

এত বেশি ব্যথা ও যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে, একসময় মনে হয়েছে ক্যারিয়ার বোধহয় এখানেই শেষ। শ্রেয়াস আইয়ার! এই ভারতীয় ক্রিকেটার দীর্ঘ ৫ মাস পর চোট কাটিয়ে ফিরেছেন। একেবারে এশিয়া কাপের দলে। একই সাথে লোকেশ রাহুলও ফিরেছেন। মূলত পিঠের চোট। যেতে হয়েছে ছুরি-কাঁচির মধ্যে দিয়েও। আবারো মাঠে ফিরে নিজের সেই অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন আইয়ার।
এ বছর মার্চে অস্ট্রেলিয়ার সাথে ম্যাচ খেলতে গিয়ে পিঠের চোট নতুন করে দেখা দেয়। আইয়ার তখনই অনুভব করেন, হচ্ছে না। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ তো শেষ, সামনের আইপিএল, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ– এসবও খেলা হচ্ছে না তাঁর। এরপর তো আরো দু’টি সিরিজ খেলল ভারত; ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সেখানেও দেখা যায়নি আইয়ারকে। তখন তিনি ন্যাশনাল ক্রিকেট একাডেমিতে (এনসিএ) পুনর্বাসন প্রক্রিয়াতে।
ভারতের মিডল-অর্ডারে একরকম ভরসার নাম ছিলেন আইয়ার। ওডিআই ক্যারিয়ারে যতটুকু খেলেছেন, ভালো করেছেন। সেই মিডল-অর্ডার নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় ভারতীয় বোর্ডকে। বিশেষ করে এশিয়া কাপ এবং পরবর্তী বিশ্বকাপ নিয়ে। তবে শেষ পর্যন্ত আইয়ার ফিরেছেন দলে। ফিরেছেন মিডল-অর্ডারের আরেক নাম লোকেশ রাহুলও। তিনিও ছিলেন ইনজুরিতে।
বিসিসিআই টিভিতে আইয়ার বলেন,
“সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, আমার স্নায়ু সংকোচন হয়েছিল। এটি মূলত, স্লিপ ডিস্ক, যা স্নায়ুকে সংকুচিত করেছিল। এবং ব্যথা আমার পায়ের আঙ্গুলের নিচে চলে যাচ্ছিল, তখন সেটা ছিল ভয়াবহ।”
নিজের কঠিন সময়গুলো এভাবে বর্ণনা করেন আইয়ার। তিনি বলেন,
“আমি অসহ্য যন্ত্রণায় ছিলাম। আমি কীসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, সে ব্যাপারে সঠিকভাবে নিজেকে প্রকাশ করতে পারছিলামনা।”
“এটা একেবারে স্যাচুরেশন অবস্থায় চলে গেল, যেখানে আমি বুঝতে পারছিলাম যে, ‘ঠিক আছে, এখন আমাকে অস্ত্রোপচার করতে হবে।’ এবং ফিজিও ও বিশেষজ্ঞরা আমাকে বলছিলেন, এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি ছুরির নিচে যান এবং এটা সম্পন্ন করুন।”
এতদিন পর ফিরে কেমন বোধ করছেন এই ক্রিকেটার? আইয়ার বলেন,
“আনন্দিত বোধ করছি। সত্যি বলতে, দলে যোগ দিতে পেরে এবং চারপাশে হাসিখুশি মুখ দেখতে। সমস্ত খেলোয়াড়দের ভালো ব্যবহারগুলো দারুণ ছিল। আমি ফিরে আসতে পেরে রোমাঞ্চিত।”
আইয়ার ভারতের হয়ে ৪২ টি ওডিআই ম্যাচ খেলেছেন। ৩৮ ইনিংসে ব্যাট করে ৪৬.৬০ গড়ে মোট ১৬৩১ রান সংগ্রহ করেছেন। ১৪ ফিফটি ও ২ সেঞ্চুরি, পাশাপাশি সর্বোচ্চ সংগ্রহ ১১৩* রান। সবচেয়ে বেশিবার ব্যাট করেছেন ৪ নম্বর পজিশনে। ২০ বার এই পজিশনে ব্যাট করে ৪৭.৩৫ গড়ে ৮০৫ রান সংগ্রহ করেছেন এই ব্যাটার।