

২০২৩ অ্যাশেজ শেষ হয়েছে। বলা হচ্ছে, ‘ওয়ান অব দ্য বেস্ট’ সিরিজ৷ শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডের জয় এবং সিরিজ সমতায় শেষ করা, ব্রডের শেষ দিনে শেষ দুই উইকেট নিজের হাতে নেওয়া– ইত্যাদি বিষয় ছিল। পাশাপাশি সিরিজের সব ম্যাচ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, প্রতিটা সেশনে ম্যাচের ফলাফল বদলের সম্ভাবনা তৈরি– এই বিষয়গুলো এই সিরিজকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।
ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া- দুই দল থেকে অনেক খেলোয়াড়ই দারুণ পারফর্ম করেছে। কাউকে বাদ দিয়ে কাউকে বিচার করা খুব কঠিন কাজ। তবে সম্প্রতি ক্রিকেটের বাইবেল-খ্যাত ‘উইজডেন’ পত্রিকা বাছাই করেছে এবারের অ্যাশেজের সেরা একাদশ।
উইজডেনের চোখে অ্যাশেজের সেরা একাদশ:
উসমান খাজা, জ্যাক ক্রলি, স্টিভ স্মিথ, জো রুট, হ্যারি ব্রুক, বেন স্টোকস (অধিনায়ক), জনি বেয়ারস্টো (উইকেটরক্ষক), ক্রিস ওকস, মিচেল স্টার্ক, মার্ক উড, স্টুয়ার্ট ব্রড
১. উসমান খাজা: তিনি সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। এই সিরিজের আগে ইংল্যান্ডে খাজার গড় ছিল ১৯.৬৬, খেলেছিলেন মাত্র ৬ টেস্ট। এই সিরিজে তাঁর গড় দাঁড়িয়েছে ৪৯.৬, সাথে তুলেছেন ১ সেঞ্চুরি ও ৩ ফিফটি। সর্বমোট রান করেছেন, ৪৯৬। ১২৬৩ টি বলের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি।
২. জ্যাক ক্রলি: অনেকে ধারণা করছিল ক্রলি হবেন, সিরিজের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। তা সিরিজ শুরুর আগেই ধারণা করেছিল লোকে। অ্যাশেজ শুরু হয় ক্রলির ব্যাটে বাউন্ডারি দিয়ে। খেলেছেন ১৮৯ রানের ইনিংস। তার মোট সংগ্রহ ৪৮০ রান।
৩. স্টিভ স্মিথ: লর্ডসে স্মিথ তুলেছেন সেঞ্চুরি। শেষ টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন। বেশ বিবেচনাপ্রসূত স্মিথকে ৩ নাম্বার স্থান দেওয়া হয়েছে৷ বেন ডাকেট বা মইন আলিও এই জায়গা পেতে পারতেন বলে, উইজডেন মনে করে।
৪. জো রুট: শেষ দুই টেস্টে তাড়াহুড়ো শটে আউট না হলে রুটের স্কোর আরো ভালো থাকত। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৮৪ রানে এবং ওভালে ৯১ রানে ফিরেছেন এই ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে এজবাস্টনে হাঁকিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। চার নাম্বার পজিশনে উপযুক্ত হিসেবে তাই তারচেয়ে কেউ নেই। এছাড়াও বোলিংয়েও বেশ কার্যকরী ছিলেন। পুরো সিরিজে তুলেছেন ৭ উইকেট।
৫. হ্যারি ব্রুক: চারবার ফিফটি ছাড়িয়েছেন ব্রুক, পাননি সেঞ্চুরির দেখা। সিরিজের শুরুটা কিছুটা আড়ালে হলেও, ব্রুক ইংল্যান্ডের হয়ে কার্যকরী ব্যাটিং করেছেন। শেষ টেস্টে খেলেছেন ৮৫ রানের ইনিংস।
৬. বেন স্টোকস (অধিনায়ক): অধিনায়কত্ব বেন স্টোকসের কাঁধেই থাকছে। মাঠে তাঁর দারুণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা লক্ষ করা গেছে। পরিস্কার চিন্তাভাবনার উদাহরণ রেখেছেন সবসময়। লর্ডসে ১৫৫ রানের ইনিংস খেলেন স্টোকস। হেডিংলিতে খেলেন ৮০ রানের ইনিংস। সিরিজের শুরুতে বোলিংয়ে খুব সামান্য দেখা গেছে তাঁকে। কিন্তু সবমিলিয়ে মাঠে স্টোকসের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
৭. জনি বেয়ারস্টো (উইকেটরক্ষক): বেয়ারস্টোকেও বিবেচনাপ্রসূত রাখা হয়েছে। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের আগে তাঁর কিপিং নিয়েও যথেষ্ট প্রশ্ন ছিল। তবে শেষ দুই টেস্টে কিপিংয়ে ছিলেন দারুণ। চতুর্থ টেস্টে ব্যাট হাতে খেলেছেন ৯৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। শেষ টেস্টেও ছিল ৭৮ রানের ইনিংস। অ্যালেক্স ক্যারির সাথে তাই তুলনায় আনলে, বেয়ারস্টোকেই রাখতে হয় এখানে।
৮. ক্রিস ওকস: মার্ক উড ও ক্রিস ওকস দুজনেই ছিলেন দারুণ। বলা যায়, ‘ইম্প্যাক্টফুল’ খেলেছেন। শেষ তিন ম্যাচ খেলে দুই ম্যাচেই জয়ী ছিলেন ওকস। নিয়েছেন ১৯ টি উইকেট, করেছেন ৭৯ রান। মিচেল স্টার্কের সাথে ‘প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ’ নির্বাচিত হয়েছেন। সিরিজ সেরা ১৮.১৪ গড়ে বল করেছেন ওকস।
৯. মিচেল স্টার্ক: একমাত্র অস্ট্রেলিয়ান বোলার হিসেবে একাদশে আছেন স্টার্ক। সফরকারী বোলারদের জন্য বেশ কঠিন। যেখানে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা খেলেছেন আক্রমণাত্মক। অজি বোলারদের মধ্যে চারের নিচে কারো ইকোনমি নেই। তবে সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট-শিকারি বোলার স্টার্ক। সংগ্রহ করেছেন ২৩ উইকেট, ব্যটে তুলেছেন ৮২ রান। হয়েছেন ‘প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ।’
১০. মার্ক উড: উডের অন্তর্ভুক্তি ইংল্যান্ডের জন্য দারুণ ছিল। হেডিংলি টেস্টে উডের পেস ও একিউরিসি ছিল দেখার মতো। উড ও ওকস মিলে হেডিংলিতে অসাধারণ পারফর্ম করেছেন। সিরিজে ১৪ টি উইকেট সংগ্রহ করেছেন তিনি।
১১. স্টুয়ার্ট ব্রড: প্যাট কামিন্সের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্রড টিকে গেছেন একাদশে। এজবাস্টনে ব্যাটে-বলে পারফর্ম করা ব্রডকে আলাদা করেছে। ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার করেছেন; ২২ টি। পঞ্চম টেস্টের শেষ দিনে ব্রডের স্পেল ছিল অসাধারণ। উডের হেডিংলি স্পেলের পর এই স্পেলকে ‘বেস্ট’ অব দ্য সিরিজ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে উইজডেন।