রানের চাপে পিষ্ট হয়ে ইন্দোরে পরাজিত অজিরা

ভারত অস্ট্রেলিয়া
Vinkmag ad

ইন্দোরে ভারতের পাহাড়সম রানের নিচে চাপা পড়ে থাকল অস্ট্রেলিয়া দল। দুই ব্যাটারের শতকে রান গিয়ে ঠেকল ৪০০ এর দ্বারপ্রান্তে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিংয়ের মাঝে বৃষ্টির বাঁধায় রান ও ওভার কমে আসে। ৩৩ ওভারে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩১৭ রান। কিন্তু সব উইকেট হারিয়ে কেবল ২১৭ রান তুলতে পারে অজিরা। ফলে ৯৯ রানের পরাজয়ে প্রথম ওয়ানডে’র পর দ্বিতীয় ওয়ানডে’তেও একই ফলাফল নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সফরকারীদের। বিশ্বকাপের ঠিক আগে কী একটু চাপেই তবে অস্ট্রেলিয়া?

সুরিয়াকুমার যাদবের ৩৭ বলে ৭২ রানের ইনিংসে ভারতের ব্যাটিং ইউনিটের শেষ সৌন্দর্য লেখা হয়েছিল। এর আগে এসেছে দুই সেঞ্চুরি। সেসব শ্রেয়াস আইয়ার ও শুবমান গিলের ব্যাট থেকে। ৩১ টি চার আর ১৮ টি ছয়ে ইনিংস গড়েছিল ভারতের ব্যাটসম্যানরা। ৫০ ওভার ব্যাট করে সংগ্রহ করেছিল ৩৯৯ টি রান। তবে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা নিজেদের প্রতি সুবিচার করেনি। বৃষ্টি পূর্ব ও পরবর্তী সময়ের ডিএলস মেথডে কমে আসা ওভার ও রানেও পেরে উঠতে পারেনি অজিরা। ৯৯ রানে পরাজিত হতে হয়েছে তাঁদের।

৪০০ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ান শিবিরে আঘাত হানে প্রসিদ কৃষ্ণা। জাসপ্রীত বুমরাহ’র বদলে একাদশে আসা এই বোলার দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে ম্যাথিউ শর্ট ও স্টিভেন স্মিথের উইকেট পকেটে পুরে নেন। বড় লক্ষ্যমাত্রায় শুরুতে উইকেট হারানোয় কিছুটা বিপাকে পড়তেই হয় সফরকারীদের।

ডেভিড ওয়ার্নার ও মারনাস লাবুশেইন মিলে যখন ইনিংস গড়ার চেষ্টায়, তখন নবম ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৬ রান থাকা অবস্থায় বৃষ্টি নামে ইন্দোরের মাঠে। লম্বা সময় বৃষ্টি চলার পর অস্ট্রেলিয়ার জন্য লক্ষ্যমাত্রা নেমে আসে ৩১৭ রানে, যা ভেদ করতে হবে ৩৩ ওভারে। বেশ কঠিন। এরমধ্যে ১৩ ওভারে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ডেলিভারিতে সরাসরি বোল্ড হলেন লাবুশেইন, ২৭ রানে।

ওয়ার্নারের সঙ্গী হলেন জস ইংলিস। অশ্বিনের ওভারে ওয়ার্নার নিজের ভিন্ন এক ‘স্কিল’ দেখালেন। বাঁহাতি অবস্থা থেকে ডানহাতি রূপ ধারণ করলেন। অবশ্য টিকতে পারেননি, লেগ বিফোরের শিকার হয়ে এই বোলারের ডেলিভারিতেই ফিরে গেছেন। পরবর্তী ব্যাটারদের মধ্যে শন অ্যাবট মেরেকেটে বেশ চেষ্টা করেছিলেন। ৩৬ বলে ৫৪ রানের এক দারুণ ইনিংস খেললেন। শেষদিকে জশ হ্যাজেলউডের ব্যাট থেলে ১৬ বলে ২৩ রান আসে। এই বিশাল লক্ষ্য পেরোতে বাকিরা আর তেমন ভূমিকা রাখতে পারেননি। ফলে ২৮.২ ওভারে ২১৭ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া দল।

ভারতীয় বোলারদের পক্ষে, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা ৩ টি করে উইকেট নিয়েছেন।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নামা ভারত রূপকথা রচনা করল যেন বিশ্বকাপের আগে। রুতুরাজ গায়কোয়ার শুধু ফিরেছেন দলীয় ১৬ রানে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গিল-আইয়ার মিলে গড়েন ২০০ রানের জুটি, ১৬৪ বলে। অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা লোকেশ রাহুলের ব্যাট থেকে আসে ৫০ রানের ইনিংস। ভারতীয় দলের মিডল অর্ডার নিয়ে যে চিন্তা ছিল, তা হয়ত বিশ্বকাপ সামনে রেখে অনেকটা দূর হয়ে গেছে। রাহুল, আইয়ার দুজনের ব্যাটেই রানের ফুলঝুরি। গিল ফিরেছিলেন ৯৭ বলে ১০৪ করে। অন্যদিকে আইয়ার ৯০ বলে ১০৫ করে। যা করার করে দিয়েই দুই ব্যাটার ফিরে গেছেন মাঠের বাইরে।

‘স্পেশাল’ হয়ে আছে সুরিয়াকুমারের ইনিংস। বিশ্বকাপের দলে আছেন। তা নিয়ে নানা আলোচনাও আছে। এই ব্যাটারের ওডিআই রেকর্ড যে তেমন ভালো নয়৷ কিন্তু আগের ম্যাচ, এই ম্যাচ-সহ নিজেকে প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে আছেন যেন তিনি। ক্যামেরন গ্রিনের চার বলে তো চার ছক্কা’ই হাঁকিয়ে বসেছেন ৪৪তম ওভারে। ২৪ বলে পেয়েছেন হাফ সেঞ্চুরি। অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৭২ রান করে। এমনই রূপকথা ছিল আজ ভারতীয় ব্যাটিংয়ে। ফলে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৯৯ রানের সংগ্রহ তৈরি করা খুব কঠিন কিছু হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের পক্ষে, সর্বোচ্চ ২ উইকেট পেয়েছেন ক্যামেরন গ্রিন। হ্যাজেলউড-জাম্পা-অ্যাবট; সবাই ১ টি করে উইকেট নিয়েছেন।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

এশিয়ান গেমস: ভারতের চোখ গোল্ডে, বাংলাদেশের ব্রোঞ্জ

Read Next

‘আমি বেশ ভাগ্যবান ছিলাম যে বাংলাদেশ আমাকে ফিরিয়ে আনে’

Total
0
Share