

আগের ম্যাচে ছিল ভরাডুবি, সেটা অবশ্য ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে ভালোই করেছিল আফগানিস্তান। ব্যাটিংয়ের ভরাডুবি ছিল চোখে পড়ার মত, ৫৯ রানে অল আউট। আজ দ্বিতীয় ওডিআইতে একেবারেই অন্য এক আফগানদের দেখল সবাই। ব্যাটিংয়ে দারুণ করেও অবশ্য জয় তুলে নিতে পারেনি তারা।
আফগানদের ওপেনিং জুটিতেই আসে ২২৭ রান। রহমানউল্লাহ গুরবাজ সেঞ্চুরি পেরিয়ে ১৫১ পর্যন্ত নিয়ে যান নিজের রান। ইব্রাহিম জাদরান সেঞ্চুরি পাননি, ফিরেছেন ৮০ রানে। কিন্তু আফগানদের দেওয়া ৩০০ রানের লক্ষ্য পেরিয়ে নিজেদের দিকে জয়ের পাল্লা টেনে নিয়ে এসেছেন পাকিস্তানি ব্যাটাররা। ভূমিকা ছিল অবশ্য আফগান বোলারদেরও। শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটে জিতেছে সফরকারী দল।
হাম্বানটোটায় দ্বিতীয় ওডিআই ম্যাচে পাকিস্তানের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০১ রানের। ফখর জামান ও ইমাম-উল-হক মিলে ৫২ রান পর্যন্ত নিয়ে গেলে, ফখর ফেরেন ফজল হক ফারুকীর বলে বোল্ড হয়ে। ইমামের সাথে অবশ্য বাবর আজমের জুটি অনেকটাই নিশ্চিন্ত করে দেয় পাকিস্তান দলকে। ১১৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার মিলে। ৫৩ রানে বাবর ফিরলেও, ইমাম ছিলেন।
মোহাম্মদ রিজওয়ান, আগা সালমান তাঁরা দলের জন্য তেমন রান যোগ করতে পারেননি। পারেননি উসামা মীরও। দলীয় ২১১ রানে ইমাম ফিরলেন ৯০ এর ঘরে। ১০৫ বলে ৯১ করা ইমামের দারুণ ইনিংস শতক বঞ্চিত হয়।
শাদাব খান ও ইফতিখার আহমেদ যখন ক্রিজে ছিলেন, তাঁদের স্লো ধরনের খেলায় কিছুটা হেলে পড়ে পাকিস্তানের খেলা। বিপত্তি বাঁধে যখন ১২ বলে আর ২৭ রান প্রয়োজন। সেসময় আব্দুল রহমান প্রথম চার বল করেন, দেননি কোনো বাউন্ডারি বা ওভার বাউন্ডারি৷ শেষ দুই বল দিলে ফুল-টস ধরনের। পঞ্চম বলে চার ও ষষ্ঠ বলে ছয় হাঁকালে, ম্যাচ অনেকটাই ঘুরে যায় সফরকারী দলের দিকে।
শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। নাটকীয়তা তখনো বাকি ছিল। ফারুকী প্রথম বল করতে এসে নন-স্ট্রাইক এন্ডে থাকা শাদাবকে মান-কাড আউট করেন। রিপ্লে দেখে আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান। তবে এতে খুব একটা অসুবিধায় পড়তে হয়নি পাকিস্তান দলের। নাসিম শাহ’র ব্যাট থেকে চার আসে পরের বলেই। শেষ ২ বলে যখন ৩ রান প্রয়োজন, নাসিমের ব্যাট থেকে আসে আরেকটি চার। নাসিম তাঁর ব্যাটিং ‘ক্যারিশমা’ প্রমাণ করে যাচ্ছেন বারবার। আর এতেই ১ বল বাকি থাকতেই ম্যাচটি জিতে নেয় পাকিস্তান। উল্লাসে মাতে নাসিম-সহ পুরো পাকিস্তান দল।
এর আগে টসে জিতে পাকিস্তানি পেসারদের ভালোই মোকাবিলা করেছেন দুই আফগান ওপেনার। ৭২ বলে নিজের অর্ধ শতক পূরণ করেছেন গুরবাজ। সেখান থেকে আর ৫০ বল লেগেছে তাঁর শতক পূরণ করতে। হারিস রউফ; যিনি কিনা আগের ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছেন, সেই রউফের এক ওভারে চার বলে চারটি চার মারলেন গুরবাজ। এতেই বোঝা যায় আগের ম্যাচের সে ধস কাটিয়ে উঠে কতটা শক্ত জায়গায় ছিলেন তাঁরা। অন্যদিকে জাদরানও পাল্লা দিয়ে খেলছিলেন গুরবাজের সাথে। ৭২ বলে আসে তাঁর চতুর্থ ওডিআই ফিফটি। ৬ চারে ও ২ ছয়ে ১০১ বলে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
দুজন মিলে ২২৭ রান পর্যন্ত জুটি গড়ায়। জাদরান ফিরলে এই জুটি ভাঙে। তবে ততক্ষণে যতটুকু ভীত দরকার ছিল, তা হয়েছে।
পরবর্তীতে মোহাম্মদ নবী ২৯ রান যোগ করেন দলের খাতায়। অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদি যোগ করেন ১৫ রান। ফলে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩০০ রানে স্বাগতিক দলের ইনিংস।
পাকিস্তানের বোলারদের পক্ষে, শাহীন শাহ আফ্রিদি ২ উইকেট নেন। নাসিম শাহ ও উসামা মীর নেন ১ টি করে উইকেট।
আফগানিস্তানের বোলারদের পক্ষে, ফজল হক ফারুকী নেন ৩ উইকেট। মোহাম্মদ নবি পেয়েছেন ২ উইকেট। মুজিব-উর-রহমান ও আব্দুল রহমান পেয়েছেন ১ টি করে উইকেট।
সিরিজের শেষ ওডিআই অনুষ্ঠিত হবে কলম্বোতে, ২৬ আগস্ট।