

প্রায় নয় বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে টেস্ট খেলতে নামছে টাইগাররা। দলের যে কয়জন এর আগে নামতে পেরেছে প্রোটিয়াদের মাঠে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন সাকিব আল হাসান। পেসারদের উইকেটে সে সিরিজে মোট ১১ উইকেট নিয়েছিলেন সাকিব। আর তিনিই কিনা এবারের সফরে আগে বিশ্রামে! তবে, সব ছাপিয়ে সাকিবের বিশ্রামের সিদ্ধান্তকেই সম্মান জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।
সাকিব দলে থাকলে নির্বাচকরা নিশ্চিন্তে দল সাজাতে পারেন একজন অতিরিক্ত বোলার নিয়ে অথবা অতিরিক্ত একজন ব্যাটসম্যান খেলিয়ে। কেননা, অলরাউন্ডার সাকিব যে দারুণ একজন ব্যাটসম্যান আর দুর্দান্ত স্পিনারের ভূমিকা পালন করেন নিজেই। ফলে সাকিবকে হারিয়ে বেশ বিপাকেই নির্বাচকরা।
দল নির্বাচনে যে নামটি সবার আগে নিশ্চিত করে বাকী দল সাজানো হতো, সে নামটি ছাড়া দল ঘোষণা করা নির্বাচকদের জন্য ছিল পাহাড়সম কঠিন কাজ। তবুও করতে হয়েছে, ঘোষণা করতে হয়েছে দল। সংবাদ সম্মেলনে এসে নান্নু জানালেন ঠিক কতটা কঠিন ছিল সাদা পোশাকের বাংলাদেশ দল নির্বাচন।
“ওকে ছাড়া তো আমরা দল চিন্তা করতে পারি না। দল নির্বাচন করার সময় তো ওর নামটা সবার আগে লিখতে হয়। বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার, ওকে দলে না পাওয়াটা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। সে ছুটি চেয়েছে, মঞ্জুর হয়েছে। এখন সেটা নিয়েই চলতে হবে। ইনজুরি হলেও তো সাকিবকে ছাড়া খেলতে হতো!”
স্বেচ্ছা অবসরে যেমনটা ‘হায়,হায়’ রব উঠেছে, ইনজুরি হলে এমনটা হতোনা নিশ্চয়ই। যদিও টেস্ট ক্যারিয়ারের সেরা সময়টা কাটানোর ঠিক মাঝপথে এমন বিশ্রামের খবর চমকে দেয়ার মতই। তবে, পাশেই আছেন নির্বাচকদের প্রধান।
বলছেন শরীর আর মনের ক্লান্তি না কাটাতে পারলে মাঠে সেরাটা দিতে সমস্যায়ই পড়বেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। নান্নুর অনুরোধ, সাকিবের সিদ্ধান্তটা যেন সম্মান পায়।
“ও তো সারা বিশ্বের সব জায়গায় খেলছে। কিন্তু লম্বা বিরতি সে পায়নি। এ কারণেই সে ছুটি চেয়েছে। শারীরিক চাহিদার ব্যাপারটি ভাবতে হবে। পাশাপাশি মানসিক ব্যাপারটাও ভাবতে হবে। আমি যেহেতু খেলোয়াড় ছিলাম, আমি জানি মানসিকভাবে শতভাগ ফিট না থাকলে কিন্তু পারফরম্যান্স শতভাগ ভালো হয় না। সে হিসেবে ওর সিদ্ধান্তটাকে সম্মান জানানো উচিত।”
সাকিব চেয়েছিলেন ছ’মাসের বিরতি। কিন্তু বিসিবির চাওয়া আরও আগেই সাকিব ফিরুক নতুন উদ্যমে। তাই ছুটিটা দেয়া হয়েছে শুধু দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজ পর্যন্তই। ঘরের মাঠে ডিসেম্বরে লঙ্কানদের বিপক্ষে টেস্টে তো ফিরতে হবেই, সাকিব চাইলে দলে ফিরতে পারেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টেও!
আর সবার মতই প্রধান নির্বাচকেরও আশা মানসিকভাবে নতুন করে চাঙ্গা হয়ে খুব দ্রুতই মাঠে ফিরবেন সাকিব। সাকিবকে শুভকামনা জানিয়ে বলেছেন, “আপাতত দুই টেস্টের জন্য তাকে বিরতি দিয়েছি। সে হয়ত এই সিরিজের পরই বা একটা টেস্ট শেষেই দলের সঙ্গে যোগ দিবে। সে আমাদের সেরা ক্রিকেটার। আমরা আশাবাদী, সে দ্রুত ফিরবে।”
সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিজ্ঞাপনের আলোটা নিজের উপরে নিয়েছেন বেশ কিছুদিন হলো। তাকে ছাড়া চিন্তা করা যায়না বাংলাদেশের ক্রিকেট। তাই দ্রুতই নতুন উদ্যমে ফিরে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উদ্যমটা আবারও আগের জায়গায় ফেরাবেন সাকিব এমনটাই আশা আপামর বাংলাদেশী ক্রিকেটপ্রেমীর।