

এশিয়া কাপে আজ হাইভোল্টেজ ‘নাগিন’ ডার্বি! ফুটবল বিশ্বে কতো কতো ডার্বির কথায় শোনা যায়, কিন্তু ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেটে ডার্বি… কেউ হয়তো ভাবেনওনি। নিদাহাস থেকে বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা ম্যাচ মানেই এই সেলিব্রেশন, ট্রেডমার্ক ‘নাগিন ড্যান্স‘। কিন্তু এবার বদলেছে দু‘দলেরই ভাবনা, একে অপরকে করছে সমীহ। উদযাপনের লড়াইয়ে নয় বরং ভালো খেলেই ম্যাচ জয় নিশ্চিত করতে চায়।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ‘নাগিন‘ এর আগমন ঘটে ২০১৮ এর নিদাহাস ট্রফিতে। আবিষ্কারক বাংলাদেশের স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপু। কিন্তু তিনি তো দীর্ঘসময় ধরেই জাতীয় দলের বাইরে। তাহলে আজ কে দেবে নাগিন ড্যান্স? শ্রীলঙ্কার চামিকা করুণারত্নে অবশ্য এই সেলিব্রেশনের দক্ষতা ভালো ভাবে অর্জন করেছেন। কিন্তু তিনিও তো ডাক পাননি শ্রীলঙ্কার এশিয়া কাপ মিশনে।
২০১৮ নিদাহাস ট্রফি থেকে শ্রীলঙ্কা ছিটকে যাওয়ার পর বাংলাদেশের নাগিন সেলিব্রেশন। এরপর বাংলাদেশ সফরে গিয়ে টি–টোয়েন্টি সিরিজ জিতে এমন সেলিব্রেশন করেছিলেন শ্রীলঙ্কার দানুশকা গুনাথিলাকা। ২০২২ এশিয়া কাপ থেকে বাংলাদেশ ছিটকে যাওয়ার পর চামিকা করুণারত্নের ফের নাগিন সেলিব্রেশন। কারণও আছে বেশ, দীর্ঘ চার বছর পর বাংলাদেশকে হারিয়ে নিখুঁত প্রতিশোধ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। দরজায় কড়া নাড়ছে আরও এক বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা লড়াই। এবারও উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত দু‘দল।
ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় গণমাধ্যম ইএসপিএন ক্রিকইনফোর মতে, আজ এশিয়া কাপে ‘নাগিন ডার্বি’। তবে দুই দলের অধিনায়ক অবশ্য সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কার ভাতৃত্বের গল্প শোনালেন। তারা চান না চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শব্দটা জুড়ে যাক এই দুই দলের সঙ্গে। ম্যাচে ছড়িয়ে দিতে চান শান্তির বার্তা।
এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ–শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ বিকাল ৩:৩০ মিনিটে শুরু। ঘরের মাঠে নামতে চলেছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ– শ্রীলঙ্কার ২২ গজের লড়াই অন্য মাত্রা পেয়েছে।
কেমন হতে পারে বাংলাদেশের সেরা একাদশ–
তানজিদ হাসান তামিম, মোহাম্মদ নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন ধ্রুব, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম।
এশিয়া কাপ আসর মাঠে গড়ানোর আগেই চোট–আঘাতে জর্জরিত দুই দল। একের পর এক ক্রিকেটার ছিটকে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের নেই তিন তারকা ক্রিকেটার তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও এবাদত হোসেন চৌধুরী। বিপরীতে শ্রীলঙ্কার শিবিরে চোটের প্রভাব আরও ভয়াবহ। সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার খেলা হবে না এশিয়া কাপ। নেই লাহিরু কুমারা, দুশমান্থ চামিরা, দিলশান মাদুশাঙ্কা।
এসব ছাপিয়ে এই ম্যাচে নজর থাকবে তরুণ ক্রিকেটারদের উপর। অভিষেক দিয়েই ওপেন করাবে বাংলাদেশ, তানজিদ হাসান তামিমের নাম বাংলাদেশের সেরা একাদশে প্রত্যাশিতই। তার সঙ্গী হিসেবে দেখা যেতে পারে মোহাম্মদ নাইম শেখকে। তিন নম্বরে অধিনায়ক সাকিবের ফেরার সম্ভাবনা কম, তাহলে এই পজিশন নাজমুল হোসেন শান্ত‘র দখলেই থাকবে।
এরপর নামবেন সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম। এই দুজনেই বাংলাদেশের মূল ভরসা। তাদের থেকে অভিজ্ঞ ও দক্ষতা সম্পন্ন ব্যাটার এই স্কোয়াডে নেই। উদীয়মান ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়কে অবশ্য ব্যাট হাতে দেখা যাবে মুশফিকের আগেই। আলোচিত সাত নম্বর পজিশনে দেখা যাবে মেহেদী হাসান মিরাজকে। টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট স্পিনার একজন বেশি খেলালে জায়গা পাবেন নাসুম আহমেদ। আর তার সুযোগ না হলে একাদশে ঢুকে যাবেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। পেস আক্রমণের নেতৃত্বে তাসকিন আহমেদ। তার সঙ্গী হবেন শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলেতে মাত্র একটি ওডিআই খেলেছে বাংলাদেশ, যেটি জিতেছে। এই সুখস্মৃতি নিয়েই এবার পাল্লেকেলেতে নামছে টিম টাইগার্স। এলপিএল চলাকালীন, বেশিরভাগ পিচ বেশ দ্বি-গতির ছিল, ব্যতিক্রম ছিল না পাল্লেকেলেও। তবে ফ্লাডলাইটের আলোতে ব্যাটিং দল পায় সুবিধা। এসব ছাপিয়ে এই ম্যাচে বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।