

ক্যাথরিন শিভার ব্রান্ট, ইংল্যান্ড নারী ক্রিকেট দলের ডান হাতি এই পেসার যার অভিষেক হয় ২০০৪ সালে, দেশের হয়ে খেলেছেন ২৬৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ এবং নিয়েছেন ৩৩৫ উইকেট।
৩টি বিশ্বকাপ এবং ৪টি এশেজ জয়ী ক্যাথরিন ব্রান্ট ইংল্যান্ড নারী দলের হয়ে টি টোয়েন্টি এবং ওডিআইতে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন।
অবসর ঘোষণার বিবৃতিতে ব্রান্ট বলেন, ‘১৯ বছর পর আমার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষে আজ আমি যেখানে আছি সেখান থেকে আমার জন্য সিদ্ধান্তটা নেয়ার জন্য আমি কখনোই প্রস্তত ছিলাম না। কিন্ত আমাকে সিদ্ধান্ত পৌঁছাতে হচ্ছে এবং এটা আমার জীবনের অন্যতম কঠিন এক সিদ্ধান্ত। আমি যা করে গেলাম তার কোনো কিছুরই স্বপ্ন বা আশা ছিল না আমার। আমি শুধু চেয়েছিলাম আমার পরিবারকে গর্বিত করতে। এবং আমি যা পেয়েছি তা অবশ্যই তা আমার প্রত্যাশার অনেক অনেক ঊর্ধ্বে।’
নিজের প্রতি কৃতজ্ঞ প্রকাশের মতো অনেক কিছু আছে, ক্রিকেট আমাকে লক্ষ্য দিয়েছে, আমার আজকের এই অস্তিত্ব, নিরাপত্তা, অনেক সোনালী স্মৃতি এবং সেরা বন্ধু দিয়েছে যারা সারাজীবন থাকবে। আমি যে ট্রফি এবং খেতাব অর্জন করতে চেয়েছিলাম তার সবকিছুই অর্জন করতে পেরেছি। তবে আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল আমি ন্যাটে যে সুখ পেয়েছি।’
‘এতদিন ধরে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করা একটি বিশাল সম্মান এবং আমি আমার সময়কে বিশেষ করে তোলার জন্য অতীত ও বর্তমান ইংল্যান্ড ক্রিকেট পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। সমর্থকদের জন্য বলতে চাই আপনারা দুর্দান্ত, আপনাদের ছাড়া আমরা আজ যা কিছু তা অসম্ভব এবং আপনারা খেলার মাঠে যে পরিবেশ তৈরি করেন তা অপরিবর্তনীয়।’
‘কৃতজ্ঞতা আমার পরিবারের প্রতি যারা সবসময় আনার পাশে ছিল এবং আমার খেলার প্রতি সহনশীল ছিল। এদের ছাড়া আমি কখনোই এতদূর আসতে পারতাম না।’
ডেপুটি প্রধান নির্বাহী অফিসার এবং ইংল্যান্ড নারী দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্লেয়ার কন্নর ক্যাথরিন ব্রান্টোর প্রথম অধিনায়কও ছিলেন। তিনি জানান, ‘ক্যাথরিন ক্রিকেটের জন্য বিশেষ করে নারী ক্রিকেটের জন্য অনেক করেছে। সে একজন অবিশ্বাস্য খেলোয়াড় যিনি ২০ বছর যাবৎ ক্রিকেটকো নিজের সবকিছু দিয়েছেন।’
‘ক্রিকেটাররা যখন অবসর নেয়, আমরা যথাযথভাবে তাদের দক্ষতা, তাদের রান এবং উইকেট, তাদের রেকর্ড এবং প্রশংসা উদযাপন করি। কিন্তু ক্যাথরিন ক্রিকেট খেলাকে যা দিয়েছেন তা সেসবের বাইরেও বিস্তৃত। তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রভাব তার মানবিক গুণাবলীর মাধ্যমে হয়েছে – আমাদের খেলাধুলাকে এগিয়ে নেওয়ার তার আবেগ, সতীর্থদের প্রতি তার যত্ন, উল্লেখযোগ্য ইঞ্জুরির ধাক্কা সত্ত্বেও সবসময় পরিণত এবং আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসার তার ইচ্ছার মাধ্যমে।’
‘যে সময়টা তিনি ভক্তদের সাথে কাটিয়েছেন, অটোগ্রাফ স্বাক্ষর করেছেন এবং অনেক ছেলে, মেয়ের সাথে ছবি তুলেছেন যারা সকলেই ক্যাথেরিনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছ। এই শিশুদের মধ্যে অনেকেই ক্যাথরিনকে বছরের পর বছর ধরে খেলতে দেখে থাকবে এবং নিজেরা খেলা শুরু করতে অনুপ্রাণিত হবে। এটি একটি অবিশ্বাস্যভাবে শক্তিশালী উত্তরাধিকার যার জন্য তার গর্বিত হওয়া উচিত।’
‘এখন আমরা যে পর্যায়ে আছি তার থেকে একেবারেই ভিন্ন সময়ে ক্যাথরিন তার ক্রিকেট জীবন শুরু করে এবং আমরা তার কাছে ইংল্যান্ড ক্রিকেটে আজকের এ অবস্থার জন্য ঋণী এবং যেভাবে সে ক্রিকেটের উন্নতি করেছে এবং দর্শক টেনেছে সেজন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা।’
‘সে এই খেলার একজন কিংবদন্তি হয়ে থাকবে এবং আমি ইসিবির সবার পক্ষ হতে ক্রিকেটে তার অবদানের জন্য তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তার সাফল্যমন্ডিত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেকে অবসরের জন্য আমরা তাকে শুভকামনা জানাই।’
ক্যাথরিন-ব্রান্ট ইতোমধ্যে ঘরোয়া লিগ ক্রিকেট থেকেও নিজের অবসরের ঘোষণা দিলেও তিনি দি হান্ড্রেড লিগে খেলা চালিয়ে যাবেন।