

এমনিতে ১১ বছর বাদে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়ানডে খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ নারী দল। হোম অব ক্রিকেট খ্যাত এই মাঠ বাঘিনীদের জন্য মোটেও হোম নয়। তবে এই মাঠেই ইতিহাস গড়ল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। প্রথমবার ভারতীয় নারী দলকে হারাল আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচে।
আইসিসি উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ বাংলাদেশ-ভারত নারী দলের ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। যার প্রথম ম্যাচ আজ মাঠে গড়ায়। টসে জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠান ভারতীয় ক্যাপ্টেন হারমানপ্রীত কর।
রান আউটে কাটা পড়ে থামে শারমিন আক্তার সুপ্তার অস্বস্তিকর ইনিংস। ১৮ বল মোকাবেলা করেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। অপর ওপেনার মুর্শিদা খাতুন ১৩ রান করতে খেলেন ৩০ বল। ১৪ রানেই ২ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা।
সেখান থেকে তিনে নামা ফারজানা হক পিংকির সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়েন বাঘিনীদের ক্যাপ্টেন নিগার সুলতানা। ৪৫ বলে ৫ চারে ২৭ রান করে ফারজানা থামলে ভাঙে জুটি।
এরপর রিতু মনি, রাবেয়া খানদের সাহায্য নিয়ে ১০০ পার করান নিগার। নিজে ৫ম ব্যাটার হিসাবে আউট হন ব্যক্তিগত ৩৯ রানের মাথায়। ৬৪ বল খেলে ৩ চারে ইনিংস সাজান নিগার। এরপর তাঁর ডেপুটি নাহিদা আক্তার দ্রুত ফিরলে দ্রুত গুটিয়ে যবার শঙ্কা জাগে।
তবে ফাহিমা খাতুন (১২*), সুলতানা খাতুন (১৬), মারুফা (৬) কার্যকরী কিছু রান করলে ১৫০ পার করে বাংলাদেশ। ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৪৩ ওভারে ১৫২ রান করে গুটিয়ে যায় তারা। ব্যাট হাতে নামতে পারেননি স্বর্ণা আক্তার।
ভারতের পক্ষে ৪ উইকেট নেন আমানজোত কর। ২ টি শিকার দেবিকা বৈদ্যর। ১ টি উইকেট পান দিপ্তী শর্মা।
জবাব দিতে নামা ভারতকে শুরুতে স্বস্তি দেননি মারুফা আক্তার। সুইং বোলিং দিয়ে দিশেহারা করেন দুই ওপেনারকে। স্মৃতি মান্দানাকে নিগার সুলতানা জ্যোতির ক্যাচ বানিয়ে ফেরানোর পর মুর্শিদা খাতুনের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান প্রিয়া পুনিয়াকে।
নাহিদা আক্তার ভারতীয় কাপ্তান হারমানপ্রীত করকে ৫ রানের বেশি করতে দেননি, তাঁকে ফেলেন লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে। তিনে নামা ইয়াস্তিকা ভাটিয়াকে রাবেয়া খান বোল্ড করলে ৪৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ভারত।
দলের রান যখন ৬১ তখন ৫ম ব্যাটার হিসাবে ফেরেন জেমিমা রড্রিগুয়েজ (২৬ বলে ১০)। এরপর ভারতকে সঠিক পথের দিশা দিচ্ছিল দিপ্তী শর্মা ও আমানজোত করের জুটি। তবে সেই জুটি এসে থামান মারুফা। ৪০ বলে ১৫ রান করা আমানজোতকে আউট করার পরের বলে বোল্ড করেন স্নেহ রানাকে।
ঠিক তার পরবর্তী বলেই দিপ্তী শর্মাকে ফেরান রাবেয়া। ভারতের জয়ের আশা থামে এই তিন ডেলিভারিতেই। ৫ উইকেটে ৯০ থেকে ৮ উইকেটে ৯১ রানের দলে পরিণত হয় তারা।
শেষমেশ ভারত ৩৫.৫ ওভারে অলআউট হয় ১১৩ রান করে। বাংলাদেশ ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে জেতে ৪০ রানে। যা তাদের ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম জয় (ভারতের বিপক্ষে)।
২৯ রান খরচে ৪ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার মারুফা আক্তার, ম্যাচসেরাও হন তিনি। এছাড়া রাবেয়া খান ৩ উইকেট নেন। ১ টি করে শিকার নাহিদা আক্তার ও সুলতানা খাতুনের।