

জয়ের ধারা ধরে রাখতে রাখতে সর্বশেষ ৩ ম্যাচে হার গুনল নিউজিল্যান্ড। আজ সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নেমে প্রোটিয়াদের দেওয়া ৩৫৮ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে কোনো সুবিধাই করতে পারেনি কিউই ব্যাটাররা। একের পর এক উইকেট হারিয়ে দিশেহারা দলটি অলআউট হয়েছে ১৬৭ রানে। সাউথ আফ্রিকার নামে লেখা হয়েছে ১৯০ রানের জয়।
পুনে’তে প্রথমে ব্যাট করতে নামা সাউথ আফ্রিকার দুই ব্যাটারের ব্যাটে সেঞ্চুরি উঠে আসে। কুইন্টন ডি কক, ভ্যান ডার ডুসেন। প্রথম ২০ ওভারে স্বাভাবিক খেলা খেললেও, এরপর বেশ আক্রমণাত্মক ব্যাট করে ৩৫৭ রানের সংগ্রহ তোলে দলটি। জবাবে খেলতে নেমে নিউজিল্যান্ড কোনো প্রতিরোধ দেখাতে পারেনি। অসহায় এক নিবেদনে গ্লেন ফিলিপসের ৬০ রানের সর্বোচ্চ সম্বল নিয়ে দলীয় রানের চাকা থামে ১৬৭ রানে। বড় পরাজয়ের মুখ দেখতে হলো দারুণভাবে টুর্নামেন্ট শুরু করা দলটির।
৩৫৮ রানের পাহাড় সমান রান নিয়ে নিউজিল্যান্ড যেন আকূল পাথারে গিয়ে পড়ে। একটা সাবলীল জুটির দেখা পাওয়া মুশকিল হয়ে যাচ্ছিল তাঁদের ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় ওভারেই মার্কো জানসেনের শিকার হন ডেভন কনওয়ে। উইল ইয়াং ও রাচিন রবীন্দ্র মিলে শুরুর ধাক্কা কাটানোর যে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তাও টেকেনি বেশিক্ষণ। জানসেনের শিকার হয়েই রাচিনের ফেরাতে, ইনিংস-সর্বোচ্চ ৩৭ রানের জুটির সেখানেই সমাপ্তি। জানসেন পরবর্তীতে আরও এক উইকেট পেয়ে ৩ উইকেট পূরণ করেছেন।
পরের ব্যাটারদের মধ্যে ড্যারিল মিচেল কিছুটা সুস্থির ছিলেন। তাঁর ইনিংসও বড় হয়নি, ৩০ বল খেলে ২৪ রানের সেই ইনিংসে ফাটল ধরিয়েছেন কেশভ মহারাজ। মহারাজের শুরু সেখান থেকেই। এরপর একে একে তুলেছেন মিচেল স্যান্টনার, জেমস নিশাম ও ট্রেন্ট বোল্ট এর উইকেট। নিশামকে যে ডেলিভারিতে বোল্ড করেছেন, তা এক ‘বিউটি’ ছাড়া কিছু ছিল না। আর মহারাজের এই চারে মিচেল একাই ছিলেন ডাবল-ডিজিট, বাকিরা সবাই এক ডিজিটের যাত্রী।
তবে এর আগে গ্লেন ফিলিপসে কথা আলাদা করে বলতে হয়। একপাশ আগলে হালটা ধরে রেখেছিলেন শেষ উইকেটে ম্যাট হেনরি নামা পর্যন্ত। তবে তাঁর পতনেই অবশ্য সর্বশেষ উইকেটটিও হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের একমাত্র ৫০ ছাড়ানো ইনিংস এসেছে ফিলিপসের ব্যাট থেকে। খেলেছেন ৫০ বলে ৬০ রানের ইনিংস।
আর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থেমেছে ১৬৭ রানে।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নামা সাউথ আফ্রিকা নিজেদের বড় ইনিংস খেলার অভ্যাসেই ফিরে যায়। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার সঙ্গী হিসেবে আসা কুইন্টন ডি ককের ব্যাটে আসে আরেকটি সেঞ্চুরি। এই নিয়ে বিশ্বকাপে ডি ককের সেঞ্চুরি সংখ্যা চার। এমন দিনে বাভুমা অবশ্য নিজেকে খুব একটা উজ্জ্বল দেখাতে পারেনি। ট্রেন্ট বোল্টের ডেলিভারিতে কপাল পুড়েছে ২৪ রানে।
ভ্যান ডার ডুসেন যেন যোগ্য সঙ্গী হলেন ডি ককের। দলীয় ১০০ এসেছে ২০ ওভার শেষ করেই। তবে এরপরেই কুইক-ফায়ার ব্যাটিং যাকে বলে, তাই শুরু করলেন দুজনে। ২৯ ওভারের মধ্যেই পেরিয়ে গেল ১৫০ রান। ডুসেন ও ডি কক দুজনেই অর্ধ শতক পেরিয়েছেন, ডি কক তখন ছুটছেন সেঞ্চুরির পিছনে।
এরপর সাউথ আফ্রিকার রান বেড়েছে বারুদের মতো। ডি ককের সেঞ্চুরি এসেছে ১০৩ বলে। এই ওপেনার যখন ১১৪ রানে ফিরেছেন তখন দলীয় রান ২৩৮। ৪১ ওভারের খেলার চলাকালীন সময়ে প্রোটিয়ারা ২৫০ রান ছাড়িয়ে যায়। উপরে নামা ডেভিড মিলারের সাথে ডুসেনের ৪৩ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়ে ওঠে। ডুসেনের ব্যাটেও শতক এসে ঠেকল। সাউথ আফ্রিকার খাতায় ৩০০ এল ৪৬তম ওভারের খেলা যখন চলছে।
সাউদির ডেলিভারিতে বোল্ড হওয়ার আগে ডুসেনের ব্যাটে এসেছে ১১৮ বলে ১৩৩ রান। মিলার ৩০ বলে ৫৩ করে শেষ ওভারের পঞ্চম বলে ফিরে যান। তখন ৭ বলে ১৫ রান করে ক্রিজে ছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন, আর শেষ বলে সুযোগ পেয়ে নতুন ব্যাটার এইডেন মার্করাম ছয় হাঁকিয়ে দেন।
৫০ ওভার খেলে সাউথ আফ্রিকার স্কোর গিয়ে থামে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রানে।