

চলতি বছরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে খেলা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সুযোগ পাননি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে, তার নাম নেই একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অ্যাওয়ে সিরিজেও। বিশ্বকাপের বছরে টানা দুই সিরিজে নাম না থাকা বড় বার্তাই দেয়। সেই সত্য আড়াল করলেন না সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন।
৩৭ বছর বয়সী মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিইয়েছেন গেল ১৫ বছরে। টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেও সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো অবসর নেননি। তবে দুই ফরম্যাটেই দলে সুযোগ মিলছে না। নিজের পড়তি ফর্ম তো আছেই, সাথে তার বদলে সুযোগ পাওয়া তরুণরা পারফর্ম করছেন।
সবমিলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বিশ্বকাপ দলে থাকার স্বপ্ন দিনকে দিন ফিকে হচ্ছে। মিরপুরে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে খালেদ মাহমুদ সুজনও শোনালেন সেই কথা। জাতীয় দলের নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ না থাকলেও আপাতদৃষ্টিতে অবস্থা দেখে সুজন বলছেন রিয়াদকে তিনি বিশ্বকাপে দেখছেন না।
সুজন বলেন, ‘আমি ন্যাশনাল সেটাপে এখন একেবারেই নাই। সিলেকশনে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা আমি জানতেও চাই না। মিডিয়া থেকেই আমি জানি কি হচ্ছে না হচ্ছে। রিয়াদ আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার অবশ্যই। বাংলাদেশ দলকে সে অনেক ম্যাচ জিতিয়েছে। কিন্তু যদি আমি সত্যি বলি, যেহেতু ও জাতীয় দলে নেই, আমি যেভাবে দেখছি, রিয়াদকে আমি বিশ্বকাপে দেখছি না।’
সুজন কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘কারণ যদি তাকে বিশ্বকাপে দেখতাম এই সিরিজগুলোতে রিয়াদ থাকতো, কারণ বিশ্বকাপ তো আর বেশিদিন নাই। হয়তো হৃদয় ওখানে ভালো করছে, আফিফও দলের বাইরে আছে। তারপরেও ডিপিএলে সুপার লিগে রিয়াদ নিজেকে কীভাবে মেলে ধরে সেটা দেখার বিষয়। রিয়াদ যখনই জাতীয় দলে খেলেছে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ব্যাটিং করেছে। যেখানে আপনি হিরোও হতে পারেন, জিরোও হতে পারেন। রিয়াদ দুটোর স্বাদ ই পেয়েছে। এমন অনেক ম্যাচ আছে রিয়াদ একাই দলকে জিতিয়েছে।’
রিয়াদের অতীত ইতিহাস আমলে আনলেও বর্তমান পরিস্থিতিকেই মূল কথা বলছেন সুজন। তবে ২১৮ ওয়ানডে খেলা রিয়াদের পক্ষে থাকবে তার অভিজ্ঞতা এমনই মনে করেন সুজন।
সুজন বলেন, ‘আসলে মূল কথা হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতিটা আসল। রিয়াদকে দলে কতটুকু দরকার বা ওর বদলে যারা খেলছে পারফর্ম করছে কি না। যদি পারফর্ম করে, দল যদি সন্তুষ্ট থাকে; তাহলে রিয়াদের সুযোগ কম থাকবেই। যদি ওরকম না হয়, রিয়াদের অভিজ্ঞতা তো আছেই। যেকোনো সময় ব্যাক করলে পারফর্ম করতে পারবে সেটা আমরা সবাই বিশ্বাস করি। সময় তো আছে, একদমই রিয়াদ যে বাহির হয়ে গেছে তা না। কিন্তু আমার মনে হয় বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ আনা ঠিক হবে না। যদি ঐ চিন্তাই থাকে তাহলে তার আগেই ওকে এনে সিরিজ ও ম্যাচ দিতে হবে। কারণ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ঘরোয়া ক্রিকেটে আকাশ-পাতাল পার্থক্য সেটা আমরা সবাই জানি। দেখা যাক কি হয়।’
সুজন বিশ্বাস করেন রিয়াদকে দলে না রাখার কারণ জানিয়ে তার সাথে যোগাযোগ ঠিক রেখে সঠিক বার্তা দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। আফিফ হোসেন ধ্রুবর বাদ পড়ার কারণ জানেন বলে সুজন জানান সিনিয়রদের বিদায় সুন্দরভাবেই হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, ‘এটা যে বলা হয়নি (যে রিয়াদ আপনি আর আমাদের ভাবনায় নেই) এটাও ঠিক কিনা আমি জানি না। কমিউনিকেশনটা কি হয়েছে বা না হয়েছে তা আমি জানি না। অবশ্যই হবার কথা এটা। কারণ, রিয়াদ, মুশফিক, সাকিব, তামিম- এরা তো বাংলাদেশের সেরা ক্রিকেটার। মাশরাফি সহ পঞ্চপান্ডবের কথা যখন বলি, ওদের অবদানটা তো কখনোই অস্বীকার করা যায় না। এক্সিট টা সুন্দর ভাবে হবে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিকেট যেনো প্রপারলি হয়, যেমন আফিফের বাদ পড়ার পেছনেও হয়তো কারণ আছে। তারা চায় আফিফ বেটার হয়ে ফিরুক। আফিফ যেহেতু আমার দলে খেলে ওর সাথে আমার কথা হয়। রিয়াদের সঙ্গে আমার অনেকদিন কথা হয় না। যেটাই হোক, সিনিয়রদের এক্সিটটা স্মুথলি হওয়া দরকার। বাদ তো পড়তেই পারে, যেকেউ বাদ পড়তে পারে। এমন নয় যে কারও পজিশন পার্মানেন্ট। তবে ওয়েটা হেলদি হতে হবে, যদি যুক্তি সঠিক থাকে তাহলে রিয়াদও সেটা মেনে নিবে।’