শামির পাঁচে ৫৫ রানেই অলআউট শ্রীলঙ্কা

ভারত
Vinkmag ad

কলম্বো যেন ফিরে এল ওয়াংখেড়েতে! শুরুতে ব্যাট করতে নামা ভারতের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা, ৩৫৮ রান, তা টপকাতে গিয়ে নিজেদের উইকেট সামলানো জটিল হয়ে পড়ল শ্রীলঙ্কার জন্য। ১৯.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৫৫ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা। রোহিতের দল ৩০২ রানে জিতে পর পর ৭ ম্যাচে অপরাজিত থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।

প্রথম ইনিংসে মাদুশানকার ৫ উইকেট মলিন করে শামির ৫ উইকেটের মাহাত্ম্য তীব্র হয়ে উঠল। গিলের নব্বইয়ের ঘরে ফেরা, কোহলি ও আইয়ারের ফেরা আশির ঘরে। মারকুটে ব্যাটিংয়ে ভারতের ৩৫৭ রানের সংগ্রহও যেন অপ্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল৷ দ্বিতীয় ইনিংসে৷ শামি, সিরাজ, বুমরাহ’দের বোলিং তোপে। এশিয়া৷ কাপের৷ ফাইনালে ৫০ রানে গুটিয়ে যায় লঙ্কানরা, তারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটল আজ। শামি তুলেছেন ৫ টি, সিরাজ ৩, বুমরাহ ও জাদেজা ১ টি করে। লঙ্কানদের ইনিংস শেষ হয় ৫৫ রানে!

শ্রীলঙ্কার পক্ষে ভারতের ৩৫৮ রানের লক্ষ্য মোকাবিলা সহজ কথা ছিল না। কিন্তু তাঁরা যে তা এত কঠিন করে ফেলবে, সেটাই বা কে ভেবেছিল! একেবারে ওভারের প্রথম ডেলিভারিতেই পাথুম নিশানকা’কে ফিরিয়ে জাসপ্রীত বুমরাহ’র শুরু।

পরের ওভার করতে এসে মোহাম্মদ সিরাজও নিজের প্রথম ডেলিভারিতে দিমুথ করুনারত্নে’কে ফিরিয়েছেন। আর পঞ্চম বলে সাদিরা সামারাবিক্রমা স্লিপে ক্যাচ তুলে ফিরলেন। দলীয় রান তখন থেকে অতিরিক্ত খাত থেকে আসা ২, আর উইকেটসংখ্যা ৩!

বুমরাহর পরের ওভার উইকেটবিহীন থাকার পর, সিরাজ এসে এবার তুলে নিলেন কুশল মেন্ডিসের উইকেট৷ ১০ বলে ১ রান করা মেন্ডিস সরাসরি বোল্ড।

লঙ্কানদের তখন দলীয় ৩ রানে, ৪ উইকেট শেষ। এরপর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও চারিথ আসালাঙ্কা মিলে কিছু সময় ক্রিজে পার করলেন, বল খেললেন, রান ওঠেনি।

মোহাম্মদ শামি যখন পাওয়ারপ্লের শেষ ওভার করছেন, তখন আবার বিপত্তি। ২৪ বলে ১ রান করা চারিথ আসালাঙ্কার ক্যাচ গেল রবীন্দ্র জাদেজার কাছে, ঠিক পরের বলেই নতুন ব্যাটার দুশান হেমন্তকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করলেন। অবশ্য তৃতীয় উইকেটটি আর পাওয়া হয়নি৷ সে ওভারে।

সে না হলেও পরের দুই ওভার করতে এসে দুশমান্থ চামিরা ও ম্যাথুসকে ফিরিয়েছেন শামি। ২৫ বলে ১২ রান করা শামি তখন পর্যন্ত ছিলেন ইনিংসের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বাকিরা কেউ তখন দুই ডিজিটেও আসেনি।

লঙ্কানদের ইনিংসে সবচেয়ে বড় জুটি আসে কাসুন রাজিথা ও মাহিশ থিকশানার ব্যাটে। দু’জন মিলে ২৯ বলে ২০ রান যোগ করেন। এরমধ্যে দুজনেই দু’টি করে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন।

