

মাইকেল মরপুরগো’র একটি উক্তি শেয়ার করেছেন শচীন টেন্ডুলকার। গতকাল ছিল গুরু পূর্ণিমা। সেই উপলক্ষ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শচীন তাঁর ‘গুরু’ রমাকান্ত আচরেকরের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। স্মরণ করেছেন শ্রদ্ধাভরে। লোকে দেখতে পেল, শিষ্য কীভাবে একজন গুরুকে মনে রাখে।
রমাকান্ত আচরেকর। শচীনের ক্রিকেট গুরু হিসেবেই পরিচিত তিনি। শচীনের ক্রিকেট-পাঠের শুরুটা রমাকান্তের হাত ধরেই। শচীনের জীবনে রমাকান্তের কতটা প্রভাব, তা শচীনের গুরুভক্তি ও কথাবার্তা বারবার প্রমাণ করেছে। গতকাল ছিল গুরু পূর্ণিমা। হিন্দু শাস্ত্রমতে, এদিন গুরুদের স্মরণ করার দিন। শচীনও তাই করেছেন। সাধারণত গুরু পূর্ণিমার দিন শচীন রমাকান্তের বাড়িতে যেতেন। তবে রমাকান্ত ২০১৯ সালের, ২ জানুয়ারি প্রয়াত হওয়ার পর আর সেই সুযোগ হয় না। তাই যেভাবে পারা যায় গুরুকে স্মরণ করেন তিনি।
শচীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাইকেল মরপুরগো’র একটি উক্তি শেয়ার করেছেন এমন,
‘একজন শিক্ষকই আসল পার্থক্য তৈরি করেন, ক্লাসরুম নয়।’
— আরো লেখেন,
“আমরা সবাই আচরেকর স্যারের ক্রিকেটের মহান স্কুলের অংশ ছিলাম। আমি নিজেকে সবচেয়ে ভাগ্যবান মনে করি কারণ, আমি তাঁর মতো একজন নিঃস্বার্থ ব্যক্তির কাছে এই খেলাটা শিখতে পেরেছি। শুভ গুরু পূর্ণিমা।”
সেখানে তিনি আরো কয়েকজন ভারতীয় ক্রিকেটারের ছবি দিয়েছেন। যেমন, চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, ভিনোদ কাম্বলি, অজিত আগারকার, রমেশ পাওয়ার-সহ আরো কয়েকজন।
গুরু রমাকান্ত আচরেকর শচীনকে বলেছিলেন, ‘ব্যাটের সঙ্গ কখনো ছাড়বি না’ – ২০১৩ সালের এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি। শচীন তাঁর গুরুর কথা খুবই মেনে চলতেন। রমাকান্তের বাসায় শচীনের অবাধ যাতায়াত ছিল। তা সেই ছোটবেলা থেকেই। যখন থেকে শচীন ক্রিকেটে আসতে শুরু করেছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা শচীন তাঁর গুরুর সাথে ক্রিকেটের নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করতেন। শিবাজি পার্কের সে বাড়িটা দেখতে খুব সাধারণ মনে হবে। ঘরের ভেতরেও একটি ছবি ছাড়া তেমন কিছু ছিল না সেসময়।
২০১৩ সালের সেই সাক্ষাৎকারে রমাকান্ত বলেন, ‘একই তো আছে শচীন, এতটুকু বদলায়নি। এখনো ও আমার বাড়িতে আসে, আমার আশীর্বাদ নিয়ে যায়। আমি খুব বেশি কথা বলতে পারি না ওর সঙ্গে। কিন্তু শচীন ক্রিকেট নিয়ে টানা কথা বলতে থাকে আমার সঙ্গে।’
আনন্দ নিয়ে তিনি বলতে থাকেন, ‘ক্রিকেট নিয়ে কথা বলার মাঝে আমার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে প্রচুর খোঁজখবর করত শচীন। এমনকি, বাইরে সফরে গেলেও আমার মেয়ে কল্পনাকে ফোন করে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে ও। আর মুম্বাইয়ে থাকলে তো শচীন আর অঞ্জলি প্রায়ই আসে দেখা করতে।’
শচীন টেন্ডুলকার-রমাকান্ত আচরেকর একসাথে উচ্চারিত দুটি নাম। ভারতীয় ক্রিকেটে গুরু-শিষ্য নিয়ে প্রকৃত উদাহরণ দেখাতে গেলে, এ দু’জন যেকোনো পরিস্থিতিতেই চলে আসবে। তাই গুরুর জন্মদিন, মৃত্যুদিন বা গুরু পূর্ণিমার দিন– শচীন স্মরণ করে যান তাঁর ক্রিকেট গুরুকে, শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে।