আন্দোলনের পরও কেন সাকিব-তামিম’রা দূরে?

ALM 0313 scaled
Vinkmag ad

আবারও কোয়াবের নেতৃত্বে দুর্জয়-দেবব্রত। ২০০৮ সালে কোয়াব সৃষ্টির সেই কমিটির অধীনেই এতো বছর ধরে চলছে সংগঠনটি। এবারও আসেনি পরিবর্তনের হাওয়া। ফলে কোয়াব ক্রিকেটারদের সংগঠন হলেও নেতৃত্বে নেই বর্তমান কিংবা সদ্য অবসরে কোনো ক্রিকেটার। মাশরাফি-তামিমরা কি নিজেদের অনাগ্রহ থেকে দায়িত্বে আসছেন না নাকি অন্য কোনো অজানা কারণে তারা দূরে? ফের সভাপতি হয়ে আগের চেয়ারে বসা নাইমুর রহমান দুর্জয় বলছেন, সবার সঙ্গেই কোয়াব যোগাযোগ করেছে। নির্বাচনে নতুনদের অংশ না নেওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করলেন দুর্জয়।

দেশের ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি হয়ে আগের চেয়ারেই নাঈমুর রহমান দুর্জয়। কোয়াবের পদ থেকে দুর্জয় সরে যাবেন বলে ঘোষণা দিলেও আসছে না নতুন নেতৃত্ব। আজ নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন মুখ আসার বদলে কোনো সিনিয়র ক্রিকেটার কিংবা দেশের ক্রিকেটের সংশ্লিষ্ট কেউ শীর্ষ পদ গুলোতে দায়িত্ব নেওয়ার আগ্রহই দেখায়নি। ফলে একপ্রকার বাধ্য হয়েই দুর্জয়-দেবব্রত’র কাঁধে উঠল ফের কোয়াবের দায়িত্ব।

২০১৯ সালে যখন দেশের সর্বস্তরের ক্রিকেটারদের আন্দোলন হয়, তখন দাবী হিসেবে বেশ জোড়ালোভাবে উত্থাপিত হয়েছিল ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) কমিটির বিলোপ সাধন। দাবীর প্রথমটিই ছিল কোয়াবের শীর্ষ কর্তাদের পদত্যাগ। কিন্তু এরপর একে একে পালটাতে থাকে চিত্র। দায়িত্ব রয়ে যায় আগের কমিটির হাতেই।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ শেষে সাকিব, তামিম, মুশফিক আপাতত দেশের বাহিরে। মাশরাফি বিন মর্তুজা দেশে থাকলেও আসেননি কোয়াবের বার্ষিক এজিএম ও কাউন্সিলে। তবে এদিন অনুষ্ঠানস্থলে দেখা গেছে মোহাম্মদ আশরাফুল, তুষার ইমরান, ইলিয়াস সানি, নাজমুল হোসেন শান্ত, নুরুল হাসান সোহান, মেহেদী হাসান মিরাজ, জিয়া উর রহমানদের। কিন্তু তারা কেবলই অতিথি হয়ে আসলেন।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর অফিসিয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব ইস্যুতে প্রেসিডেন্ট নাইমুর রহমান দুর্জয়ের বক্তব্য,

‘আমাদের তাদের সবার সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। তাদেরকে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের সাথে আমাদের ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে। তামিম, সাকিব যাদেরকে আমরা রিচ করতে পেরেছি, তারা তাদের থাকতে না পারার বিষয়টি জানিয়েছে। একটা সিরিজ শেষ হয়েছে, তাদের পরিবারকে সময় দেওয়ার জন্য থাকতে পারেনি। ওরা এ পর্যন্তই আমাদের ইনফর্ম করেছে।’

‘আমার সাথে তো আজকে ভোর রাত তিনটা পর্যন্তও সাকিবের যোগাযোগ হল। তাহলে দূরত্বটা কোথায়?’

দুর্জয়ের মতে ক্রিকেটারদের নির্বাচনে না আসার কারণ, ‘নির্বাচনে অংশ নেয়নি ওরা হয়তো চিন্তা করেছে আমরা এখনো খেলছি, আমরা আরও খেলব। আমি ব্যক্তিগতভাবে আহ্বান করেছি, ‘আসো দায়িত্ব নাও। আমরা তো অনেকদিন করলাম।’ আসলে এটাতো জোর করার বিষয় না। আগ্রহের বিষয়। ওরা হয়তো খেলাধুলায় আরও সময় দিতে চায়। বর্তমান জাতীয় দলের খেলোয়াড়, এখনও জাতীয় দলকে সেবা দিচ্ছে। তবে আমার মনে হয় জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটারের চেয়ে আরও ভালো হত যারা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছে বা সদ্য জাতীয় দল থেকে অবসরে গেছে, বর্তমান জাতীয় দলে নেই তারাও আসতে পারতো।’

সাবেক ক্রিকেটার ও বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় ক্রিকেট অঙ্গনের সাথে দুইভাবে সম্পৃক্ত। দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক তিনি, আবার ক্রিকেটারদের সংগঠন ক্রিকেটার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সভাপতি। সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পাল বিসিবির অধীনস্থ কর্মকর্তা যিনি কখনো লজিস্টিক ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন আবার কখনো ম্যাচ রেফারির গুরুদায়িত্বে।

তবে দুর্জয় তার কথাতেই বিষয়টা আরও পরিষ্কার করে দিলেন, বোর্ডের ভেতরে থেকেই কোয়াবের জন্য কাজ করবেন। যেটা কোয়াবের জন্যই ভালো,

‘ক্রিকেটারদের এক্সেসটা বোর্ডে বাড়ার জন্য আমরা তিন জন সাবেক অধিনায়ক আছি। যার মধ্যে একজন ক্যাটাগরি থ্রিতে নির্বাচন করেছে। বাকি দুইজন আমরা ডিভিশন থেকে এসেছি। অন্য যারা আছেন আমাদের মিঠু ভাই আছেন, তানভীর আহমেদ টিটু, মাহবুব আনাম ভাই, জালাল ইউনুস ভাই আছেন। অনেকগুলো সাবেক ক্রিকেটার আছেন। ফলে ক্রিকেটারদের এক্সেসটা বাড়ার কারণে আমাদের কাজগুলি অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। এখন কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টে ক্রিকেটাররাই যদি না যায়, আমরা তো যাব না। কাজেই ক্রিকেটারদের আগ্রহ বা চাহিদা আমরা বোর্ডের ভেতরে থেকে যদি সমাধান করতে পারি, আমার মনে হয় এর চেয়ে ভালো কোনো অপশন নেই।’

৯৭ প্রতিবেদক

Read Previous

বাংলাদেশ ভুলে গেলেও আশরাফুল, ইমরুলদের ভুলেনি বিশ্ব

Read Next

কোয়াবের পুন:নির্বাচিত কমিটিকে শুভেচ্ছা জানালো বিসিএসএ

Total
0
Share