৩৬ উইকেট পাওয়া নাইম টুর্নামেন্ট সেরা, এনসিএলে চ্যাম্পিয়ন তার দল চট্টগ্রাম

এনসিএল চট্টগ্রাম
Vinkmag ad

শেষ হলো জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) দ্বিতীয় স্তরের টুর্নামেন্ট। দেশের ক্রিকেটে লাল বলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই আসর শুরু হয়েছিল গত ১২ অক্টোবর। মোট ৮ টি দল দুই স্তরে ভাগ হয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে। ইতোমধ্যে প্রথম স্তরে ঢাকা বিভাগ চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। আর আজ দ্বিতীয় স্তরের চ্যাম্পিয়ন দল হিসেবে টুর্নামেন্ট শেষ করল চট্টগ্রাম বিভাগ। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন, চট্টগ্রামের স্পিনার নাঈম হাসান। ৬ ম্যাচে তিনি সংগ্রহ করেছেন ৩৬ টি উইকেট।

জয়ের খুব কাছাকাছিই ছিল চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় স্তরে নিজেদের শেষ ম্যাচে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে মাঠে নামে চট্টগ্রাম বিভাগ। এই ম্যাচে জয় নিশ্চিত করতে পারলে দ্বিতীয় স্তরের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ দেখছিল দলটি। রাজশাহীর বিপক্ষে তাই জয় পেতে খুব একটা কষ্ট করতে হয়নি চট্টগ্রামের দলটিকে।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয় গত ১৮ নভেম্বর। টেবিলের শীর্ষস্থান তখনো চট্টগ্রামের দখলে। আর তিনে অবস্থান করছে রাজশাহী। টসে জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল চট্টগ্রাম অধিনায়ক ইরফান শুক্কুর। সেই সিদ্ধান্ত বেশ ফলপ্রসু হয়েই দেখা দেয় দলটির জন্য।

রাজশাহী প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তানজিদ হাসান তামিম ও নাজমুল হাসান শান্তকে হারিয়ে বসে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই। ২ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রানে বিরতিতে যাওয়া পর্যন্ত তবুও ঠিক ছিল।

বিরতি থেকে ফিরে পরপর ৩ উইকেট হারিয়েছে দলটি। একপাশ আগলে ছিলেন কেবল আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেন। সাব্বির ফিরেছেন ৭৩ রান করে। আর নিউজিল্যান্ড সিরিজে ডাক পাওয়া স্পিনার হাসান মুরাদ ততক্ষণে প্রতিপক্ষের ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন।

প্রীতম কুমার ও সানজামুল ইসলাম এর ৩৮ রানের জুটি ভেঙেছেন মুরাদ। ফলে চারটি উইকেট ছিল তাঁর ঝুলিতে। রাজশাহীর পরের ৩ উইকেট নিয়েছেন স্পিনার নাঈম হাসান। দলটি ৪৮.২ ওভার খেলে অলআউট হয়েছে ১৮৯ রানে। শুধু একপ্রান্ত আগলে তখন অপরাজিত ছিলেন প্রীতম, ৪৭ রান করে।

হাসান মুরাদ ও নাঈম হাসান শুধু নন। পেসার হাসান মাহমুদ তুলেছেন ৩ টি উইকেট।

প্রথম দিনেই ব্যাট করার সুযোগ আসে চট্টগ্রামের জন্য। অবশ্য বিনা উইকেটে দিন শেষ করার সৌভাগ্য হয়নি তাদের। দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও পারভেজ হোসেন ইমন’কে হারাতে হয়েছে।

২০ ওভার খেলে ২ উইকেট হারিয়ে ৭২ রানে দিন শেষ করে চট্টগ্রাম।

দ্বিতীয় দিনে ইরফান শুক্কুর ও শাহদাত হোসেন দিপু চট্টগ্রামের পক্ষে আশা হয়ে দাঁড়ায়। দুজন মিলে শতক ছাড়িয়ে যাওয়া জুটি গড়ে। দুঃখজনকভাবে ইরফান আউট হয়ে ফিরেছেন ৯৯ রানে। দলের রান তখন ২১৭।

দিপুও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। সেঞ্চুরিও হয়নি তাঁর। ফিরে গেছেন ৮৭ রান করে। আর তেমন কোনো বলার মতো স্কোর করেননি চট্টগ্রামের খেলোয়াড়েরা। দ্বিতীয় দিনেই গুটিয়ে গেছেন তাঁরা। তবে হাতে ছিল ১০১ রানের লিড।

তবে রাজশাহীর পক্ষে সানজামুল ইসলাম একাই তুলে নেন ৬ টি উইকেট।

দ্বিতীয় দিনে শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি রাজশাহী। দিন শেষ করতে হয়েছে ৬ উইকেট হারিয়ে। প্রীতম কুমার সর্বোচ্চ ৩১ রান করেছিলেন এরমধ্যে। চট্টগ্রামের বোলারদের পক্ষে হাসান মুরাদ একাই নিয়েছেন ৪ টি উইকেট।

তৃতীয় দিনে সকাল সকাল সব উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় রাজশাহী, ১২৪ রানে। চট্টগ্রামের বোলারদের পক্ষে মুরাদ ৫ টি, নাঈম হাসান ও হাসান মাহমুদ ২ টি করে উইকেট নেন।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই ফলাফল চলে আসে। চট্টগ্রাম ২৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামে। মাহমুদুল জয় ও পারভেজ ইমন ২.২ ওভারেই ম্যাচ নিজেদের করে নেয়। ফলে ১০ উইকেটের কাঙ্ক্ষিত জয় লাভ করে চট্টগ্রাম বিভাগ। মোট ৯ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয় চট্টগ্রামের স্পিনার হাসান মুরাদ।

শেষ রাউন্ড শেষে ৬ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে দ্বিতীয় স্তরে চ্যাম্পিয়ন হলো চট্টগ্রাম বিভাগ। দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ করেছে খুলনা বিভাগ, ৬ ম্যাচে ৪ জয় নিয়ে। যথাক্রমে ২ ও ১ জয় নিয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে আছে রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগ।

৬ ম্যাচে মোট ৩৬ উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে শীর্ষে থেকে শেষ করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগের নাঈম হাসান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাজশাহী বিভাগের তাইজুল ইসলাম লাভ করেছেন ২৬ উইকেট।

৫ ম্যাচে ৫২.৭৮ গড়ে মোট ৪৭৫ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের মমিনুল হক। দ্বিতীয় স্থানে আছেন সিলেট বিভাগের শামসুর রহমান শুভ, ৫৫.৭৫ গড় নিয়ে ৫ ম্যাচে ৪৪৬ রান করেছেন।

টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে ৬ ম্যাচে ৩৬ উইকেট নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের নাঈম হাসান।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

ভারতীয় সমর্থকদের আক্রমণের শিকার জিমি নিশাম

Read Next

শান মাসুদের নেতৃত্বে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাচ্ছে পাকিস্তান টেস্ট দল

Total
0
Share