এমসিসির পরিকল্পনা: ক্রিকেট হবে আরো যুগপৎ

লস অ্যাঞ্জেলেস অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট!
Vinkmag ad

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ক্রিকেট-কে যুগপৎ করতে আসছে বেশকিছু পরিবর্তন। জলবায়ু, প্রযুক্তিবান্ধব এবং মাঠের খেলাকে আরেকটু সহজ করতে মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। নরম বল তৈরি করা, ব্যাট তৈরিতে বিকল্প উপাদান, খেলার পিচ জলবায়ুর সাথে আরো বেশি উপযোগী করে তোলা ইত্যাদি রয়েছে পরিকল্পনায়।

মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) ক্রিকেটের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ক্রিকেট আইনপ্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর পরিচিতি রয়েছে। সম্প্রতি ‘দ্য টেলিগ্রাফ’- এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমান সময়ের ক্রিকেট কিছু প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে এমসিসি মনে করে এবং সেখানে জলবায়ুর প্রভাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এই প্রভাবের ফলাফল গিয়ে পড়ছে অন্যান্য জায়গাতেও। যেমন, স্বল্পতা তৈরি হয়েছে ক্রিকেট ব্যাট তৈরির প্রধান দু’টি উপাদান; উইলো ও কেনের। এর বিকল্প কি করা যায় বা এই স্বল্পতা থেকে কিভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, তা নিয়েও ভাবছে এমসিসি।

প্রযুক্তিগত দিক থেকে ক্রিকেটকে পিছিয়ে পড়া খেলা হিসেবে সাব্যস্ত করা হচ্ছে। এমসিসির আইন উপকমিটির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দীর্ঘকালীন গবেষণার দিক থেকে ক্রিকেট মূলত অনেকটাই পিছিয়ে আছে। সাধারণত অন্যান্য খেলার সাথে তুলনা দিলে, প্রযুক্তি বিচারে ক্রিকেট তেমন উন্নতি করতে পারেনি বলে বিবেচনা করছে এমসিসি।

টেস্ট ক্রিকেটের বাণিজ্যিকীকরণ বিষয়টিও সামনে এসেছে প্রতিবেদনে। এমসিসি মনে করছে, দিবা-রাত্রির টেস্ট হতে পারে এর সমাধান। অধিক পরিমাণে দিবা-রাত্রির টেস্ট আয়োজনের মাধ্যমে টেস্ট ক্রিকেট থেকে লাভজনক ব্যবসায়ী ফলাফল আদায় করা সম্ভব বলে ধারণা ক্রিকেটের এই প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানটির।

দিবা-রাত্রির টেস্টে গোলাপি বলের উন্নয়ন এবং ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে সাদা বলের উন্নয়ন– দু’টি বিষয়ের দিকেই আলোকপাত করা হয়েছে।

জানা যায়, ‘ড্রাগনস ডেন’- এই ধারণাটি এমসিসি আয়ত্ত করবে নিজেদের মধ্যে। ড্রাগনস ডেন মূলত যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনপ্রিয় একটি রিয়েলিটি শো। যেখানে নতুন উদ্যেক্তাগণ নিজেদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করে থাকে আর্থিক বিনিয়োগকারীদের সামনে। বিনিয়োগকারীদের সেই পরিকল্পনা পছন্দ হলে, তারা বিনিয়োগ করে। আইডিয়া, উদ্যেক্তা ও বিনিয়োগকারী- সকলের জন্য একটি লেভেল-প্লেয়িং ফিল্ড হিসেবে কাজ করে এই ড্রাগনস ডেন।

এমসিসি কীভাবে ড্রাগনস ডেন’কে গ্রহণ করবে? এমসিসি তাদের বড় পরিকল্পনাগুলো উপস্থাপন করবে বিশিষ্ট বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের সামনে। তারা পরিকল্পনা শুনবে। এরপর একটা ‘ফেয়ার ডিল’ এর মাধ্যমে চুক্তি সম্পাদন হবে। এমসিসি আশাবাদী, ক্রিকেট উন্নয়নকে অগ্রসর রাখতে ‘ড্রাগনস ডেন’- এর আইডিয়া বেশ ফলপ্রসূ হবে।

এছাড়াও ক্রিকেট সরঞ্জামের দামকেও নাগালের মধ্যে রাখার উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে এমসিসি। এই সকল বিষয়গুলো নিয়ে আগামী ২৬ জুন এমসিসি ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদনটি উপস্থাপিত হবে। যদি কমিটি উপযুক্ত মনে করে, তবে এই বছরের অক্টোবরে গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ একটি অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তুলে ধরবে।

ক্রিকেটের সার্বিক উন্নয়নে এমসিসি’র এই নতুন চিন্তাভাবনা কাজে লাগবে বলে মনে করা হচ্ছে। ক্রিকেট বিশ্বায়নে জলবায়ুর ভারসাম্য, প্রযুক্তির উন্নয়ন, টেস্ট ক্রিকেট ভাবনা- সমস্ত বিষয় খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখাটা এমসিসির সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত হিসেবেই ধরা যেতে পারে।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

ব্যাটার তাসকিনকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন নিক পোথাস

Read Next

হারারেতে রূপকথা, উইন্ডিজকে স্তম্ভিত করে জিম্বাবুয়ের স্মরণীয় জয়

Total
0
Share