খেলার সাথে রাজনীতি না মেশাতে রাশিদ খানের অনুরোধ
খেলার সাথে রাজনীতি না মেশাতে রাশিদ খানের অনুরোধ
খেলার সাথে রাজনীতি না মেশাতে রাশিদ খানের অনুরোধ
যু'দ্ধ'বি'ধ্ব'স্ত দেশ আফগানিস্তান। রাজনৈতিক টানাপোড়নে দূর্বিসহ এখানকার মানুষদের জীবনযাত্রা। তবে ক্রিকেট এখানো এই মানুষদের আনন্দের কারণ। আফগানরা ক্রিকেট প্রেমী জাতি। সরকার ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেক সুযোগ সুবিধা না পেলেও ক্রিকেটের প্রতি প্রগাঢ় ভালোবাসায় অল্প সময়ে তারা এগিয়ে গেছে বহু দূর।
আফগানরা তাদের পারফরম্যান্সে বহুদূর এগিয়ে গেলেও সেই পথে এসেছে বাঁধা। এই যেমন গত বছর আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের বিপক্ষে পূর্ব নির্ধারিত ওয়ানডে সিরিজ খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। ক্ষমতা গ্রহণের পর আফগানিস্তানে নারী ও শিশু শিক্ষায় তালেবানদের কড়াকড়ি বেড়ে যাওয়ার প্রতিবাদ হিসেবে নির্ধারিত দ্বিপাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজটি বাতিল করেছিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
দু’বছরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মত আফগানিস্তানের সাথে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাতিল করেছিলো অস্ট্রেলিয়া। ২০২১ সালে নারী বিষয়ে তালেবান সরকারের বিতর্কিত নীতির কারণে হোবার্টে একমাত্র টেস্ট বাতিল করেছিলো অস্ট্রেলিয়া।
দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাতিল করলেও বিশ্বকাপে ঠিক ই আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবং আফগানরা তুলে নিয়েছে অজিদের বিপক্ষে কাঙ্ক্ষিত জয়। মনে করা হচ্ছে এই জয় অনেক কিছুর প্রতিবাদ। সে ব্যাপারেই ম্যাচের পরে সংবাদ সম্মেলনে আফগান অধিনায়ক রাশিদ খানের কাছে জানতে চাওয়া হয়।
রাশিদ খান বলেন, 'বিশ্বকাপে খেলতে পারলে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কেন নয়? আমরা স্পোর্টসম্যান, খেলা ভালোবাসি। দেশের মানুষও খেলা ভালোবাসে। আমাদের দেশে ক্রিকেটই আনন্দের একমাত্র উৎস। এই একটা কারণেই দেশের মানুষ একটু উদযাপনের সুযোগ পায়। যদি এটাও দূরে সরে যায়, জানি না আফগানিস্তানে আর কি অবশিষ্ট থাকবে। বিশ্বের যেকোনো জায়গায় এখন যদি গিয়ে বলেন আমি আফগানিস্তান থেকে এসেছি, সে একজন ক্রিকেটারের নাম বলবে। আমাদের সেই সুখ কেড়ে নিলে আমাদের জন্য ব্যাপারটা কঠিন হবে।'
ক্রিকেট দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হয়না বলে মন্তব্য করেছেন রাশিদ, 'আমরা ক্রিকেটার হিসেবে ক্রিকেট নিয়েই কথা বলতে পারি। যেকোনো দলের বিপক্ষেই খেলতে আমরা পছন্দ করি। এর মাধ্যমেই আমাদের ক্রিকেট উন্নতি করবে। আমার কাছে যদি সমাধানের সুযোগ থাকত... জানি না এর সমাধান কী।'
ক্রিকেটের বাইরে অন্যকিছু বোঝেন না রাশিদ খান। তবে তিনি জানেন বড় দলের বিপক্ষে খেলাটা আফগান ক্রিকেটের উন্নতির জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন,
'সরকার, রাজনীতি- এসব আমি খুব একটা বুঝি না। এসব আমার পছন্দও নয়। আমি শুধু জানি আমরা বড় দলের বিপক্ষে খেলতে চাই। বিশ্বজুড়ে ঘুরে ঘুরে খেলতে চাই। অস্ট্রেলিয়ায় যখন বিগ ব্যাশ খেলতে যাই, সেখানকার সমর্থকরা আমাকে এত ভালোবাসে। ২০২২ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে যখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলছিলাম, অস্ট্রেলিয়ার চেয়েও বেশি সমর্থন আমি পেয়েছি। ২০১৯ সালে যখন আমার বাবা মারা যান তখনও আমি অস্ট্রেলিয়ায় ছিলাম। সেখানে এত ভালোবাসা পেয়েছিলাম, আমি তাদের পরিবার মনে করি।'
খেলাধুলার সাথে রাজনীতি মেশাবেন না, অনুরোধ রশিদ খানের। 'ক্রিকেট এক্ষেত্রে কোনো সমাধান নয়। এখানে খেলা মেশানো উচিৎ নয়। অন্য সমাধান থাকলে সেটা করুন।'