

দ্বিতীয় দিনে ক্যাপ্টেন’স নক খেললেন বেন স্টোকস। আগের টেস্টেও যেমন খেলেছিলেন। তবে তার এই ৮০ রানই দলের সর্বোচ্চ। বাকিরা তেমন কোনো ভূমিকা না রাখায় ইংল্যান্ড দল আজ অল আউট হয়েছে ২৩৭ রানে। তবে এখানেই শেষ নয়। অস্ট্রেলিয়া তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭ ওভার ব্যাটিং করেছে গতকাল। তুলেছে ১১৬ রান, হারিয়েছে ৪ উইকেট। লিড ১৪২ রানের।
ধ্বংসযজ্ঞটা চালিয়েছেন প্যাট কামিন্স। স্টোকসের এমন ইনিংসের দিনে, তিনিই বা বাদ যাবেন কেনো। প্রথম দিনেই ২ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন। আর গতকাল ইংল্যান্ডকে কম সংগ্রহে আটকে দেওয়ার প্রধান ভূমিকা ছিল তাঁর। প্রথম দিনের ২ এবং দ্বিতীয় দিনের ৪ উইকেট মিলে মোট ৬ উইকেট নিয়েছেন এই অজি অধিনায়ক।
নতুন দিনে জো রুট ও জনি বেয়ারস্টো মিলে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে নিবে এই ছিল প্রত্যাশা। তবে তা আর হলো কই! দলীয় ৬৮ রানে রুট ফিরলেন কামিন্সের বলে। তাতে বেন স্টোকসের ক্রিজে আগমন যেন ইংলিশদের জন্য ইদানীং ভালো কিছুই বইয়ে আনছে। স্টোকস টিকে ছিলেন শেষ উইকেট পর্যন্ত। ফিরে যাওয়ার আগে দলকে দিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ ৮০ (১০৮) টি রান। ৬ টি চার ও ৫ টি ছয়ের মার ছিল সে ইনিংসে।
দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ডের পক্ষে স্টোকসের চেয়ে বেশি করেছেন কেবল মার্ক উড। তিনি ৮ বলে ২৪ রানের ঝড় তুলেছিলেন, যেখানে ছিল ৩ ছয় ও ১ চারের মার। দলে ফেরা মঈন আলি ৪৬ বলে ২১ রানের সাধারণ ইনিংস খেলেছেন। ক্রিস ওকস ও স্টুয়ার্ট ব্রড ফিরেছেন দ্রুত। ওলি রবিনসন কেবল ছিলেন ৬ বলে ৫ রান করে অপরাজিত। তাতে ইংল্যান্ড দল অল আউট হয় ২৩৭ রানে। যেখানে প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ২৬৩ রান।
বেন স্টোকসের উইকেটটা কেবল টড মার্ফির পকেটে গিয়েছে। মিচেল মার্শ নিয়েছেন ১ টি। মিচেল স্টার্কের দুই উইকেট রেখে বাকিগুলো প্যাট কামিন্স একাই সামলেছেন, ৯১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৬ উইকেট। প্যাট কামিন্সের ইংল্যান্ডের মাটিতে এই প্রথম ৫ উইকেট অর্জন।
দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া দল যখন ব্যাট করতে নামে ২৬ রানের অল্প লিড তাঁদের সম্বল। মাত্র দ্বিতীয় দিন চলছিল। বড় টার্গেট কি করে দেওয়া যায়, তাই হয়তো পরিকল্পনায়। কিন্তু হেডিংলির পিচ যেন সেরকম কিছু চাইছে না।
তৃতীয় ওভারেই ডেভিড ওয়ার্নার ফিরলেন স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে। বরাবরের মতোই। আগের ইনিংসেও ফিরেছিলেন। তো এ নিয়ে মোট ১৭ বারের ফেরা হলো ওয়ার্নারের, একই বোলারের বলে। দলীয় রান তখন ১১। মারনাস লাবুশেন আসলেন ক্রিজে। লক্ষ্য তাঁর একটা ভালো ইনিংস, উসমান খাজার সাথে জুটি যতদূর এগিয়ে নেওয়া যায়।
সে আর হয়নি। নিজের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন মঈন আলির বলে। অলস ধরনের সুইপ শটে টপ এজে ক্যাচ তুলেছেন, সে ক্যাচ ধরেছেন হ্যারি ব্রুক। দলীয় ৬৮ রানে লাবুশেনের পতন।
দলের খাতায় আর মাত্র ৪ রান যোগ করতেই এবার ফিরলেন স্টিভ স্মিথ। বোলার একজনই, মঈন আলি। মিড-উইকেটে ক্যাচ বিলিয়ে দেওয়া, এছাড়া আর কিছুই ছিল না সেটা। এই উইকেট তুলে নেওয়ার ফলে টেস্টে মঈন আলির ২০০ উইকেট অর্জন ঘটল।
পিচ আঁকড়ে পড়ে থাকা উসমান খাজাও নিজেকে শেষ রক্ষা করতে পারেননি। ৩৪.৫ ওভারে ক্রিস ওকস এর বলে আউট সাইড এজ হয়ে ফেরেন এই ওপেনার। ৯৬ বলে ৪৩ রানের গোছানো ইনিংস খেলেছিলেন বটে ফেরার আগে। তবে সে ইনিংস আর বড় করতে পারলেন না।
প্রথম ইনিংসের মতোই মিচেল মার্শের সাথে এখন ক্রিজে জুটি গড়ার চেষ্টায় ট্রাভিস হেড। ৫২ বল খেলে ১৮ রান করে হেড এবং ৪৩ বল খেলে ১৭ রান করে মার্শ আছেন অজিদের লিড বাড়ানোর দায়িত্বে।
দ্বিতীয় দিনশেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রানের সংগ্রহ তুলেছে অস্ট্রেলিয়া দল। তাতে লিডটা দাঁড়িয়েছে ১৪২ রানের
তৃতীয় দিনে বাকি অজি ব্যাটারদের লক্ষ্য থাকবে ইংলিশদের জন্য বড় টার্গেট ছুঁড়ে দেওয়া।