এভাবেও বৃষ্টি আসে সিলেটে…

এভাবেও বৃষ্টি আসে সিলেটে…
Vinkmag ad

মেঘলা আকাশ, কখনও দু’এক পশলা বৃষ্টি, ফের গরম; এসবই যেন সিলেটের ট্রেডমার্ক ওয়েদার। যা আপনি দেখবেন, উপভোগ করবেন। কিন্তু আবহাওয়ার এই অংকের হিসাব মেলাতে গিয়ে থমকে যাবেন। ভাবনায় ডুবে হয়তো বলবেন, এভাবেও বৃষ্টি হয়! সিলেটের বৃষ্টি নিয়ে নানা কথাই বলা যায়। কিন্তু আগাম বোঝার কোনো সুযোগ নেই, হুটহাট বৃষ্টি ঝরে এখানে। কখনো গুঁড়ি-গুঁড়ি, কখনো ঝুমবৃষ্টি। দেখা গেল, কয়েক মিনিটেই ঝুমবৃষ্টির দাপট শেষ। এমন দৃশ্য দেখা এ শহরের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে।

বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হওয়ার পর গেল ২-১ দিনের আবহাওয়া দেখে সহজেই বলতে পারছি, এখানে বৃষ্টিরা দ্রুতই ক্ষান্ত যায়। মেঘেদের বুকভেদে ঠিকরে ছড়িয়ে পড়ে মিষ্টি রোদ। দেখা যায়, আধা কিলোমিটারের ব্যবধানে কোথাও ঝুমবৃষ্টি, আবার কোথাও ঝকমকে রোদ। বৃষ্টিরা এখানে খেলা করে আপন মনে। আকাশে তুলো-তুলো মেঘেরা ভাসে নিজেদের মতো। কখনো আকাশ সাদা, কখনো ঘন কালো। কখনো ভরদুপুরে কালো চুলের মতো অন্ধকারে চারপাশ ছেয়ে গিয়ে আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে। আবার কখনো সিলেটের পাহাড়-টিলার চূড়ায় কুয়াশার মতো মেঘেরা ভেসে বেড়ায়। দূরের টিলার ভাঁজে-ভাঁজে মেঘেরা যেন কুণ্ডলী পাকায়। অবশ্য যখন তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়, তখন অস্পষ্ট হয়ে পড়ে টিলাগুলো। আকাশজুড়ে তখন কেবল শোনা যায় বৃষ্টির পতনের শব্দ।

অনেকেরই নিশ্চয়ই এটা জানা, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় সিলেট অঞ্চলে। এমন আবহাওয়াতে ঘর ছেড়ে ক্রিকেট দেখতে মাঠে আসা দর্শকেরা ভেজা কাকের মতোই চেয়ে রয় থামার অপেক্ষায়। বৃষ্টির পানিরা ফোঁটায় ফোঁটায় কিছুসময় ঝরে এরপর নেয় বিশ্রাম। সিলেটের তুমুল বৃষ্টির প্রেমে অনেকেই মজেছিলেন। বৃষ্টিমুখর দিনরাত উপভোগ করতে ছুটে যান সিলেটের টিলা, চা-বাগান আর হাওর-বাঁওড়ে। কিন্তু বাংলাদেশের ম্যাচ চলাকালীন এই আবহাওয়া হয়তো কেউই চান না।

এতোটা নির্দয় নয় বৃষ্টি নিজেও, দ্রুতই যে সে ক্ষান্ত হয়। মুহূর্তেই সূর্য হেসে উঠে বলছে, সে এক অচেনা যাত্রী। তবুও তাকে আসতে হয় সাকিব-লিটনদের ম্যাচ বাঁচাতে, দর্শকের উন্মাদনা বাড়াতে। আকাশের কান্নায় সিক্ত শহরতলী মুছে ফেলে অতীত সব পিছুটান। প্রথম টি-টোয়েন্টির এক ঘটনা যার বাস্তব প্রমাণ, বৃষ্টির কারণে ইনিংসের মাঝপথে ১৭ মিনিট খেলা বন্ধ। বিশ্রাম পাওয়া সাকিব আল হাসান এরপর এসেই আলো ছড়ালেন। দেখালেন ব্যাটিং তান্ডব। ফরিদ-রাশিদের পরের দুই ওভারে সাকিব-হৃদয় মিলে তুলে নেন ১৯ রান।

ম্যাচের আগে দুপুর থেকেই ছিল রোদ-বৃষ্টির খেলা। কিন্তু টসের আগেই যেন তারা উধাও। আকাশ তখন ধীরে-ধীরে বন্ধু হয়ে উঠতে লাগলো। আত্মপ্রকাশ হলো ওয়ারফেজের ‘বসে আছি একা’ গানের সেই রূপালি আকাশের। চিনি ছাড়া বৃষ্টি মেশানো দুধ চা’য়ে চুমুক দিয়ে কি যেন এক অবিরাম উষ্ণতা খুঁজে পাওয়া যায়। এক অন্য রকম আবহ। প্রকৃতির এমন রূপকে অপরূপ করতে; সাতরঙা শাড়ি পরে দাঁড়িয়ে যায় মুগ্ধ আকাশ। রংধনুর মতোই রঙিন হয় বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের শেষটা। নিশ্চিত হারতে যাওয়া ম্যাচে জয় এনে দেন হৃদয়, শামীম, শরিফুল।

এবার সাকিবদের অপেক্ষা সিরিজ জয়ের। তবে আজও শঙ্কা আছে বৃষ্টির। সব ছাপিয়ে সিলেটি দর্শকদের চাওয়া বাংলাদেশের হাস্যোজ্জ্বল সিরিজ জয়।

রাকিবুল হাসান

Read Previous

বেয়ারস্টোকে আউট করা ক্যারি নিজেও হয়েছিলেন এমন আউটের শিকার!

Read Next

আজও টস জিতলেন সাকিব আল হাসান

Total
0
Share