

ওভালে চতুর্থ দিন শেষ। দিনের শুরুতে জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড মিলে তুলেছেন ৬ রান। ব্রড ব্যাট হাতে নেমেছিলেন শেষবারের মত। প্রথম ওভার করতে আসলেন মিচেল স্টার্ক। সে ওভারের শেষ বলটা ডিপ মিড উইকেটের উপর দিয়ে ছয় হাঁকিয়ে বসলেন ব্রড। পরের ওভার অ্যান্ডারসন খেলতে গিয়ে টড মার্ফির বলে লেগ বিফোরের শিকার হলে শেষ হয় ইংল্যান্ডের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার জন্য লক্ষ্যমাত্রা দাঁড়ায় ৩৮৪ রান। অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৮ ওভার সুযোগ পায়। এরপর নামে বৃষ্টি। বিনা উইকেটে অজিদের সংগ্রহ ১৩৫ রান। পঞ্চম দিনে জিততে হলে ২৪৯ রান করতে হবে সফরকারীদের।
‘গার্ড অব অনার’ দিয়ে সম্মান। এই সম্মানে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু হয়েছিল আজ। কর্তা স্টুয়ার্ট ব্রড। অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড়রা দাঁড়ালেন দুই পাশে। মাঝ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন ব্রড। শেষবারের মতো ব্যাট হাতে। অপেক্ষমাণ উইকেটে গিয়ে ছয় হাঁকিয়ে বসতেও সময় নিলেননা। স্টার্কের বলে মারা ডিপ মিড উইকেটের সে ছয় হয়ে রইল ব্রডের খাতায় সর্বশেষ রান হিসেবে। থাকলেন অপরাজিতও। ছয় দিয়ে ক্যারিয়ার শেষ করা আর একজন ক্রিকেটার আছেন ইতিহাসে; ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়েন ডেনিয়েল, ১৯৮৪ সালের কথা।
ইংল্যান্ড লক্ষ্যমাত্রা ছুঁড়ল ৩৮৪ রানের। কিছুক্ষণ পর অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস শুরু হলে, ব্রডকে আবারো দেখা গেল বোলিং প্রান্তে। স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ওয়ার্নারের দিকে যখন ব্রড ছুটছেন প্রথম বল করতে, তখন ১৭ বার ওয়ার্নারকে পরাস্ত করে ফেলেছেন এই ইংলিশ বোলার। ১৮- তম বার হয় কি না, সেই আশা নিয়েই শেষবারের মতো ব্রডের এই দৌড়। তবে চতুর্থ দিন শেষ হলেও, অজিদের কোন উইকেট পতন ঘটেনি। অবশ্য মধ্যাহ্ন বিরতির পর ১ ঘণ্টা খেলা যেতেই বৃষ্টির আগমন। আর তাতে আর দিনের খেলা শুরু হয়নি। ফলে বিনা উইকেটেই দিন শেষ করেছে অস্ট্রেলিয়া।
ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাজা যেন নেমেছিলেন দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে। হাতে মোটামুটি দুই দিন সময়। ২০০১ এর পর সিরিজ জেতার এমন সুযোগ আবার কবে আসে, সেই ঝুঁকি বোধহয় নিতে চাননি উদ্বোধনী দুই ব্যাটার। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে বেন স্টোকস করে গেলেন নানারকম চেষ্টা। মার্ক উড বাদে, সবাইকেই কাজে লাগালেন। তবে খাজা-ওয়ার্নার ব্যাট করে গেলেন মাথা গুঁজে। যদি সব ঠিক থাকে ওয়ার্নার নিজের শেষ টেস্ট খেলছেন ইংল্যান্ডে। চাইবেন তো কিছু স্মরণীয় হোক। বড় ইনিংস খেলার পথেই আছেন অবশ্য। খাজাও হাঁটছেন একই পথে।
২৪ ওভার, ৭৫ রান। এমন স্কোর রেখে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল। বিরতি শেষে দুই ব্যাটার অবশ্য আরেকটু গতি বাড়ালেন। রানের চাকা ঘুরতে লাগল সমানতালে। এই জুটি শতক পেরোতে সময় লাগল না। মার্ক উড বোলিংয়ে আসলেন বেশ দেরিতে। ৩০ ওভারের পর। সম্ভবত ইনজুরির কোন ভাবনা ছিল। উডকে দরকার হবে পঞ্চম দিনেও, তেমন চিন্তাও থাকতে পারে স্টোকসের। মঈন আলি অবশ্য ৫ ওভারের বেশি বল করেননি। আলির ইনজুরির সমস্যাও রয়েছে। অ্যান্ডারসন করেছেন ১০ ওভার। এরচেয়ে কম করেছেন জো রুট, ৯ ওভার। ২০০৫ অ্যাশেজের পর ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান এল অস্ট্রেলিয়ার জন্য। দিনশেষে বিনা উইকেটে ১৩৫ রানের সংগ্রহ সফরকারীদের। ওয়ার্নার ৯৯ বলে ৫৫ রানে এবং খাজা ১৩০ বলে ৬৯ রানে অপরাজিত আছেন।
আগামীকাল পঞ্চম ও শেষ দিন। ২০২৩ অ্যাশেজের শেষ দিন। হাতে ১০ উইকেট নিয়ে ২৪৯ রান তুলতে পারবে অস্ট্রেলিয়া নাকি ইংল্যান্ডের হাতে জীবন দিবে অজি ব্যাটারেরা। আবার সম্ভাবনা আছে বৃষ্টিরও। তেমন হলে ড্র-তেও গড়াতে পারে এই টেস্ট। সেক্ষেত্রে ২-১ এ এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়ার ঝুলিতে যাবে এবারের সিরিজ।