

এমন দিনই কাটাতে চায় বোধ হয় ইংল্যান্ড। ‘বাজবল’ এসে মহিমান্বিত হয় যেসব ইনিংসে। প্রায় পুরো দিন ব্যাট করে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৮৪ রানের সংগ্রহ। রান রেট ৫.৩৩। লিড দাঁড়িয়েছে ৬৭ রানের। ক্রিজে বেন স্টোকসের সাথে আছেন হ্যারি ব্রুক। ইংল্যান্ড ইনিংস শুরু করার আগে অস্ট্রেলিয়া সব উইকেট হারিয়ে করে ৩১৭ রান।
দিনের প্রথম ডেলিভারিতেই জেমস অ্যান্ডারসনের ওভারে উইকেট। ব্যাটার ছিলেন স্ট্রাইক প্রান্তে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন আরেক অধিনায়ক স্টোকসের হাতে। এমন দিনের শুরু যাদের, তাঁরা ভালো করার অনুপ্রেরণা নিতেই পারেন। সম্ভবত পরবর্তী ব্যাটিংয়ে সেসবই কাজে লেগেছে।
আগের দিনের অপরাজিত মিচেল স্টার্ক ছিলেন প্রান্ত আগলে। জশ হ্যাজেলউডকে সাথে নিয়ে শেষ উইকেট জুটিতে যতটুকু করা যায় করছিলেন। ৩০০ রান অতিক্রম করে আরো ১৭ রান যোগ হয় দলের খাতায়। তবে ক্রিস ওকসের বলে আর পারলেন না। এজ হয়ে থার্ড স্লিপে বেন ডাকেটের হাতে ধরা পড়েন হ্যাজেলউড। ফলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থামে ৩১৭ রানে। ক্রিস ওকস অর্জন করেন অ্যাশেজে তাঁর প্রথম ৫ উইকেট।
প্রথম সেশনেই ইংল্যান্ড শুরু করে নিজেদের ব্যাটিং ইনিংস। ওপেনার ডাকেট অবশ্য ফিরলেন দ্রুত। তৃতীয় ওভারে স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড হলেন। দলীয় ৯ রানের মাথায় প্রথম উইকেট পতন। তিনে নামলেন মঈন আলি। জানা গিয়েছে আগেই, তিনে তিনিই খেলছেন। একপ্রান্তে বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন জ্যাক ক্রলি, অন্যপ্রান্তে মঈন আলি খেলছিলেন সুযোগ বুঝে। ১৪ তম ওভারে, দলীয় অর্ধ শতক পূর্ণ হয় ইংল্যান্ডের। এই দুই ব্যাটার ক্রিজে থাকতেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতির পর ক্রলি নিজের অর্ধ শতক পূরণ করেন। এর পরের বলেই হাঁকান ছয়ের মার। মঈনও পেয়ে যান নিজের ১৪ তম টেস্ট ফিফটি। হ্যাজেলউদের ওভারে ক্যাচ ড্রপ হওয়া মঈন অবশ্য ফিরলেন স্টার্কের ওভারে। একই জায়গায়। যেখানে মিস করেছিলেন কামিন্স, সেখানেই ক্যাচটি নিজের আয়ত্তে নিলেন উসমান খাজা। ভাঙ্গে ক্রলির সাথে ১২১ (১৫২) রানের জুটি। মঈন ফিরলেন ৫৪ রানে।
এবার জো রুটের সাথে রান তুলতে থাকেন ক্রলি। এই জুটি দ্রুতই পঞ্চাশ ছাড়ায়। এরমধ্যে ক্রলি পেয়ে যান নিজের কাঙ্ক্ষিত শতক। মাত্র ৯৩ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। এরমধ্যে সময় হয়ে যায় চা পানের বিরতির। সেশন শেষ। ২০২৩ অ্যাশেজে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহ হয় এই সেশনে। ২৫ ওভার খেলা হয়। রান ওঠে ১৭৮, রান রেট যেখানে ৭.১৬! যেন এক ‘আদর্শ বাজবল’ এর চিত্র।
নতুন সেশনে যোগ হয় রুটের ব্যক্তিগত পঞ্চাশ, ক্রলির ১৫০ রানের মাইলফলক। অবশেষে ক্যামেরন গ্রিনের বলে আসে ফল। ক্রলি বোল্ড হয়ে ফেরেন। সংগ্রহ ১৮২ বলে ১৮৯ ক্যারিয়ারে সবসময় মনে রাখার মতোই এক ইনিংস খেলে বিদায় নেন এই ইংলিশ ওপেনার। রান। ক্রলি-রুটের ২০৬ (১৮৬) রানের জুটিও ভাঙ্গে এই উইকেট পতনে।
এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি রুট। দলীয় ৩৫১ রানে হ্যাজেলউডের গুড লেংথ বল ‘হিট’ করে রুটের স্টাম্প। ৯৫ বলে ৮৪ রান করে ফেরেন তিনি। হ্যারি ব্রুক ও বেন স্টোকস এখনো আছেন ক্রিজে। ৩৭ বলে ২৪ রান করে স্টোকস এবং ৪১ বলে ১৪ রান করে ব্রুক আছেন অপরাজিত।
তৃতীয় দিন ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দুই দলের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হবে। ইংল্যান্ড চাইবে শক্ত লিড ছুঁড়ে দিতে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া চাইবে যত কম লিডে ইংলিশদের অল আউট করা যায়। তবে এখন পর্যন্ত ৬৭ রানের লিড ও ইতিবাচক ব্যাটিং যে স্বাগতিকদের এগিয়ে রাখছে, এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।