমন্সের দল।


সুপার ফোরে পাকিস্তানের কাছে ১১ রানে হেরে শেষ হয়েছিল বাংলাদেশের এশিয়া কাপ অভিযান। সেই ম্যাচে বাজে ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিং ব্যর্থতাও ছিল স্পষ্ট। তবে সেই হতাশা পেছনে ফেলে নতুন মিশনে নামেন টাইগাররা। সংযুক্ত আরব আমিরাতেই থেকে শারজাহতে প্রস্তুতি সেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামে ফিল সিমন্সের দল।


প্রথম ম্যাচেই ব্যাটে-বলে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। উদ্বোধনী জুটিতে তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ ইমনের দাপট, মাঝের ধস কাটিয়ে নুরুল হাসান সোহানের শান্ত নেতৃত্ব—সব মিলিয়ে রশিদ খানদের ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা করে টাইগাররা।

প্রথমে ব্যাট করে রহমানউল্লাহ গুরবাজ (৪০) ও মোহাম্মদ নাবীর (৩৮) ব্যাটে ৯ উইকেটে ১৫১ রান সংগ্রহ করে আফগানরা। দুই ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (৫১) ও পারভেজ হোসেন ইমন (৫৪) এর শতরানের উদ্বোধনী জুটির পর ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত নুরুল হাসান সোহানের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে আফগানদের হারিয়ে সিরিজে শুভ সূচনা করে টাইগাররা।

১৫২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তামিম ও ইমনের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। দুজনে মিলে পাওয়ার প্লেতে কোনো ঝুঁকি না নিয়ে যোগ করেন ৫০ রান। তবে এখানেই থেমে থাকেননি তামিম-ইমন, দুজনে মিলে বাংলাদেশের সংগ্রহ নিয়ে যান তিন অঙ্কে। যেখানে ইমন ৩৫ বলে তিন চার এবং তিন ছক্কায় তুলে নেন ফিফটি।

তবে এই ফিফটি করার পথে ইমন দুবার জীবন পান। প্রথমে ১৯ রানে নাবীর করা ইনিংসের পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে বড় শট খেলতে গিয়ে বল আকাশে উঠলে গুরবাজ বলের নিচে গিয়ে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন। পরের বলেই ছক্কা হাঁকান ইমন, যা গিয়ে পড়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারির ছাদে। ওভারের শেষ বলেও ক্যাচ তুলে দেন ইমন, তবে এবারও ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হন আফগান ফিল্ডার। ইনিংসের দশম ওভারের চতুর্থ বলে আবারও ইমন বল পাঠান ছাদে।

তবে ফিফটির পর ইমনের ইনিংস থামে ফরিদ আহমেদের বলে। আফগান এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলারের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে সাজঘরে ফেরেন ইমন। ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করলেও রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি এই ব্যাটার। ফলে শতক ছাড়ানো বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি থামে ১০৯ রানে।

ইমনের বিদায়ে ক্রিজে আসেন এশিয়া কাপে দারুণ সময় পার করা সাইফ হাসান। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান করা এই ব্যাটার আজ যেন কিছুই বুঝে উঠতে পারেননি, রশিদের গুগলিতে কুপোকাত হয়ে ফিরেন শূন্য হাতে। অন্যপ্রান্তে উইকেট আগলে রাখা তামিমকেও ফিফটির পর নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান রশিদ। ফলে তামিম ৩৭ বলে ৩ চার এবং ৩ ছক্কায় ৫১ রানে ফিরেন। রশিদের এই জোড়া আঘাতে টাইগার ব্যাটিংয়ে নামে ছন্দপতন।

এক ওভার পরে অধিনায়ক জাকের আলীকেও (৬) প্যাভিলিয়নের পথ দেখান রশিদ। এরপর ক্রিজে আসা শামীম হোসেনও রশিদের শিকার হন, এই বাঁহাতি ব্যাটার ফিরেন রানের খাতা না খুলেই। পরপর দুই ওভারে জোড়া আঘাতে আফগান এই লেগ স্পিনারের গুগলিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং, ১ উইকেটে ১০৯ থেকে ১১৭ রানেই হারায় ৫ উইকেট।

এরপর ১১৮ রানে আবার আঘাত হানেন নুর আহমেদ। আফগান এই চায়নাম্যান বল হাতে তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিবকে, যিনি খাতা খুলতেই পারেননি। ফলে রান তাড়ায় ৬ উইকেট হারিয়ে নড়বড়ে হয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। তবে এরপর আর কোনো অঘটন ঘটতে দেননি নুরুল হাসান সোহান। রিশাদ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ২৫ রানের জুটিতে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সোহান।

জয়ের জন্য শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। ইনিংসের ১৯তম ওভারে আজমতুল্লাহর বলে দুটি ছক্কায় ১৩ রান তুলে চাপ কমিয়ে আনেন সোহান, আর চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন রিশাদ। ফলে মাঝের নাটকীয়তা আর শেষের রোমাঞ্চে ৪ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় পায় বাংলাদেশ।


আফগানিস্তানের হয়ে লেগ স্পিনার রশিদ খান ১৮ রানে নেন ৪ উইকেট। একটি করে উইকেট পান নুর আহমেদ ও ফরিদ আহমেদ।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি আফগান ব্যাটাররা। পাওয়ার প্লেতে তোলেন মাত্র ৩৩ রান, যেখানে হারাতে হয় ৩ উইকেট। নাসুম আহমেদ ও তানজিম সাকিব ফিরিয়ে দেন ইব্রাহিম জাদরান (১৫) ও সাদিকুল্লাহ আতালকে (১০)। আর রান আউটের ফাঁদে কাটা পড়েন দারউইস রাসুলি (০)।

পাঁচে নামা মোহাম্মদ ইসহাককে (১) ফেরান রিশাদ। এরপর আজমতুল্লাহ উমরজাইকে (১৮) প্যাভিলিয়নের পথ দেখান তিনিই।

দলীয় ১২৭ রানে রহমানউল্লাহ গুরবাজ (৪০) ফিরলে আফগানদের ইনিংস বারবার থেমে যেতে থাকে। শেষদিকে মোহাম্মদ নাবীর ২৫ বলে ৩৮ রানে ইনিংসটি কিছুটা গতি পায় এবং দলীয় সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ১৫১ রান।

বাংলাদেশের হয়ে কিপটে বোলিং করেন নাসুম আহমেদ। এই স্পিনার ১ উইকেট নিলেও রান দেন মাত্র ১৮। মুস্তাফিজুর রহমানও ছিলেন মিতব্যয়ী, ৪ ওভারে ২৪ রানে নেন ১ উইকেট। অন্যদিকে তানজিম ও রিশাদ দুটি করে উইকেট নিলেও রান খরচ করেন ৩০-এর বেশি। তাসকিন আহমেদ ছিলেন সবচেয়ে খরুচে, ৪ ওভারে ৪০ রানে তার শিকার মাত্র ১ উইকেট।
 

Details Bottom
Details ad One
Details Two
Details Three