

একমাত্র টেস্টে আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এটি ২১ শতাব্দীতে রানের দিক থেকে সবচেয়ে বড় জয় এবং সামগ্রিকভাবে টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম জয়। এমন দুর্দান্ত জয়ে ভূমিকা রাখেন দলের প্রায় সবাই; কিন্তু নায়কের স্টাইলে পুরো টেস্টের চিত্রগল্প একাই কাঁপিয়ে দিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্ত একসময় ছিলেন রানখরায়, এখন ফিরে এসে হয়েছেন ম্যাজিশিয়ান। আরও কিভাবে ভালো করবে শান্ত? টোটকা দিলেন অধিনায়ক লিটন।
ঢাকা টেস্ট খেলতে নামার আগে ২২ টেস্টের ক্যারিয়ারে ২৪.৭০ গড়ে শান্ত’র রান ছিল ১ হাজার ১৩, যেখানে শতক ২টি ও অর্ধশতকের ইনিংস ছিল ৩টি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্টেই শান্ত একের পর এক বদলালেন নিজের পরিসংখ্যান। নামের পাশে যোগ করলেন আরও দুই সেঞ্চুরি। এই ম্যাচে শান্তর ব্যাট থেকেই আসে সর্বোচ্চ ২৭০ রান। প্রথম ইনিংসে ক্রিজে ছিলেন ২৭৬ মিনিট, পরের ইনিংসে ১২৪ রান করেছেন ২৫৮ মিনিটে।
আফগানিস্তান টেস্ট নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে বিশেষ কিছু। ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে থাকা শান্ত হাকালেন ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরি। এক বছর আগেও শান্তকে তার ধারাবাহিক খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে পড়তে হয়েছিল নানা সমালোচনায়। লিটন দাস নিজেও একই রকম সময় নিজের সাথেও হতে দেখেছেন। শান্তকে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার পরামর্শে দিয়ে লিটন দাস সংবাদ সম্মেলনে এসে বললেন,
‘দেখেন, শান্তর জায়গায় আমিও ছিলাম কিছুদিন আগে। শান্তর সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়েছে আগে। জানি না কতটুকু হেল্প হয়েছে তার। আমি যেটা বিশ্বাস করি, তার অনুশীলনের পদ্ধতিতে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেভাবে অনুশীলন করত, তার থেকে একটু গোছানো এখন।’
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের পর সাদা পোশাকের ক্লাসিক সংস্করণেও ব্যাটে রানের ফোয়ারা ছোটানো শান্তর খেলা দেখে মুগ্ধ অধিনায়ক লিটন দাস। নিজের দুর্বলতা খুঁজে বের করে তা নিয়ে কাজ করায় শান্তর এমন পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করছেন লিটন,
‘আপনি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে থাকবেন, অনেক কিছু জানবেন। আপনার সমস্যা কী হচ্ছে, কোন জায়গা আপনার শক্তি, কোন জায়গায় দুর্বল—এ বিষয়গুলো ভালোভাবে খুঁজে বের করেছে। সেগুলো নিয়ে অনুশীলন করছে। এটা অনেক ভালো দিক, আমি চাই ও সব সময় এটা করে যাক। যেভাবে খেলছে, এটা সব সময় ধরে রাখুক। কিন্তু একটা সময় আবার খেলোয়াড়দের এমন সময় আসবে। কিন্তু সে যেন এই জিনিসটা ধরে রাখতে পারে। কীভাবে সে সফল হয়েছে, এটা যদি বুঝতে পারে, আমার মনে হয় সব সময় করতে পারবে জিনিসটা।’
পাঁচদিনের টেস্ট শুরুর পর সবচেয়ে বড় জয় এতোদিন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দখলে। ২০১৮ সালে জোহানেসবার্গ টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ৬১২ রানের টার্গেট দিয়ে ৪৯২ রানে হারায় প্রোটিয়ারা। এই রেকর্ড চুরমার করে এবার নতুন বিশ্বরেকর্ড লিখল লিটন দাসের দল।