অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পরও সেরা আটে বাংলাদেশ

অস্ট্রেলিয়া 2
Vinkmag ad

গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার শেষ ম্যাচে, টাইগারদের ৮ উইকেটে পরাজিত করল অজিরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৩০৬ রানের ভালো সংগ্রহ তুললেও অস্ট্রেলিয়ার কাছে তা যেন ছিল বেশ সহজই। বিশ্বকাপে খেলা নয় ম্যাচে, এটাই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। যা পেরোতে অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন হয়েছে ৪৪.৪ ওভার।

পুনে’তে প্রথমে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ভালো শুরুর মাধ্যমে তিনশো ছাড়ানো স্কোর করে। হৃদয়ের ৭৪ রানের ইনিংস ও বাকিদের কিছু কিছু অবদানে ৩০৬ রানের সংগ্রহ নিশ্চিত হয়। তবে পরে ব্যাট করা অস্ট্রেলিয়ার কাছে তেমন একটা পাত্তা পায়নি এই লক্ষ্যমাত্রা। মার্শের দেড়শো ছাড়ানো ইনিংসে খুব সহজেই ৩২ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নিতে সক্ষম হয় দলটি।

অস্ট্রেলিয়ার জন্য ৩০৭ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই তাসকিন আহমেদ আঘাত হানেন অজি শিবিরে। দলীয় ১২ রানেই ট্রাভিস হেডের স্টাম্প ভেঙে দেন।

একপাশে মিচেল মার্শ দূর্গ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ব্যাট থেকে বাউন্ডারি আদায় করে নিচ্ছিলেন সুযোগ বুঝে। ডেভিড ওয়ার্নার দিতে থাকলেন পূর্ণ সমর্থন। রান ও বল বুঝে দুই ব্যাটার খেলতে থাকলেন জয়ের উদ্যমে।

মার্শের ব্যাটে ফিফটি আসে, দলীয় রান ১০০ ছাড়িয়ে যায় ১৫ ওভারেই। ওয়ার্নারও পেয়ে যান অর্ধ শতক।

১২০ রানের জুটি ভাঙে ৬১ বলে ৫৩ করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে ওয়ার্নার ফিরলে। দলের রান তখন ১৩২। এবার নতুন ব্যাটার স্টিভ স্মিথকে সাথে নিয়ে পথ চলতে শুরু করলেন মার্শ। ১৫০ ছাড়িয়ে দুইশোর পথে ছুটছে তখন অস্ট্রেলিয়া।

ক্রমশই লক্ষ্যমাত্রা সহজ হয়ে যাচ্ছে অজিদের জন্য। মার্শের সেঞ্চুরিও চলে আসে এরইমধ্যে। ৮৭ বলেই শতকের দেখা পান এই ব্যাটার। এদিকে জুটিও ১০০ ছাড়িয়ে যায়।

প্রায় ৩৯ ওভারে ২৫০ রানের কোটা ধরে ইতোমধ্যে সেমি নিশ্চিত করা অস্ট্রেলিয়া। মার্শের ১৫০ পূরণ হয়, অন্যদিকে স্মিথের ব্যাটেও আসে অর্ধশতক।

বাকি পথটুকু স্বাচ্ছন্দ্যেই পাড়ি দিয়েছেন দু’জন। দলকে ভিড়িয়েছেন জয়ের বন্দরে। এই দুই ব্যাটারের ১৭৫ রানের অপরাজিত জুটিতে, মার্শ খেলেছেন ১৩২ বলে ১৭৭ রানের ইনিংস। যেখানে ছিল ১৭ টি চার এবং ৯ টি ছয়ের মার। অন্যদিকে স্মিথ খেলেছেন ৬৪ বলে ৬৩ রানের কার্যকরী ইনিংস।

এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ের সুযোগ আসে বাংলাদেশের জন্য। সেই সুযোগটা বেশ ভালোই কাজে লাগিয়েছে টাইগাররা। অন্তত শুরুর কথা যদি বলা যায়, দুই ওপেনার পাওয়ারপ্লে’র ফায়দা তুলেছেন। মাঝে ব্যাটাররা একটু থিতু হওয়া ব্যাট করলেও, বাংলাদেশের রান তিনশো ছাড়িয়েছে। তবে রান আরও বাড়িয়ে নেওয়ার আক্ষেপটা বোধহয় কিছুটা করতে পারে বাংলাদেশ। ৫০ ওভার খেলে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রান সংগ্রহ করেছে লাল সবুজের দল।

বাংলাদেশ একাদশে ছিল ৩ পরিবর্তন। নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান একাদশে নেই ইনজুরির কারণে। নেতৃত্বে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

লিটন দাস ও তানজিদ তামিম প্রথমে একটু দেখেশুনে খেললেও, আস্তে-ধীরে রানের চাকা সচল করতে থাকেন। সুযোগ বুঝে বাউন্ডারি মেরে পাওয়ারপ্লে’র ফায়দা তুলতে থাকেন।

প্রথম দশ ওভারে বিনা উইকেটে ৬২ রান আসে বাংলাদেশের জন্য। প্রথম উইকেটের পতনটা দলীয় ৭৬ রানে। তানজিদ শন অ্যাবটের শট বলে লিডিং এজ হয়ে ৩৬ রানে বিদায় নেন।

উইকেট পতনে বাংলাদেশের রানের গতি কমেনি। শান্ত ও লিটন মিলে দলীয় রান ১০০ ছাড়িয়ে নেয়, ১৫ ওভারে।

এরপরেই লিটন ফিরেছেন তানজিদের মতোই ৩৬ রান করে। এবার তাওহীদ হৃদয় ও শান্ত জুটি দলের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। ১৫০ ছাড়িয়ে ছুটতে থাকেন দুজন। দুর্ভাগ্যজনক এক রানআউটের শিকার হয়ে ফিফটি না করেই বিদায় নিতে হয় শান্ত’কে, ৪৫ রানে।

হৃদয় ছিলেন একপাশ আগলে। এবার নতুন সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রায় ৩২ ওভারে বাংলাদেশের রান দুইশো ছাড়ায়। রিয়াদের ভালো ফর্ম যাচ্ছে, সেই নমুনা আজও দিচ্ছিলেন। কিন্তু রানআউটের ভুতে পড়ে এই অভিজ্ঞ ব্যাটারও একই পথের পথিক।

তখন বাংলাদেশের রান ৪ উইকেট হারিয়ে ২১৪। রিয়াদ ফিরলেন ৩২ রান করে। পরপর দুই রানআউট পরিস্থিতির কারণে এসময় কিছুটা চাপেই পড়ে বাংলাদেশ। বড় রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুড়ে দেওয়ার আশায় কিছুটা চিড় ধরে। এরমধ্যে হৃদয় নিজের ফিফটি তুলে নেন।

হৃদয়ের সাথে মুশফিকুর রহিম আস্তে-ধীরে খেলছিলেন। প্রায় ৪২ ওভারে গিয়ে ২৫০ রান ওঠে বাংলাদেশের। অ্যাডাম জাম্পার শিকার হয়ে মুশফিকের ফেরা পড়েছে ২২ রান করে, দলীয় রান তখন ২৫১।

রানটা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের জন্য। মেহেদী হাসান মিরাজ কিছুটা দ্রুত রান তুলে তিনশোর কোটা পূরণ করলেও, কাঙ্ক্ষিত রান আরেকটু বেশি হতে পারত বাংলাদেশের। ইনিংসের শেষ ওভার আসে বাউন্ডারি-বিহীন। বাংলাদেশ থামে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৬ রানে।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান

Read Next

বিসিবির কাছে ভাল উইকেট আশা করছেন শান্ত

Total
0
Share