আফগানিস্তানের স্বপ্নভঙ্গ, সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কা
Vinkmag ad

আফগানদের কাছে সুযোগ এসেছিল। অথবা নিজেরাই তা তৈরি করে নিয়েছিল। যে সমীকরণে ২৮২ রানের লক্ষ্যমাত্রা পেরোতে হবে, সেটার নাকের ডগা দিয়ে ঘুরে গিয়ে ম্যাচটাই হেরে বসল দলটি। দুর্ভাগ্য বোধহয় একেই বলে! ম্যাচ জিতে শ্রীলঙ্কা খেলছে সুপার ফোর। আফগানিস্তান যোগ্যতা অর্জন করত যদি ফজলহক ফারুকি একটি সিঙ্গেল নেন এবং ৩৮তম ওভারের বাকি বলে রশিদ খান বাউন্ডারি মারতেন। আফগানিস্তানের একটি বিশাল ভুল হিসাব যা তাদের দীর্ঘকাল ধরে চিমটি দেবে!

দারুণ এক ক্রিকেট ম্যাচ বললে ভুল হবে কি না! একে আসলে ব্যাখ্যা করা যায় না। আফগানদের জন্য ২৯২ রানের লক্ষ্যমাত্রা, সুপার ফোরে যেতে হলে পেরোতে হবে ৩৭.১ ওভারে। সেই ম্যাচে সমীকরণ এমন দাঁড়ায় যে, কোয়ালিফাই করতে হলে প্রয়োজন হবে ১ বলে ৩ রান। এখানে হেরে যায় আফগানরা। মুজিব-উর-রহমান ক্যাচ তুলে দিলে আর কোয়ালিফাই করা হয়ে ওঠেনা দলটির। ফজল হক ফারুকীর শেষ উইকেটটিও যখন ফেলে দিলেন ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ম্যাচটিও আর জেতা হলো না আফগানদের। যুদ্ধ করেও ২ রানের পরাজয়। সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা৷

আফগানদের জিততে হলে লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ২৯২ রান। সুপার ফোরে জেতে সমীকরণ বলে, ৩৭.১ ওভারে আফগানিস্তানকে এই লক্ষ্যমাত্রা পেরোতে হবে। শুরুটা অবশ্য লঙ্কানদের মতো ভালো হয়নি আফগানদের। ভরসা করা যায় এমন ব্যাটার, রহমানুল্লাহ গুরবাজ, তিনি ফিরেছেন মাত্র ৪ রানে। বাংলাদেশের সাথে দারুণ পারফর্ম করা ইব্রাহিম জাদরান ফিরলেন মাত্র ৭ রানে। দু’টি উইকেটই নিয়েছেন কাসুন রাজিথা।

এদিন ৩ নম্বরে নেমেছিলেন গুলবাদিন নাইব। পরিকল্পনা বড় শট খেলানোর। নাইব ১৬ বলে ২২ রানের বেশি করতে পারেননি। দলীয় ৫০ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানরা। সেসময় দলের হাল ধরেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি ও রমত শাহ। দুজনের জুটি অর্ধশতক ছাড়িয়ে, ৭১ রানে থামে। রহমত ৪৫ রানে ফিরলেও, অধিনায়ক ছিলেন।

এবার মোহাম্মদ নবীকে সাথে নিয়ে ৮০ রানের জুটি গড়েন হাশমতউল্লাহ। যেখানে নবীর রান ৩২ বলে ৬৫। ছিল ৬ টি চারের মার, ৫ টি ছয়ের মার। এই দারুণ ইনিংস, আশাবাদী করে তোলে আফগানদের। নবী ফিরলে করিম জানাত ও হাশমতউল্লাহ মিলে আরও ৩৩ রান নিয়ে আসেন দলের জন্য। দলীয় ২৩৪ রানে করিম ফেরেন, তখন ৩২ ওভারের খেলা মাত্র শুরু হয়েছে। করিমের পরপরই হাশমতউল্লাহও ৬৬ বলে ৫৯ রানে ফিরলে কিছুটা সমস্যা মনে হয়েছিল আফগানদের জন্য।

