

প্রথম দিনের শেষ সেশন থেকেই জোহানেসবার্গের উইকেট আচমকাই বদলে যায়। দিনের শেষ মূহুর্তে তাই দ্রুত কয়েক উইকেট হারায় স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকা। এর ধারাবাহিকতা ছিল দ্বিতীয় দিনেও । স্বাগতিকদের ৩২০ রানের জবাবে ক্যারিবীয়রা গুটিয়ে যায় মাত্র ২৫১ রানে। ১৯৩ রানে ৯ উইকেট হারানোর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৫১ রানের সংগ্রহ পায় জেসন হোল্ডারের হার না মানা অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংসে।
বৃহস্পতিবার জোহানেসবার্গের দ্যা ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে প্রোটিয়াদের ৩২০ রানের জবাবে খেলতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলীয় ৫১ রানেই হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। শুরুটা ত্যাগনারায়ণ চন্দরপলের (১) রান আউটে, দক্ষিণ আফ্রিকার নতুন টেস্ট অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার দারুণ থ্রোতে ত্যাগনারায়ণ কাটা পড়েন রান আউটে। এরপর গেরাল্ড কোয়েটজে ও কাগিসো রাবাদা চেপে ধরেন ক্যারিবীয়দের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পঞ্চাশ ছাড়াতেই দুজনে একে একে ফেরান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (১৭), জার্মেইন ব্ল্যাকউড (৬) এবং রেমন রেইফার (১৫)। ফলে ৫১ রানেই ৪ উইকেট নেই উইন্ডিজের।
পঞ্চম উইকেটে রস্টন চেজ ও কাইল মায়ের্স মিলে ৫২ রানের জুটি গড়লে ক্যারিবীয়দের রান একশো পার হয়। একশো পার হতেই আবার দ্রুত দুই উইকেট হারায় ব্র্যাথওয়েটরা। দলীয় ১০৩ রানে রস্টন চেজ (২৮) এবং দলীয় ১১৬ রানে কাইল মায়ের্স (২৯) ফিরেন সাজঘরে। সেট এই দুই ব্যাটারকে ফেরান উইয়ান মুলডার ও রাবাদা। ফলে ১১৬ রানেই ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে এক প্রকার ব্যাটিং বিপর্যয়েই পড়ে উইন্ডিজ।
এরপর সাতে নামা জেসন হোল্ডারের ব্যাটে আড়াইশো পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুরুতে তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন জশুয়া ডা সিলভা। অষ্টম উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৪১ রান। তবে ডা সিলভা ছাড়া আর কেউ হোল্ডারের যোগ্য সঙ্গী হতে পারেননি। দলীয় ১৫৭ রানে ডা সিলভা ব্যক্তিগত ২৬ রানে সিমন হারমারের বলে বোল্ড হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর দ্রুত আরও দুই উইকেট হারায় উইন্ডিজ; দলীয় ১৬২ ও ১৯৩ রানে ফিরেন আলজারি জোসেফ (৪) ও কেমার রোচ (১৩)। এ দুজনকে ফেরান কেশব মহারাজা ও গেরাল্ড কোয়েটজে। ফলে ১৯৩ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৩ রানে ৯ উইকেট হারানোর পর উইন্ডিজের সংগ্রহ আড়াইশো ছাড়িয়ে যায় জেসন হোল্ডারের একক লড়াইয়ে। দশম উইকেটে ৫৮ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে যান ২৫১ রানে৷ শেষ ব্যাটার হিসেবে গুদাকেশ মতি দলীয় ২৫১ রানে আউট হলে ক্যারিবীয় ইনিংস। একপ্রান্ত আগলে রেখে উইকেট কামড়ে পড়ে থাকা হোল্ডারের লড়াই থামে যোগ্য সঙ্গীর অভাবে। দিন শেষে হোল্ডার অপরাজিত ছিলেন ১১৭ বলে ৮১ রানের ঝলমলে এক ইনিংস উপহার দিয়ে। ৮ চার এবং ৪ ছক্কায় ৮১ রানের ইনিংসটি সাজান হোল্ডার।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৪ ওভারে ৪১ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন গেরাল্ড কোয়েটজে। এছাড়া ২টি করে উইকেট শিকার করেন রাবাদা ও সিমন হারমার এবং ১টি করে উইকেট শিকার করেন মুলডার ও মহারাজ।
এর আগে ৭ উইকেটে ৩১১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করা দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে যায় ৩২০ রানে। প্রোটিয়াদের শেষ ৩ ব্যাটার মিলে যোগ করেন মাত্র ৯ রান। কাইল মায়ের্স ও আলজারি জোসেফ মিলে মাত্র ১৮ বলে ব্যবধানে শেষ তিন উইকেট তুলে নেন। প্রথম দিন এইডেন মার্করাম (৯৬) ও টিন ডি জর্জি (৮৫) জোড়া ফিফটিতে ৩১১ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ৯ ওভারে ৩২ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন কাইল মায়ের্স। এছাড়া আলজারি জোসেফ ও গুদাকেশ মতিও নেন ৩টি করে উইকেট। একটি উইকেট পান জেসন হোল্ডার।