এরমধ্যে শামির ডেলিভারিতে আউটসাইড এজ হয়ে গিলের হাতে ধরা পড়লে রাজিথার ফেরা আর শামির পকেটে ওঠে পাঁচ উইকেট! এরমধ্যে শামি উঠে যান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষে।

রাজিথা যখন ইনিংস সর্বোচ্চ ১৪ রানে ফিরেছেন, দলের রান তখন ৪৯! শেষ উইকেট হিসেবে দিলশান মাদুশানকা ৬ বলের বেশি টিকতে পারেননি, তাঁর ব্যাটে এসেছে একটি চার। জাদেজার ডেলিভারিতে আইয়ারের কাছে ক্যাচ দিলে, ৫৫ রানে গুটিয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। একপাশে ২৩ বল খেলে ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন থিকশানা।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামে ভারত। উড়তে থাকা অধিনায়ক রোহিত শর্মা এদিন প্রথম ওভারেই ফিরেছেন। দিলশান মাদুশানকা’র ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড। এই বোলার পরবর্তীতে নিয়েছেন আরও ৪ উইকেট। তাতে ভারতের রান অবশ্য কমেনি।

অবশ্য রোহিতের ফেরায় তেমন প্রভাব পড়েনি ব্যাটিংয়ে। আরেক ওপেনার শুবমান গিলের ব্যাট ঠিকই হেসেছে। সাথে তিনে নামা ভিরাট কোহলি তো তাঁর মতো খেলে গেছেন নির্ভাবনায়।

পাওয়ারপ্লেতে ৬০ রান তোলা ভারত, ১৬তম ওভার শেষে ১০০ রানে পৌঁছে যায়। রানের চাকা থামেনি ইনিংস জুড়ে। গিল ও কোহলি মিলেও ১০০ রানের জুটি পূরণ করেন।

২৫তম ওভারে দলীয় ১৫০ রানে ভারত, তখনো মাঠে ব্যাট চালিয়ে যাচ্ছেন গিল ও কোহলি। দুজনেই ছুটছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে মাদুশানকার অফ-কাটারে ৯২ রানেই কাট পড়ে গিলের সেঞ্চুরি-স্বপ্ন। ১৯৩ রানের জুটিও ভেঙে যায়।

কোহলিও ফিরতে সময় নেননি আর। মাদুশানকার আরেক কাটারেই পরাস্ত হয়েছেন। ১১৪ কি.মি এর সেই বলে টাইমিংয়ে গলদ করে ক্যাচ তুলে ফিরেছেন, ৮৮ রানে।

পরের গল্পটা শ্রেয়াস আইয়ার ও তাঁর সঙ্গীদের। দলের রান দ্রুত বর্ধনশীল ছিলই। রানের চাকা শ্লথ হতে দেখা যায়নি তেমন। আইয়ারকে সঙ্গ দিয়েছেন লোকেশ রাহুল, সূর্যকুমার যাদব ও রবীন্দ্র জাদেজা।

এরমধ্যে রাহুলের সাথে ৬০ রানের জুটি এবং জাদেজার সাথে ৫৭ রানের জুটি গড়েছেন আইয়ার। ভারতের রানও বাড়ছিল তরতর করে। আইয়ার ফিরেছেন ৫৬ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে, সেই মাদুশানকার ডেলিভারিতে। আইয়ারের উইকেট নিয়েই ৫ উইকেট তুলে নেন এই বোলার। এর আগে সূর্যকুমারকেও ১২ রানে ফিরিয়েছেন। এরমধ্যে ভারতের রান ৩০০ ছাড়িয়েছে।

শেষ ওভারে দুই রানআউটের শিকার হয় ভারত। জাদেজা ও মোহাম্মদ শামি। জাদেজার ব্যাটে আসে ২৪ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৫ রান। ভারত থামে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রানে।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

আবারও শচীন’কে ছাড়িয়ে রেকর্ড গড়লেন কোহলি!

Read Next

শামি’র টোটকা: ছন্দ, ভালো খাবার, মন কলুষিত না করা

Total
0
Share