

পাকিস্তানি ব্যাটারদের যেভাবে পাকড়াও করেছিলেন আফগান বোলাররা তাতে আফগানদের পক্ষেই ছিল সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচটি। কিন্তু ২০২ রানের লক্ষ্য মোকাবিলা করতে গিয়ে যেন দিশেহারা হয়ে পড়ল স্বাগতিক দেশের ব্যাটিং লাইন-আপ। মাত্র ৫৯ রানেই গুটিয়ে গেল আফগানিস্তান। হারিস রউফ একাই নিলেন ৫ উইকেট। ফলে ১৪২ রানের বড় জয়ে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে থাকল পাকিস্তান।
পাকিস্তান অধিনায়ক টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায় ম্যাচ। সেখানকার উইকেট সাধারণত ব্যাটিং সহায়ক। তবে আফগানদের স্পিন তো বিশ্ব নন্দিত, তা ভুলে গেলে চলবে কেন! সেই স্পিনের জাদুতেই কুপোকাত হতে থাকে পাকিস্তানের ব্যাটিং। তবে প্রথম আঘাত আসে পেসার ফজল হক ফারুকীর কাছ থেকে। ফখর জামানকে দলীয় ৩ রানে ফজল ফেরানোর পরপরই অধিনায়কের বাবর আজমের উইকেটের পতন ঘটান স্পিনার মুজিব-উর-রহমান। ফলে দলীয় রানেই ২ উইকেটের পতন দেখে পাকিস্তান দল।
মোহাম্মদ রিজওয়ান নামের ৪ নম্বরে। এর আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজে ৫ নম্বরে ব্যাট করেছিলেন এই ব্যাটার। ইঙ্গিত দিতে থাকেন ভাল কিছুর। কিন্তু তা খুব দীর্ঘস্থায়ী হয় না। মুজিবের শিকার হতে হয় রিজওয়ানকেও। এরপর ফর্মের থাকা আগা সালমানও নিজের ব্যাটে সুবিধা করতে পারেননি। ফিরেছেন রশিদ খানের বলে। ফলে দলীয় ৬২ রানেই ৪ উইকেট পড়ে যায় দলটির।
তবে একপাশে তখনো ছিলেন ইমাম-উল-হক। খারাপ বলগুলো বাউন্ডারি ছাড়া করছিলেন। স্পিনারদেরও ভাল মোকাবিলা করছিলেন ব্যাটে। এরমধ্যে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে ফেলেন ইমাম। এরমাঝে আফগান ফিল্ডাররা বেশ কয়েকটি ক্যাচ মিসের মহড়া দেখায়। ইফতিখার আহমেদের সাথে ইমামের প্রথম জুটি দাঁড়ায় ৫০ রানের। এরপর শাদাব খানের সাথে করেন আরো ৪০ রানের জুটি।
ইফতেখারের ৩০, শাদাবের ৩৯ এবং অতি অবশ্যই ইমামের ৬১ রানের উপর ভর করেই ৪৮ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২০১ রানের সংগ্রহ তোলে পাকিস্তান। এর মাঝে নাসিম শাহ’র ব্যাট থেকেও ১৮ টি রান যোগ হয়।
আফগান বোলারদের পক্ষে, মুজিব ৩ উইকেট নেন। মোহাম্মদ নবী ও রশিদ নেন ২ টি করে উইকেট। ফারুকী ও রহমত শাহ নিয়েছেন ১ টি করে উইকেট।
আফগানিস্তানের জন্য লক্ষ্যটা সোজা ছিল। আপাতদৃষ্টিতে তাই মনেহয়। তবে পাকিস্তানের ‘ওয়ার্ল্ড-ক্লাস’ পেস আক্রমণের সামনে এই লক্ষ্যমাত্রা বহু দূরের জিনিস মনে হতে থাকে। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানের প্রথম ৩ উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ৪ রানে। শাহীন শাহ আফ্রিদি পর পর দুই বলে ইব্রাহিম জাদরান ও রহমত শাহ’কে ফেরান। হাশমতউল্লাহ শহীদির উইকেটটি নেন নাসিম শাহ। এই ৩ ব্যাটারের কেউই নিজেদের রানের খাতা খুলতে পারেননি।
একেবারে অসহায় আত্মসমর্পন যাকে বলে। এরপর দৃশ্যপটে আসেন আরেক পেস তারকা হারিস রউফ। ইকরাম আলিখিল দিয়ে শুরু করেন। একে একে রহমানুল্লাহ গুরবাজ, নবী, রশিদ, মুজিবের উইকেট নিয়ে প্রথমবারের মত ৫ উইকেট পাওয়ার স্বাদ অর্জন করেন এই পেসার। এরমধ্যে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ব্যক্তিগত ১৬ রান নিয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠের বাইরে যান। আফগান ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৮ রান করেন গুরবাজ। ২০ তম ওভারের মাথায় রউফের বলে মুজিবের উইকেট পতন ঘটলে ৫৯ রানেই শেষ হয় আফগান ইনিংস। ফলে পাকিস্তানের কাছে ১৪২ রানের বড় জয় ধরা দেয়।
পাকিস্তানের বোলারদের পক্ষে, রউফ একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট। আফ্রিদি নিয়েছেন ২ উইকেট। বাকি ২ উইকেট নিয়েছেন নাসিম ও শাদাব।