

থ্রিলার? এই ম্যাচকে তা বলাই যায়। জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ৮ রান। হাতে ২ উইকেট। এখান থেকে ম্যাচটা জেতা স্কটল্যান্ডের মতো দলের জন্য আসলেই কঠিন কিছু। হয়েছেও এমনটাই। শেষ বলের নাটকীয়তায় স্কটল্যান্ড পেল ১ উইকেটের স্বস্তির জয়। ক্যারিয়ারের সেরা এক ইনিংসে মাইকেল লিস্ক স্কটল্যান্ডকে এনে দিলেন রোমাঞ্চকর এক স্মরণীয় জয়।
মাইকেল লিস্কের অপরাজিত ৯১ রান স্কটল্যান্ডকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পথ দেখিয়েছে। স্কটল্যান্ড রান তাড়া করার অত্যাশ্চর্য ধারা অব্যাহত রেখেছে। তারা তাদের শেষ ১৪ ওয়ানডেতে ১৩টি জিতেছে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করে। মাত্র ৬১ বল খেলে ৯ চার ও চার ছয়ে ৯১ রানের হার-না-মানা ইনিংস খেলে দলের জয় নিশ্চিত করেন লিস্ক।
বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আজ বুলাওয়েতে মুখোমুখি হয় দুই ল্যান্ড; আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুর ওভারেই জোড়া উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেনের বলে গোল্ডেন ডাক হয়ে ফেরেন ওপেনার পল স্টারলিং ও অধিনায়ক অ্যান্ডি বালবার্নি। হ্যারি টেক্টর ও লরকান টাকার বিদায় নেন সমান ৬ রান করে।
আয়ারল্যান্ডের স্কোরবোর্ডের অবস্থা যখন ৩৩/৪; কুর্টিস ক্যাম্ফার উইকেটে এসে দেখান পালটা প্রতিরোধ। জর্জ ডকরেলকে নিয়ে গড়েন ১৩৬ রানের জুটি। এর আগে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন ফেরেন ৩২ রান করে। ক্যাম্ফার-ডকরেল জুটিতে স্বস্তি পায় আয়ারল্যান্ড শিবির। তবে ফিফটি হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত ৬৯ রানে জর্জ ডকরেল ফিরলে ভাঙে জুটি।
দারুণ সব স্ট্রোক্স খেলে কুর্টিস ক্যাম্ফার তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের মেডেন শতক। শেষপর্যন্ত ক্যাম্ফার দলের সংগ্রহ ২৮২ নিয়ে নিজে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ইনিংস শেষের এক বল আগে। ১০৮ বলে ক্যাম্ফারের ১২০ রানের ইনিংস সাজানো ৯ চার ও চার ছয়ে। ৭০ রানে পাঁচ উইকেট হারানো আয়ারল্যান্ড শেষপর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ২৮২ রান।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ম্যাথু ক্রসকে ইনিংসের শুরুতেই হারায় আয়ারল্যান্ড। এরপর অবশ্য দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৫০ রান। ক্রিস্টোফার ম্যাকব্রাইড একপাশ আগলে রেখে উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকলেও অপরপাশে নিয়মিত বিরতিতে উইকেটের আসা-যাওয়া। জর্জ মুনসি ১৫, অধিনায়ক রিচি বেরিংটন ১০, থমাস মেকিন্টোস ১৮ রান করতেই নিয়েছেন বিদায়।
দলীয় ১৫২ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে ফেলা স্কটল্যান্ডকে টেনে তোলার চেষ্টা চালান মাইকেল লিস্ক ও মার্ক ওয়াট। দাপুটে ব্যাটিংয়ে ফিফটির খুব কাছে থেকেও তিন রানের জন্য ছোঁয়া হয়নি ওয়াটের। তবে একা হাতে লড়াই চালান মাইকেল লিস্ক। তার বীরত্বেই শেষ বলে গিয়ে রোমাঞ্চকর জয়ের দেখা পায় স্কটল্যান্ড।
স্কটল্যান্ডের জয়ের জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রানের, হাতে দুই উইকেট। স্ট্রাইকে থাকা মাইকেল লিস্ক লং অন দিয়ে মার্ক অ্যাডায়ারকে প্রথম বলেই হাঁকান বাউন্ডারি। পরের বলে দৌড়ে ১ রান নিলে স্ট্রাইকে যান সাফইয়ান শরীফ। টপ এজ হয়ে ক্যাচ হন শর্ট থার্ডে। সমীকরণ নেমে আসে ৩ বলে ৩ রানের। ক্রিস সোল এসেই খেলেন ডট। ২ বলে দরকার তিন রান। পরের বলে লেগ বাইয়ে রান বের করে সোল। ফলে শেষ বলে দরকার ২ রানের। লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় উৎসবে মেতে উঠেন লিস্ক।