বেঙ্গালুরু কান্ডে পুলিশের এফআইআর, অভিযুক্ত যারা

বেঙ্গালুরুতে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর আইপিএল জয় উদযাপনে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে পদদলিত হয়ে ১১ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর বেঙ্গালুরু পুলিশ আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি, ইভেন্ট পার্টনার ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট এবং চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের দেখভালের দায়িত্বে থাকা কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ) বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করেছে।

পুলিশ দাবি করেছে তারা আগেই আরসিবিকে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেয়নি। তবুও আরসিবি ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলি পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনুষ্ঠান চালিয়ে যায়।

এফআইআরের ভিত্তিতে ছয়টি ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে culpable homicide (ধারা ১০৫), গুরুতর জখম (ধারা ১১৮), বিপজ্জনক উপায়ে আঘাত (ধারা ১১৫), সরকারি কর্তব্যে বাধা (ধারা ১৩২), জীবনের ঝুঁকি তৈরি করা (ধারা ১২৫), এবং বেআইনি সমাবেশ (ধারা ১৯০)। অভিযোগকারী হিসেবে নাম রয়েছে কাব্বন পার্ক থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর গিরীশ একের।

পুলিশ জানায়, ৪ জুন আরসিবি সামাজিক মাধ্যমে বিনামূল্যে প্রবেশের ঘোষণা দেয়। এরপর টিভি চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে, যা বিশাল জনসমাগম সৃষ্টি করে। পুলিশের অনুরোধ এবং অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও, কেএসসিএ ও ডিএনএ ইভেন্টটি চালিয়ে যায়। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩০,০০০-৩৫,০০০ হলেও সেদিন লক্ষাধিক সমর্থক ভিড় জমায়। বিকেল ৩:১০ মিনিটে গেট খোলার পর বিশৃঙ্খলা শুরু হয় এবং পদদলনের ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় ১১ জন মারা যান, ৬৪ জন আহত হন, যাদের মধ্যে পুলিশ সদস্যরাও রয়েছেন। ভাঙচুর হয় জনসাধারণের সম্পত্তিও।

ঘটনার জেরে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া একটি তদন্ত কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন এবং সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতিনিধিদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। তিনি বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার এবং সংশ্লিষ্ট থানার ইন্সপেক্টরকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশও দেন।

বৃহস্পতিবার কর্ণাটক সরকার ঘটনাটির পূর্ণাঙ্গ তদন্তে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের ঘোষণা করেছে। এর পাশাপাশি রাজ্য সরকার ও আরসিবি, মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ এবং আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় বহনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ঘটনা নিয়ে আরসিবির প্রতিক্রিয়া এখনও জানা যায়নি।