তবে তা হতে দেয়নি নাজিবউল্লাহ জাদরান ও রশিদ খান। অসাধারণ ব্যাটিং করেন জাদরান। সঙ্গ দেন রশিদ। জাদরান ১৫ বলে ২৩ রান করে ফিরছেন, আফগানদের কোয়ালিফাই করতে প্রয়োজন দাঁড়ায় ৮ বলে ১৬ রানের৷ ক্রিজে তখন মুজিব-উর-রহমান ও রশিদ খান। কোয়ালিফাই করতে শেষ ৭ বলে দরকার ১৫ টি রান। নতুন ওভারের প্রথম দুই বল ডট দিয়ে, তৃতীয় বলে চার মারেন রশিদ। চতুর্থ বল ডট খেলে, আবার পঞ্চম বলে চারের দেখা মেলে রশিদের ব্যাট থেকে। শেষ বলেও ইনসাইড এজ থেকে চার আদায় করে নেন এই ব্যাটার।

সমীকরণ, সুপার ফোর খেলতে ১ বলে ৩ রান প্রয়োজন আফগানদের। স্ট্রাইক প্রান্তে মুজিব। সেই বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন এই ব্যাটার। ফলে আফগানদের সুপার ফোরের স্বপ্ন অধরা রয়ে যায়। একই ওভারে শেষ উইকেট হিসেবে ফজল হক ফারুকী কোনো রান আদায় না কিরে লেগ বিফোরের শিকার হলে ২ রানের পরাজয় দেখে আফগানিস্তান।

টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দুই দলের জন্যই ছিল সুপার ফোরে ওঠার লড়াই। উদ্ধোধনী জুটি জানান দিচ্ছিল, লঙ্কানদের প্রস্তুতি সর্বোচ্চ। দিমুথ করুনারত্নে যখন ৩২ রানে ফিরলেন, দলের রান তখন ১০.২ ওভারে ৬৩। পাথুম নিশানকাও করুনারত্নের পথেই ফিরলেন, হলোনা অর্ধশতক; ৪১ রানে গুলবাদিনের নাইবের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন। সাদিরা সামারাবিক্রমাও থাকতে পারলেননা, নাইবের বলেই লঙ্কানদের প্রথম ৩ উইকেট পতন।

এর পরের জুটিই পথ দেখায় আয়োজকদের। ঘরের মাঠে কুশাল মেন্ডিসের সাথে চারিথ আসালাঙ্কার জুটি শতক ছাড়িয়ে যায়। আসালাঙ্কা ৩৬ রানে ফিরলে, ১০২ রানের জুটি ভাঙ্গে এই ব্যাটার-দ্বয়ের। মেন্ডিস তখনো ছিলেন। পরে আউট হয়েছেন নব্বইয়ের ঘরে, ৮৪ বলে ৯২ রানে। শেষ দিকে মাহিশ থিকশানা ও দুনিথ ওয়েলালাগের দারুণ এক ফিনিশিং জুটি, শ্রীলঙ্কাকে ভালো সংগ্রহ এনে দেয়। দুজনের ৬৩ বলে ৬৪ রানের যে জুটি, সেখানে থিকশানা ২৪ বলে ২৮ রান এবং ওয়েলালাগে ৩৯ বলে ৩৩ রান যুক্ত করেন। ফলে মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০ ওভার খেলে, ৮ উইকেট হারিয়ে ২৯১ রান।

আফগান বোলারদের পক্ষে, গুলবাদিন নাইব একাই নেন ৪ উইকেট। রশিদ খান ২ টি ও মুজিব-উর-রহমান নেন ১ টি উইকেট।

শ্রীলঙ্কার বোলারদের পক্ষে, কাসুন রাজিথা নিয়েছেন ৪ টি উইকেট, দুনিথ ওয়েলালাগে ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২ টি, মাহিশ থিকশানা ও মাথিশা পাথিরানা পেয়েছেন ১ টি করে উইকেট।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

বাংলাদেশের বিপক্ষে যে একাদশ নিয়ে নামবে পাকিস্তান

Read Next

বিপিএলে নতুন ঠিকানায় সাকিব

Total
0
Share