

চট্টগ্রামে আষাঢ়ে বৃষ্টির ঘনঘন আগমন। বাংলাদেশের ইনিংসে দুইবার থেমে ইনিংস গড়ায় ৪৩ ওভারে। বৃষ্টির সাথে পুরোটা সময় ছিল তামিম, মুশফিকদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে হাল ধরেন কেবল তাওহীদ হৃদয়। বাংলাদেশ ১৬৯ করলেও আফগানদের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৪৩ রানের।
এই ইনিংসে ফের বৃষ্টির আঘাত, পরে বৃষ্টি আইনে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের টার্গেট দাঁড়ায় ২৯ ওভারে ১১১ রান। বৃষ্টি নামার আগেই ২১.৪ ওভারে ২ উইকেটে আফগানিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৮৩। তখনই ১৬ রানে এগিয়ে থাকে হাশমতউল্লাহ শহীদির দল। ফলে বাকি ৭.২ ওভারে তাদের দরকার হয় কেবল ২৮ রানের। বাংলাদেশ সময় রাত ১০:৩৫ মিনিটে ম্যাচ শুরু করার কথা থাকলেও তা আর মাঠে গড়ায়নি।
শেষ পর্যন্ত খেলা না হওয়ায় আফগানিস্তান ১৭ রানে জিতে যায় ম্যাচ। এর আগে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের দিনে হাল ধরেন কেবল তাওহীদ হৃদয়। আফগান বোলিং অ্যাটাকের সামনে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে শেষপর্যন্ত টাইগাররা ৪৩ ওভারে করে ১৬৯ রানে। ডিএলএস মেথডে ৪৩ ওভারে আফগানিস্তানের টার্গেট দাঁড়ায় ১৬৪ রানের।
দুই ওপেনারের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় আফগানিস্তান। ৫৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। ৪৫ বলে ২২ করে সাকিবের বলে ক্যাচ তুলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তিনে নামা রহমত শাহ ৮ রান করতেই হয়েছেন তাসকিন আহমেদের শিকার। কিন্তু ইব্রাহিম জাদরান আর অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদির ব্যাটে সহজেই জয়ের পথে এগিয়ে যায় সফরকারী দল।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। শুরুটা দেখেশুনে হলেও মুহূর্তেই বিদায় ঘন্টা বাজে তামিম ইকবালের। ফারুকির করা ইনিংসের ৭ম ওভারের শুরুর বলেই বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। এরপর টানা তিন বল ডট দিয়ে পঞ্চম বলে হারিয়েছেন স্টাম্প। নিচু লেন্থে আসা বল তামিমের ব্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটকিপার রহমানউল্লাহ গুরবাজের হাতে। আর এক বার, টানা ৪র্থ বার ওয়ানডেতে তামিমের উইকেট নিলেন ফজলহক ফারুকি।
প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তামিম ২১ বলে করে গেছেন ১৩। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তামিম ইকবালের বিপক্ষে ৭.৪ ওভার বল করে ফজলহক ফারুকির পরিসংখ্যান এখন ৪-২০। পরের ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে চার্জ করেন লিটন-শান্ত। এই ওভারে ৩০ এর স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ১৩ রান।
এই জুটিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল বেশ ভালোভাবেই। কিন্তু বিপত্তি বাধালেন মুজিব উর রহমান। লিটন দাস উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ২৬ রানে বাউন্ডারি লাইনে হয়েছেন ক্যাচ। এরপর নাজমুল হোসেন শান্তও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। মোহাম্মদ নবীর প্রথম বলেই সুইপ কাটে শর্ট ফাইনে তুলেছেন সহজ ক্যাচ। ফেরার আগে শান্তর ব্যাট থেকে ১৬ বলে আসে ১২ রান।
দলীয় ৭২ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারানো বাংলাদেশ এরপর ঘুরে দাঁড়ায় সাকিব-মুশফিকের ব্যাটে। ১৫.১ ওভারে রান যখন ৮৪ চট্টগ্রামের আকাশ ভেঙে নামে বৃষ্টি। আধা ঘন্টার বিরতির পর ফের শুরু হয় খেলা। উইকেটে দীর্ঘক্ষণ থাকা সাকিব বড় করতে পারলেন না ইনিংস। বাউন্ডারিবিহীন ৩৮ বলের ইনিংসে সাকিব করেন ১৫ রান।
রাশিদ খান এসে দ্রুতই বিদায় করেন মুশফিকুর রহিম ও আফিফ হোসেনকে। মুশফিক ৩ বলে ১ করে হয়েছেন বোল্ড। লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন ৪ রান করা আফিফ। মেহেদী হাসান মিরাজ ৫ রান করতেই হারিয়েছেন উইকেট। ১৩৯ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
মুজিবের দ্বিতীয় শিকার তাসকিন আহমেদ (৭)। তাওহীদ হৃদয় উইকেটের স্রোতের বিপরীতে গিয়ে একাই লড়লেন। দারুণ সব স্ট্রোক্স খেলে হাঁকালেন ফিফটি। ৬৭ বলে পঞ্চাশ করা হৃদয় ফজলহক ফারুকির এই ওভারেই বিদায় নেন। ৫১ রানের ইনিংসে তাওহীদ হৃদয় বাংলাদেশকে ১৬৪ রানে রেখে সাজঘরে যান। শেষ ব্যাটার হিসাব হাসান মাহমুদ অপরাজিত ছিলেন ৮ রানে। বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত ৪৩ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ করে ১৬৯ রান।