লিডসে চারদিনেই কাঙ্ক্ষিত জয় পেল ইংল্যান্ড

20230709 211740 scaled
Vinkmag ad

সম্ভাবনা তৈরি করেও জয়টা পেল না অস্ট্রেলিয়া। হ্যারি ব্রুক, ক্রিস ওকস– তাঁদের দারুণ ইনিংস খেলে ইংল্যান্ড দলকে সিরিজের প্রথম জয়ের স্বাদ এনে দিল। চতুর্থ দিনেই বিজয়ী দল এখন ইংল্যান্ড। ৩ উইকেটের জয়ে সিরিজে টিকে রইল ইংলিশরা। হেডিংলি টেস্টে জমজমাট চারটা দিন গেল ক্রিকেটের জন্য।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগে ১৫৩ রানে ৪ উইকেটের পতন, বিরতির পর দ্রুত আরো ২ উইকেটের পতন। ২৫১ রানের সহজ লক্ষ্য তখন মনে হচ্ছিল অনেক দূরে। তবে হ্যারি ব্রুক আর ক্রিস ওকসের ৭৩ বলে ৫৯ রানের জুটিই বাঁচিয়ে দিয়েছে ইংল্যান্ডকে। অন্যদিকে মার্ক উড তো ব্যাটে-বলে এমন পারফরম্যান্স দিলেন, হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ।

দলীয় ২৭ রানে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল দুই ওপেনিং ব্যাটার। আজ নতুন দিনেও ভাল শুরুর বার্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন দুজন। তবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা বেন ডাকেট ফিরলেন দ্রুতই। মিচেল স্টার্কের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পা দিয়ে রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি তাঁর। দলীয় ৪২ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে ইংল্যান্ডের।

পরের ব্যাটার যে মঈন আলি হতে পারে সেরকম এক আভাস আগেই মিলেছিল। কারণটা অনুমেয়, কিছু মারমুখী খেলা। মঈন অবশ্য সেই প্রতিদান দিতে পারেননি। স্টার্কের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ব্যক্তিগত ৫ রানে বোল্ড হয়ে ফিরতে হিয় প্যাভিলিয়নে।

তবে লক্ষ্যমাত্রা আয়ত্তের মধ্যে থাকায় ইংলিশ ব্যাটারদের খুব বেশি বিচলিত দেখতে পাওয়ার কথা নয় তখনো। যদিও জ্যাক ক্রলি নিজের অর্ধ-শতক করার আগেই মিচেল মার্শের বলে ফিরেছেন দলীয় ৯৩ রানে। তখন ক্রিজে জো রুট ছিলেন।

কিন্তু রুটও ইনিংস দীর্ঘ করতে পারলেন না। অজি অধিনায়কের বলে পুল খেলতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৩ রানে অ্যালেক্স ক্যারির হাতে পড়েন। এ নিয়ে ১১ তম বারের মতো প্যাট কামিন্সের বলে উইকেট বিলিয়ে এলেন জো রুট।

১৩১ রানে ৪ উইকেটের পতনে কিছুটা চিন্তার ভাঁজ পড়ে ইংলিশ সমর্থকদের কপালে। ইংল্যান্ড ১৫৩-৪, এই স্কোর রেখে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায় দুই দল।

মধ্যাহ্ন বিরতির পরের গল্পটা খুব আকর্ষণীয়। ৯৮ রান প্রয়োজন, হাতে ৬ উইকেট। এই সমীকরণে ক্রিজে তখন হ্যারি ব্রুকের সাথে অধিনায়ক বেন স্টোকস। দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারটা ভালোভাবেই পার করা গেল। তবে দ্বিতীয় ওভারে এসে মিচেল স্টার্কের আউট সাইড অফ স্টাম্পের বল খেলতে গিয়ে ক্যারির গ্লাভস বন্দি হন অধিনায়ক স্টোকস। তাতে হ্যারি ব্রুকের সাথে তাঁর ৩০ রানের জুটি ভেঙে যায়।

তার এক ওভার পর আবারো মিচেল স্টার্ক! এবারের শিকার ইংলিশ উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টো। আগের ওভারে একটা চারের মার খেলেছিলেন স্কট বোল্যান্ডের বলে। স্টার্কের ওভারে এসে দৌড়ে নিয়েছেন ১ রান। এই সর্বমোট ৫ রান নিয়েই স্টার্কের ফুল লেংথ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। দলীয় রান তখন ১৭২, ৬ উইকেট হারিয়ে।

বিরতির পর এই টানা উইকেট পতন ইংল্যান্ড দলকে বেশ ব্যাকফুটে নিয়ে যায়। তবে এক প্রান্ত যত্ন নিয়ে আগলে ছিলেন হ্যারি ব্রুক। স্টোকসের উইকেটের পর ব্রুকের সাথে তখন ক্রিস ওকস। দুজনে মিলে দারুণ খেলাই উপহার দিলেন। খুব বেশি চাপ নিলেননা। যখন সুযোগ পেয়েছেন বাউন্ডারি খেলেছেন। এরমধ্যে ব্রুক তাঁর ফিফটিও তুলে নিলেন। এই দুই ব্যাটার মিলে ৬২ বলেই অর্ধশত রানের জুটি গড়েন। তবে শেষ করে আসতে পারেননি ব্রুক। দ্বারপ্রান্তে গিয়েও কর্ম হয়নি সমাধা। দলের যখন আর ২১ রান প্রয়োজন, সেসময় নিজের উইকেট খোয়ালেন ব্রুক।

তাঁর এই চমৎকার ইনিংসে ভাঁটা দেন মিচেল স্টার্ক। শর্ট ডেলিভারিতে পরাস্ত করেন হ্যারি ব্রুককে। ব্যাট চালানোর প্রয়োজন ছিল না। সহজ ক্যাচ নেন প্যাট কামিন্স। ৯৩ বলে ৭৫ রান করে ফেরেন হ্যারি ব্রুক।

এরপর আর খুব বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি ইংল্যান্ড দলের। আগের ইনিংসে ৮ বলে ২৪ রান নিয়েছিলেন মার্ক উড। তিনিই আসলেন ক্রিজে। ১ চার, ১ ছয়ে দলের সমীকরণ একেবারেই সহজ করে দিলেন। যখন জিততে আর ১ টি রান প্রয়োজন, সেসময় ক্রিস ওকসের ব্যাটে আসে আনন্দের শট, একেবারে বাউন্ডারি। ৩ উইকেটের জয় পায় ইংল্যান্ড।

শেষপর্যন্ত মার্ক উড অপরাজিত ছিলেন ৮ বলে ১৬ রান করে। আর ছিলেন ক্রিস ওকস। তিনিও অপরাজিত ব্যাটার। হ্যারি ব্রুককে দিয়েছেন যোগ্য সমর্থন। তাঁর ৪৭ বলে ৩২ রানের ইনিংস ইংলিশ ক্রিকেট ভালোই মনে রাখবে।

অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের পক্ষে মিচেল স্টার্ক নেন ৫ উইকেট, যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৪ তম ফাইফার। প্যাট কামিন্স ও স্কট বোল্যান্ড নেন ১ টি করে উইকেট।

সিরিজ দাঁড়াল ২-১ পরিস্থিতিতে। ইংল্যান্ড বাঁচিয়ে রাখল সিরিজ জেতার আশা। অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট আগামী ১৯ জুলাই ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত হবে।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

ছিটকে গেলেন এবাদত হোসেন

Read Next

খালেদ মাহমুদ সুজন টেপ টেনিস ক্রিকেটের আবিষ্কারক!

Total
0
Share