

প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচে দারুণ ‘সাসপেন্স’ তৈরি করে জিতল বাংলাদেশের মেয়েরা। আজ মিরপুরে, বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান নারী দলের দ্বিতীয় ওডিআই ম্যাচে বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ১৭০ রানের লক্ষ্য মোকাবিলা করতে নামে পাকিস্তান। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ম্যাচ টাই হয়। এদিকে সুপার ওভারে পাকিস্তানের দেওয়া ৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে জ্যেতির শেষ বলে নেওয়া বাউন্ডারিতে জয় পায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের দেওয়া ১৭০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সুপার ওভারে গড়ায় ম্যাচ। সুপার ওভারে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করতে নেমে, নাহিদা আক্তারের প্রথম ডেলিভারিতেই ফেরেন ইরাম জাভেদ। পরের বলে একটি রান, পরের ডেলিভারিতে আসে একটি বাউন্ডারি। পঞ্চম বলে নাহিদা আরেকটি উইকেট নেন, মাঝে আর দুই রান যোগ হয়ে মোট রান দাঁড়ায় ৭।
সুপার ওভারে ৮ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে খেলতে নেমে নাশরা সান্ধুর প্রথম ডেলিভারিতেই বাউন্ডারি পেয়ে যান সোবহানা মুস্তারী। দ্বিতীয় বল ডট হলেও, পরের দুই বলে দুইটি রান আসে। পঞ্চম ডেলিভারিতে মুস্তারী আউট হয়ে ফেরেন। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যেতি সেই বলে চার মেরে ম্যাচ শেষ করেন। জয় আসে বাংলাদেশের পক্ষে।
দ্বিতীয় ইনিংসে, বাংলাদেশের দেওয়া ১৭০ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে সব উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান। স্বাগতিকদের মতো ১৬৯ রানেই আটকে যায় তাদের স্কোর। বিশের উপরে ইনিংস খেলেছেন চার জন ব্যাটার।
পাকিস্তানের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। দুই ওপেনার মিলে ১০০ বল মাঠে ছিলেন, দলের জন্য সংগ্রহ করেন ৪১ রান।
সিদরা আমিন ফিরলেন ২২ রান করে। বিসমাহ মারুফের ব্যাটে আজ কোনো রান আসেনি। তবে আরেক ওপেনার সাদাফ শামস ২৯ রান তুলে আউট হয়েছেন।
আলিয়া রাজ ও অধিনায়ক নিদা দার রান পেয়েছেন। আলিয়া ২১ ও নিদা ২৭ রানে ফিরেছেন। দুজনেই রাবেয়া খানের ডেলিভারিতে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন। রাবেয়া বাংলাদেশের পক্ষে তুলেছেন ৩ উইকেট।
আলিয়া ফেরার সময় পাকিস্তানের রান ৪ উইকেট হারিয়ে ৭৪! এরপর দুইটি জুটি হয়, ২৮ ও ২৫ রানের। যে জুটির কল্যাণে পাকিস্তান লক্ষ্যের বেশ কাছাকাছি চলে যায়।
কিন্তু নাজিহা আলভি’র ২২ রানে ফেরা ও দিয়ানা বেগ এর ১৪ রানে ফেরার পর কিছুটা সমস্যা দেখা দেয়। বেগ যখন ফিরেছেন দলীয় রান ৮ উইকেট হারিয়ে ১৫৩। লেজের ব্যাটারদের মধ্যে উম্মে হানি’র উপর কিছুটা ভরসা করা যাচ্ছিল, কিন্তু হানি ৪ বলে ১১ রানে ফিরলে, ৯ উইকেট হারিয়ে দল তখন ১৬৬ রানে।
শেষ ওভার মোকাবিলা করেছেন শেষ দুই ব্যাটার। পাকিস্তানের জিততে প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৩ রান। ফাহিমা খাতুনের দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে দুইটি রান পেয়ে যান দুই ব্যাটার। কিন্তু বাকি দুই বল থাকে ডট। পঞ্চম বলে নাশরা সান্ধু শেষ রান নিতে গিয়ে রানআউটের শিকার হন।
আর এতেই ম্যাচ টাই হয়ে যায়। গড়ায় সুপার ওভারে।
এর আগে প্রথম ইনিংসে, টসে জিতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশের মেয়েরা। তাঁরা পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান তুলতে সক্ষম হয়। অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যেতির ব্যাটে আসে সর্বোচ্চ ৫৪ টি রান।
বাংলাদেশ তাঁদের প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ২১ রানে। ১২ রান করে মুর্শিদা খাতুন ফিরলেও, ফারজানা হক একপাশ আগলে খেলতে থাকেন। সোবহানা মুস্তারী কিছুটা সঙ্গ দিয়ে ফিরেছেন ১৬ রান করে।
ফারজানা যখন রানআউটের শিকার হয়ে ফিরছেন, তখন তাঁকে ফিফটি বঞ্চিত হতে হয়। ৮৮ বলে ৪০ রানের ইনিংস খেলেন এই ওপেনার।
তবে তাঁর আগেই মূলত জ্যেতির সাথে ৪৯ রানের জুটি গড়েন। যা বাংলাদেশকে কিছুটা লড়াই করার শক্তি যোগায়।
জ্যোতি ইনিংস ধরে ছিলেন শেষ ওভার পর্যন্ত। এরমধ্যে কেবল ফাহিমা খাতুন অধিনায়কের সাথে ১৬ রান যোগ করেন, বাকিরা ফিরেছেন সবাই এক ডিজিটে।
শেষ ওভারের পঞ্চম বলে জ্যেতি ফিরলেন ১০৪ বলে ৬৪ রান করে। বাংলাদেশ ৯ উইকেট হারিয়ে থামল ১৬৯ রানে।