

এসেক্সের ক্লাউড কাউন্টি গ্রাউন্ড সাক্ষী হয়ে থাকল বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর এক জয়ের। টাইগার বোলারদের ম্লান থাকার দিনে আইরিশ ব্যাটাররা ৪৫ ওভার খেলে স্কোরবোর্ডে জমা করে ৩১৯ রানের পাহাড়সম সংগ্রহ। আয়ারল্যান্ডের রানের পাহাড় টপকাতে নেমে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন শান্ত। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় বাংলাদেশ পায় ৩ উইকেটের জয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের দেড়শতম জয়ের দেখা পেল।
ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম শতরান করলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রতিভাকে সম্পূর্ণ করতে শুধু দরকার ছিল একটি শতরানের। এবার সেটাও পেলেন, দলের কঠিন সময়ে। ২০১৮ সালে অভিষেক, ২১টি ইনিংসের পর নিজের প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি করলেন।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই বিদায় নেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আরেক ওপেনার লিটন দাসের ব্যাট থেকে আসে ২১ বলে ২১। দলীয় ১০১ রানে কুর্টিস ক্যাম্ফারের শিকার সাকিব আল হাসান। তার ২৭ বলের ইনিংসে ৫ চার, করেন ২৬।
এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটে ছুটে চলে বাংলাদেশ। দাপট দেখিয়ে দু’জনই পূর্ণ করেন ফিফটি। দারুণ সব স্ট্রোক্সের পসরা সাজিয়ে শান্ত পান তার মেডেন ওয়ানডে সেঞ্চুরির দেখা। শান্ত’র ব্যাট আবারও প্রমাণ করল তার ক্যারিশম্যাটিক ক্ষমতা।
ডকরেলের এই ওভারেই উইকেট হারান হৃদয়। ভাঙে ১৩১ রানের অনবদ্য এক জুটি। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে তাওহীদ হৃদয়ের ৬৮ রানের ইনিংস সাজানো ৫ চার ও ৩ ছয়ে। শতকের পর ইনিংস বেশি পথ টানতে পারেননি শান্ত। ক্যাম্ফারকে আগের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে পরের বলেই ক্যাচে বিদায় শান্ত। ৯৩ বল খেলে করেন ১১৬ রান, তার এই ইনিংসে রয়েছে ১২টি বাউন্ডারি এবং তিনটি ওভার বাউন্ডারি।
বাংলাদেশকে জয় ৬৩ রান দূরে রেখে শান্ত ফেরেন সাজঘরে। মিরাজ শুরু থেকেই মারমুখী, তবে করতে পারেননি ১৯ রানের বেশি। এরপর তাইজুলকেও হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ১০ বলে ১১ রানের সমীকরণ। বাকি কাজটা সারেন মুশফিকুর রহিম ও শরিফুল ইসলাম।
শেষ ওভারে বাংলাদেশের দরকার ছিল ৫ রান। প্রথম দুই বলে ডট খেলেন মুশফিক। পরের বলে হাই ফুলটস, নিশ্চিত ছয় হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ হন মুশফিক। আম্পায়াররা ডাকেন নো বল। ফ্রি হিটে উইকেটকিপারের মাথার উপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩ বল আগেই দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। ২৮ বলে ৩৬ রানের হার-না-মানা ইনিংস খেলে মুশফিকের রুদ্ধদ্বার ফিনিশিং!
এর আগে অবশ্য টস হেরে আগে ব্যাট করার সুযোগ পায় আইরিশরা। তবে ম্যাচ নেমে আসে ৪৫ ওভারে, ৪২ তম ওভারের শেষ বলে এবাদতের বলে যখন টেক্টর বোল্ড হন, দলের রান তখন ২৮২! টেক্টরের নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে ১৪০ রান। ১১৩ বল খেলা টেক্টর ৭ চারের সাথে হাঁকান ১০ টি ছক্কা!
টেক্টরের দিনে কম যাননি জর্জ ডকরেলও। দেড়শর বেশি স্ট্রাইক রেটে ৪৭ বলে ৭৪ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। হাঁকান ৩ বাউন্ডারি, ৪ ওভার বাউন্ডারি। এছাড়া তিনে নামা অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নির ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। মার্ক অ্যাডায়ার ৮ বলে ২০ রান করে অপরাজিত থাকলে ৪৫ ওভারে ৩১৯ রান তোলে আইরিশরা।
আয়ারল্যান্ডের রানের পাহাড় গড়ার দিনে ৫.৩৩ ইকোনমিতে ৯ ওভারে ৪৮ রান দেন হাসান মাহমুদ, নেন ২ উইকেট। শরিফুল ইসলাম ২ উইকেট নিলেও ৯ ওভারে দেন ৮৩ রান। ১ টি করে উইকেট নেন এনাদত হোসেন ও তাইজুল ইসলামও।