অজি পেসারদের দাপট আর বৃষ্টিতে শেষ তৃতীয় দিন

featured photo updated v 7
Vinkmag ad

পঁচাত্তর মিনিটের বৃষ্টি-বিরতি শেষে ইংল্যান্ড মাঠে নেমে তাদের দুই ওপেনারকে হারিয়ে বসে। তার আগে অস্ট্রেলিয়াকে ৩৮৬ রানে অলআউট করে ৭ রানের লিডে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে বেন স্টোকসের দল। বৃষ্টির বাগড়ায় খেলা এগোয়নি খুব বেশি। ১০ ওভার ৩ বলে ২৮ রান ও ২ উইকেট হারিয়ে টিম-বাজবল কিছুটা দিশা অন্বেষণে। এ অবস্থাতেই শেষ হয় অ্যাশেজের প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিনের খেলা।

তৃতীয় দিন শুরুর আগে ইংলিশদের করা ৩৯৩ থেকে ৮২ রানে পিছিয়ে ছিল অজিরা। আগের দিন শেষ করা উসমান খাজা ও অ্যালেক্স ক্যারি এদিনও ছিলেন ছন্দে। খাজা ১২৬ রানে ও ক্যারি ৫২ রানে নতুন দিন শুরু করেন। শুরুতেই ক্যারি নিজেকে লুফে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন নিজেই। অ্যান্ডারসনের ইনসুইঙ্গার এজ হয়ে বেয়ারস্টোর তালুবন্দি হতে গিয়েও হলো না। তবে সময় লাগে নি। অ্যান্ডারসন পরের ওভার করতে এসে ক্যারির হাতে কাট আর ফ্লিকে বাউন্ডারি খেলেন দু’টো, ম্যাজিক ওবল-সিম ডেলিভারিতে এরপরেই ক্যারির স্টাম্পে আঘাত হানলো ৪০ বছর বয়সী এই ইংলিশ পেসারের বল। ভেঙ্গে যায় ক্যারি ও খাজার ১১৮ (১৯২) রানের জুটি।

ক্যারির উইকেটের পর স্টোকস চেষ্টা করেন নানাভাবে মাঠে প্রভাব রাখতে। ফিল্ড পজিশন পরিবর্তনে আন-অর্থোডক্স কিছু বিষয় চোখে লাগতে শুরু করে। উসমান খাজার বিপরীতে রিভার্স-আমব্রেলা ধরনের ফিল্ড পজিশন সেট করেন এই ইংলিশন দলপতি। সাব-কন্টিনেন্টের ফিল্ড সেট-আপের সাথেও যা মিলে যায়। অলি রবিনসনের বল জায়গা ছেড়ে এসে খেলতে গিয়ে ইয়র্কার লেংথে পেয়ে বসেন, সরাসরি বোল্ড ছাড়া আর কিছু হয়নি সেটা। খাজার ম্যারাথন ইনিংস শেষ হয় ১৪১ (৩২১) রানে।

অধিনায়ক কামিন্স মূল্যবান ৩৮ (৬২) রান যোগ করেন। দলীয় ৩৭২ রানে খাজার উইকেট পতনের পর নাথান, বোল্যান্ড, কামিন্স নিজেদের উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন। হ্যাজেলউড ছিলেন অপরাজিত। স্টোকসের শর্ট-বল ফর্মুলা টেইল-এন্ডারদের পতন ডেকে আনে মূলত। ৩৮৬ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ড পায় ৭ রানের লিড।

ব্রড ও রবিনসনের অর্জন ৩ টি করে উইকেট। মইন আলী ২ টি, স্টোকস ও অ্যান্ডারসন পেয়েছেন ১ টি করে উইকেট। তৃতীয় দিনে পাওয়া ১ উইকেটের মাধ্যমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১১০০ উইকেটের মাইলফলক অর্জনের গৌরব অর্জন করেছেন জেমস অ্যান্ডারসন। একুশ শতকে তিনিই একমাত্র বোলার হিসেবে এই অর্জনের নজির স্থাপন করলেন।

ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের সঙ্গী ছিল বৃষ্টি। ইনিংস শুরু হয়েছিল ভালোভাবেই। দুই ইংলিশ ওপেনার ডাকেট এবং ক্রাউলি দলকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা করে যাচ্ছিলেন ধীরে-সুস্থেই। তবে ৬ ওভার ৫ বলে বৃষ্টির হানায় বিনা উইকেটে ২৬ রানে খেলায় বিরতি পড়ে। সেই বিরতি গড়ায় পঁচাত্তর মিনিটে।

এরপর মাঠে যতক্ষণ খেলা হয় অজি বোলারদের সিম-সুইং সামলানো মুশকিল হয়ে পড়ে ইংল্যান্ড দলের জন্য। পরবর্তী বৃষ্টি নামার আগে মাত্র ২০ মিনিট আর ২২ বলের খেলা; এতেই দুই ওপেনার ধরাশায়ী। কামিন্স ফেরান ডাকেটকে। আউটসাইড-অফ স্টাম্পের বল অ্যাওয়ে শটে খেলতে গিয়ে গালিতে ক্যামেরন গ্রিনের হাতে ধরা পড়েন এই ওপেনার। তার দুই বল পরে নতুন ওভারের প্রথম বলে বোল্যান্ডের শিকার হন ক্রাউলি। টিপিক্যাল বোল্যান্ড ডেলিভারি অর্থাৎ ফোর্থ-স্টাম্প চ্যানেলে ছাড়া বল ফরোয়ার্ডে এসে খেলতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটরক্ষক ক্যারির হাতে উইকেট প্রদান। এটা ছিল নবম ওভারের প্রথম বল। এরপর কামিন্স দশম ওভার করতে আসলে বৃষ্টির বিপত্তিতে খেলায় আবারো বিরতি পড়ে।

সেই বিরতি থেকে খেলা আর ফেরেনি। ১০ ওভার ৩ বলে ২৮/২ স্কোরকার্ডে তৃতীয় দিনের শেষ দেখেছে এজবাস্টনের দর্শকেরা। তবে বলা যায়, অজিরা কিছুটা এগিয়ে রইল। দ্রুত দুই উইকেট পতন তাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। চতুর্থ দিনে ভালো শুরুর অপেক্ষায় এখন অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের অপেক্ষা পতন কাটিয়ে মানসম্মত একটি লক্ষ্যমাত্রা।

৯৭ ডেস্ক

Read Previous

এক ব্রডের হাতেই ১৫ বার; ওয়ার্নার ভাবছেন আর কত?

Read Next

‘ভারত যদি এখানে আসতে না চায় তাহলে নরকে যেতে পারে’

Total
0
Share