ভারতের ২১ রানের জয়ের ম্যাচে অর্শদীপের অন্যরকম শতক
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 15 ঘন্টা আগেআপডেট: 1 ঘন্টা আগে
ভারতের ২১ রানের জয়ের ম্যাচে অর্শদীপের অন্যরকম শতক
ভারতের ২১ রানের জয়ের ম্যাচে অর্শদীপের অন্যরকম শতক
এশিয়া কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিল ভারত। গ্রুপ পর্বে ওমানের বিপক্ষে ম্যাচ তাই ছিল নিয়মরক্ষার লড়াই। এই ম্যাচে সুরিয়াকুমার যাদবদের হারানোর কিছু ছিল না। এই কারণেই হয়তো দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওমানের বিপক্ষে খেলতে নেমে ভারতীয় ক্রিকেটারদের ছিল ঘা ছাড়া ভাব।
ওমানকে ১৮৯ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিলেও একক আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি ভারত। বরং ম্যাচ জিতেছে মাত্র ২১ রানে। ওমানকে এই রানে আটকাতে ভারত ব্যবহার করেছে আট বোলার, যেখানে উইকেটের মুখ দেখেছেন মাত্র চার বোলার। ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে ভিনায়ক শুকলাকে ফিরিয়ে অর্শদীপ সিং প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে টি২০ ক্রিকেটে ছুঁয়েছেন ১০০ উইকেটের মাইলফলক।
ভারতের ১৮৮ রানের জবাবে চোখে চোখ রেখে লড়েছে ওমান। ১৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে ওমানের ১৬৭ রানের স্কোর বলে দেয় জাতিন্দের সিং, আমির কালিম, হাম্মাদ মির্জারা খেলেছেন জয়ের লক্ষ্যেই। ওমান লড়াইও পাকিস্তান দেখাতে পারেনি ভারতের ম্যাচে, যেখানে ম্যাচ হয়েছিল একপেশে।
১৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওমানের অধিনায়ক যতিন্দের সিং ও ওপেনার আমির কালিম মিলে গড়েন ৫৭ রানে উদ্বোধনী জুটি। রান তাড়ায় এই জুটি একটু মন্তর গতিতে আগালেও ওমানকে লড়াইয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল এই জুটি। দলীয় ৫৭ রানে যতিন্দেরকে (৩২) সাজঘরে পাঠিয়ে এই জুটি ভাঙেন কুলদীপ যাদব।
তবে ম্যাচের সেরা জুটি আসে কালিম ও হাম্মাদ মির্জার ব্যাটে। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে মিলে যোগ করেন ৯২ রানে ঝলমলে এক জুটি। যেখানে কালিম ৪৬ বলে ৭ চার এবং ২ ছক্কায় খেলেন ৬৪ রানের এক মূল্যবান ইনিংস। দলীয় ১৪৯ রানে কালিমকে ফিরিয়ে এই জুটি থামান হার্শিত রানা। এরপর হাম্মাদ ফিরেন দ্রুত, তবে হার্ডিক পান্ডিয়ার বলে আউট হওয়ার আগে হাম্মাদ খেলেন ৩৩ বলে ৫ চার এবং ২ ছক্কায় ৫১ রানের দারুণ এক ইনিংস।
ইনিংসের উনিশতম ওভারে হাম্মাদ ফিরলেও বিশতম ওভারে আরও এক উইকেট হারিয়ে বসে ওমান। শেষ দুই ওভারে ওমানের প্রয়োজন ছিল ৪০ রান। সেখানে হাম্মাদ ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে আশা জাগান। তবে ছন্দে থাকা হাম্মাদকে পান্ডিয়া ফেরালে বিপাকে পড়ে ওমান।
হাম্মাদ আউট হলে শেষ ৬ বলে ওমানের প্রয়োজন দাঁড়ায় ৩৪ রান। ২০ ওভারের প্রথম বলে ভিনায়েক শুকলাকে (১) ফেরান আর্শদীপ। আর শুকলাকে ফিরিয়ে প্রথম ভারতীয় হিসেবে টি২০ তে ১০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন অর্শদীপ। নিজের ৬৪ ম্যাচে এই বিরল রেকর্ডের মালিক হন ভারতীয় এই বাঁহাতি পেসার।
তবে শততম উইকেটের স্বাদ তেতো হয়ে যায় যখন ওমানি ব্যাটার রামান্দা পরপর দুই বলে দুই বাউন্ডারি হাঁকান। এরপর ওভারের শেষ বলে আবারও চার হাঁকালে রান তাড়ায় ওমানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৭, যা জয় থেকে ছিল ২১ রানে দূরে।
ওমানকে এই রানে আটকাতে ভারতকে ব্যবহার করতে হয়েছে আট বোলার। আট বোলারের মধ্যে উইকেটের মুখ দেখেছেন কেবল অর্শদীপ সিং, হার্ডিক পান্ডিয়া, কুলদীপ যাদব ও হার্শিত রানা। আক্সার প্যাটেল, তিলক ভার্মা, ও অভিষেক শর্মা ১ ওভার করে বোলিং করলেও কোনো উইকেট পাননি। এছাড়া শিভাম ধুবে ৩ ওভার বোলিং করেও ছিলেন উইকেটহীন।
এর আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬ রানের মাথায় ওপেনার শুভমান গিলকে (৫) হারায় ভারত। গিলকে ফিরিয়ে ভারতীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন শাহ ফয়সাল। দ্বিতীয় উইকেটে অভিষেক শর্মা (৩৮) তিনে নামা সানজু স্যামসনকে নিয়ে গড়েন ৬৬ রানের এক জুটি। দলীয় ৭২ রানে অভিষেককে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন রামানান্দি। চারে নামা পান্ডিয়া (১) রান আউট কাটা পড়লে মাত্র ৭৩ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত।
সেখান থেকে স্যামসনের ৪৫ বলে সমানসংখ্যক ৩ চার ও ছক্কায় ৫৬ রানের ইনিংস, পাঁচে নামা প্যাটেল ১৩ বলে ২৬, আর তিলক ভার্মার ব্যাটে ১৮ বলে ২৯ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ভারত ৮ উইকেটে সংগ্রহ করে ১৮৮ রান।
ওমানের হয়ে ২টি করে উইকেট শিকার করেন শাহ ফয়সাল, জিতেন রামানান্দি ও আমির কালিম। ভারতীয় ব্যাটারদের গতিরোধ করতে ওমানও ব্যবহার করে সাত বোলার। ফয়সাল, জিতেন, কালিম উইকেট পেলেও বাকি চার বোলার কোনো উইকেটের দেখা পাননি।
৪৬ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন ভারতের সানজু স্যামসন।