

সিলেটে দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশকে ১১৯ রানের টার্গেট দিয়েছে রাশিদ খানের দল। বৃষ্টির কারণে ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আফগানরা ৭ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা করে ১১৬ রান। তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট। তবে সেরা একাদশে থেকে মেহেদী হাসান মিরাজ পাননি বল করার সুযোগ।
বৃষ্টি নামার আগে আফগানিস্তানের ইনিংসের ৭.২ ওভারে স্কোরবোর্ডের অবস্থা ৩৯/২। দেড় ঘণ্টার বেশি সময়ের বিরতির পর জানা গেল ম্যাচ শুরু রাত ৮ টা ১৫ মিনিটে। কমে গেল ওভার, দুই দলের ইনিংস ১৭ ওভার করে। সর্বোচ্চ ২ বোলার করতে পারবে ৪ ওভার। আফগানিস্তানের ইনিংসের বাকি থাকে ৯.৪ ওভার। ম্যাচ মাঠে ফিরতেই সাকিবের বাকি ওভারের পর নাসুম আহমেদ জোড়া উইকেটের সুযোগ তৈরি করেও পাননি উইকেটের দেখা।
পরপর ক্যাচ ছাড়লেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। মুহূর্তেই নবীর পাঠানো বুলেট গতির শট কভারে দাঁড়িয়ে ধরতে পারেননি সাকিব। পরের বলে উইকেটের পেছনে থেকে গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি লিটন। ব্রেকথ্রু আনতে অবশ্য দেড়ি করেনি বাংলাদেশ। পরের ওভারে মুস্তাফিজ এসেই বিদায় করেন ১৬ রানে থাকা মোহাম্মদ নবীকে। ভয়ংকর হয়ে উঠেন ইব্রাহিম জাদরান। সফরের আগের পাঁচ ম্যাচে শরিফুলের হাতে বিদায় নেওয়া ইব্রাহিম আজ শরিফুল ম্যাচে না থাকায় খেলতে থাকেন স্বাছন্দে। তবে সাকিব আজ সারেন শরিফুলের কাজ।
ইনিংসের ১১তম ওভারে এসে অধিনায়ক সাকিবের জোড়া আঘাত, ফিরে যান দুই জাদরান। ওভারের প্রথম বলে তুলে নেন ইব্রাহিমের উইকেট। শেষ বলে ফেরান নাজিবউল্লাহ জাদরানকে। ইব্রাহিম ব্যক্তিগত খাতায় ২২ রান তুললেও নাজিবউল্লাহ পাননি ৫ রানের বেশি। ১১ ওভারে আফগানদের রান ৬৭, উইকেট খুইয়ে ফেলে পাঁচ।
এরপর করিম জানাত আর আজমতউল্লাহ ওমরজাই মিলে দারুণ খেলতে থাকেন। তবে এই জুটিও ভাঙেন মুস্তাফিজ। ২৫ রানে থাকা ওমরজাইকে ফেরাতে ডিপ থার্ডে দাঁড়িয়ে নিরাপদভাবে ক্যাচ লুফে নেন শামীম হোসেন।
প্রথম টি টোয়েন্টির মতো আজও ম্যাচ শুরুর আগ থেকেই কানায় পূর্ণ হতে শুরু করে ১৮৫০০ ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামটি। মাঠের বাইরে টিকিটের জন্য হাহাকার করতে থাকা দর্শকের সংখ্যাও ভেতরের চাইতে নেহাত কম নয়। টস জিতে আগে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ইনিংসের শুরুটা করেন তাসকিন আহমেদকে দিয়ে। তাসকিন যেন হয়ে গেলেন ট্রেডমার্ক সাকিব আল হাসান; আগের বলে ছক্কা হজম করে পরের বলে উইকেট শিকার।
রহমানউল্লাহ গুরবাজ ৫ বলে ৮ করে বিদায় নিলে তাসকিন আহমেদের ঝুলিতে যায় ৫০তম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি উইকেট। সাকিব, মুস্তাফিজের পর তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে অনন্য এই উইকেট শিকারির ক্লাবে তাসকিন নাম লেখালেন। দ্বিতীয় ওভারে হাসান মাহমুদ এসে খরচ করেন ২ রান। পরের ওভারে আবারও তাসকিনের আঘাত। এবার উইকেট হারান ৪ রান করা হযরতউল্লাহ জাজাই। তাসকিনের লাফিয়ে উঠা বলে কাট শট খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ হন জাজাই। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান উঠতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বিপাকে আফগানিস্তান।
মোহাম্মদ নবী ফিরতে পারতেন গোল্ডেন ডাক হয়ে। তাসকিন নবীকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলার সম্ভাবনা তৈরি করেও শেষপর্যন্ত পাননি উইকেটের দেখা। ৫ ওভারে ২১ রানে থাকা আফগানিস্তান পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মুস্তাফিজের বিপক্ষে ১৩ রান নিয়ে মোট ৩৪ রানে শেষ করে শুরুর ৬ ওভার। আগের ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসে যখন ৭.২ ওভার তখন নামে বৃষ্টি। আজ আফগানিস্তানের ইনিংসেরও একই ওভারের সময় বেরসিক বৃষ্টির হানা।
মাঠে-ঘাসে বৃষ্টির ফোঁটা আছড়ে পড়ার শব্দ, অনেকটা আফগানদের আর্তনাদের মতো। ২৬ মিনিট পর অবশ্য থামে সিলেটের এই চিরচেনা বৃষ্টি। কাভার সরিয়ে মাঠ শুকানোর কাজে ব্যস্ত হন গ্রাউন্ডসম্যানরা। এর মাঝেই অনফিল্ড আম্পায়াররা দুই বার মাঠ পরিদর্শন করে গেছেন। পরবর্তী পর্যবেক্ষণের সময় নির্ধারিত হয় রাত ৮টা ৫ মিনিটে। তখনই জানা যায় ম্যাচ শুরুর সময়।