ফাইনালে অল্পতেই আটকে গেল ভারত

অস্ট্রেলিয়া ভারত

আহমেদাবাদে টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা যুতসই হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা চলেছে ম্যাচ শুরুর সময়েই। আর বাকিটা সময় কামিন্সের সিদ্ধান্তকে বাহবা দিয়েছে সবাই। প্রথমে ব্যাট করতে নামা ভারত পাওয়ারপ্লেতে ২ উইকেট হারালেও তুলেছিল ৮০ রান। কিন্তু নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট হারিয়ে পুরো পঞ্চাশ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ২৪০ রানে আটকে যায় রোহিতের দল।

রোহিতের মারমুখী ব্যাটিংয়ের সুবিধা সুদে-আসলে তুলে নেওয়ার সক্ষমতা দেখিয়ে যাচ্ছে ভারত। আর এদিন ফাইনালেও ব্যতিক্রম হয়নি। গিলের ব্যাট তেমন সুবিধা করতে না পারলেও, রোহিত নিজের কাজটা করেছেন ঠিকই।

মিচেল স্টার্কের শর্ট অব লেন্থ বলে পুল খেলতে যাওয়াটা যে উচিত কিছু হয়নি, তা শুবমান গিল বুঝেছেন উইকেট হারানোর পর। ৭ বলে ৪ করে ফেরা, যে গল্প ভুলতেই চাইবেন তিনি।

ওদিকে রোহিত শর্মার ব্যাট চলছিল, সাথে যোগ দিলেন ভিরাট কোহলি। কোহলির সাথে ব্যাট করে ১২ বলে ২২ রান তুলে বিদায় নিতে হয়েছে ভারতীয় অধিনায়ককে।

বাজিটা ম্যাক্সওয়েলকে দিয়েই নিয়েছেন অজি অধিনায়ক। আর বৃত্ত থেকে পিছন দিকে দৌড়ে গিয়ে যে ক্যাচ লুফে নিলেন ট্রাভিস হেড, তা হয়ত তাঁর জীবনের সেরা এক ফিল্ডিং হয়েই থাকবে। ৩ ছয় ও ৪ চারে সাজানো ইনিংসে তিন রান কম হয়ে যায় ফিফটির ছোঁয়া পেতে।

বাঁধ সেজেছে এই মুহূর্তটা। রোহিত যাওয়ার পর আর ৩ বলের ব্যবধানে প্যাট কামিন্সের শিকার হয়েছেন আইয়ার। কামিন্সের ব্যাক অব লেন্থ ডেলিভারিতে হালকা এজ, আর এতেই উইকেটরক্ষকের হাতে তালুবন্দি হয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ব্যাটার।

শ্রেয়াস আইয়ার এর ফেরার পর এবার বিপর্যয় কাটানোর পালা ভারতের। কোহলি একপাশে রান ও বল এর সামঞ্জস্য করে খেলে চলছেন। আর নতুন ব্যাটার হিসেবে রাহুল কিছুটা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন পিচের সাথে।

ভারতের ব্যাটাররা পিচের সাথে সংগ্রামটা কম করলেন না। কামিন্সের ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল, তারই প্রমাণ যেন বারবার দিয়ে যাচ্ছিলেন ভারতীয় ব্যাটাররা। ধীরগতির পিচে, আরও ধীরে চলতে থাকল কোহলি ও রাহুল এর জুটি। এরমধ্যে দলীয় রান শতক ছাড়িয়ে যায়।

এই বিশ্বকাপে নিজের ৬ষ্ঠ ফিফটি পেতে ৫৬ বল খরচা করেন কোহলি। ফিফটির পর আর ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। কামিন্সের সাথে আজ পিচের বোঝাপড়া দুর্দান্ত। আর তারই প্রমাণ রাখলেন আবারও।

খাটো লেন্থে দেওয়া বলে কোহলি হয়তো বের করে দিতে চেয়েছিলেন থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে। তা আর হয়নি। ইনসাইড হয়ে স্টাম্প খুঁজে নিয়েছে বল। পুরো আহমেদাবাদ জুড়ে নেমে আসে রাজ্যের নীরবতা। ভারতীয় এই নম্বর তিন ব্যাটার বিদায় নেন ৫৪ রানে।

ভারত তখন ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রানে অবস্থান করছে।

লোকেশ রাহুল একপাশ সামলে তখনো ব্যাট করে যাচ্ছেন। সূর্যকুমার নয়, বরং জাদেজা এসেছেন ক্রিজে। রাহুলকে সঙ্গ দেওয়ার কাজটা খুব একটা ভালো করতে পারেননি। জশ হ্যাজেলউডের ডেলিভারিতে ফিরতে হয়েছে ৯ রান করে।

সূর্যকুমার’কে সঙ্গে নিয়ে রাহুল নিজের ফিফটি ও দলীয় দুইশো রানের কোটা পূর্ণ করেছেন। এবার ফেরার সময় এসেছে তাঁরও। মিচেল স্টার্কের ব্যাক অব লেন্থ ডেলিভারিতে এজ হয়ে জশ ইংলিসের গ্লাভসে গিয়ে পড়ল রাহুলের ভাগ্য। ১০৭ বলে ৬৬ রান করে বিদায় নিতে হলো তাঁকে।

একপাশে সূর্যকুমার যাদব অবশ্য আস্থার প্রতিদান রাখতে পারছেন না। চল্লিশে ওভারের পর যাদবের কাছে যে-ধরনের ব্যাট আসা করে ভারত, সেখানে ব্যর্থতাই পরিলক্ষিত হয়েছে বটে। এরমধ্যে মোহাম্মদ শামি ও জাসপ্রীত বুমরাহ’কে ভারত হারিয়েছে ‘সিঙ্গেল ডিজিট’ এ। ৪০.৫ ওভারে ২০০ পেরোনো ভারত, রান এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হচ্ছিল ওভারের পর ওভার।

যাদব অনেকক্ষণ চেষ্টার পর যখন ফিরলেন, ভারতের দলীয় রান ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৬ রান। কুলদীপ যাদব বেশ কিছু বল খেলে তখনও ক্রিজে ছিলেন। আর ওদিকে মোহাম্মদ সিরাজ এসে কুলদীপ’কে সঙ্গ দিয়ে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত মাঠে থাকলেন। শেষ বলে দুই রান নিতে গিয়ে রানআউটের শিকার হলে ২৪০ রানে থেমে যায় ভারত।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

ফিলি’স্তিনপন্থী দর্শক দৌড়ে ভিরাট কোহলির কাছে

Read Next

ভারতকে উড়িয়ে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হেক্সা

Total
0
Share