

রাওয়ালপিন্ডিতে পিএসএলের ২৩ তম ম্যাচ। মুখোমুখি দুই শক্তিশালী ফ্রাঞ্চাইজি লাহোর কালান্দার্স এবং পেশোয়ার জালমি। কাগজে কলমে টেবিল টপার কালান্দার্সের জন্য ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ না হলেও কালান্দার্স ক্যাপ্টেন শাহীন শাহ আফ্রিদির জন্য বিশেষ একটা দিন বলা যেতে পারে।
ম্যাচ শুরুর আগেই শাহীন শাহ আফ্রিদির বাবা হঠাৎ মাঠে হাজির। শাহীনের পিঠ চাপড়ে বাহবা দেওয়ার পর একে একে রাশিদ খান, স্যাম বিলিংস, ডেভিড ভিসাসহ তার দলের অন্যান্য সতীর্থদের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এবার মাঠের লড়াইয়ে বাবর আজম টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন। ইনিংসের শেষটুকু বিবেচনায় না নিলে তার সিদ্ধান্ত যথার্থই ছিল।
দুই ওপেনারের ফিফটির সাথে ১০৭ রানের ওপেনিং পার্টনারশিপ। শেষ ৩৯ রানে ৮ উইকেট না হারালে ২০৮ রানের টার্গেটটা পাহাড়সম করতে পারত বাবর বাহিনী।
বরাবরের মতোই আলোচনায় থাকা সাইম আইয়ুব ৩৬ বলে ৬৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অসাধারণ সূচনা করেন পেশোয়ার ব্যাটিং ইনিংস। অপর প্রান্ত থেকে উইকেট আগলে সাপোর্টিং ভূমিকা রাখেন ক্যাপ্টেন বাবর আজম।
রাশিদ খানের হাত ধরে কালান্দার্সের প্রথম সফলতা আসলে মোহম্মদ হারিসও উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তিনিও রাশিদ খানের বলে সিকান্দার রাজাকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। দলীয় ১৬৮ রানে বাবর আজম হারিস রউফের ঘূর্ণিতে কাটা পড়লে পেশোয়ারের রানের মিছিল মন্থর হয়ে পড়ে। শেষে টম কোহলার ক্যাডমোরের ১৬ বলে ৩৬ রানের মারকুটে ব্যাটিংয়ে ২০০ এর কোটা পার করে পেশোয়ার জালমি।
কালান্দার্সের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ সফলতা আসে শাহীন শাহ আফ্রিদির বোলিংয়ে। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। এছাড়া হারিস রউফ, জামান খান, রাশিদ খান পান দুটি করে উইকেট।
বিশাল রানের পাহাড় তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ছন্নছাড়া কালান্দার্স ব্যাটার। মাত্র ২১ রানে ৪ উইকেট হারাালে ম্যাচের গতিপথ অনেকটা স্পষ্ট হয়ে উঠে দর্শকদের কাছে।
তবে ৬ এ নেমে শাহীন শাহ আফ্রিদির সজোরে ছয় চার খেলাটা বেশ উপভোগ করেছেন দর্শক সারির সকলে। আফ্রিদি এবং তালাত, দলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টাটা খুব ভালোভাবেই চালাচ্ছিলেন। পেসার আফ্রিদি তুলে নেন ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নিজের প্রথম ফিফটি।
এরপর ওয়াহাব রিওয়াজের বলে আফ্রিদি ফিরলে সিকান্দার রাজা দলের হাল ধরেন। হুসেইন তালাতের ৩৭ বলে ৬৭ আর সিকান্দার রাজার ৭ বলে ২০ এর পর অন্য কোনো ব্যাটার দলের জন্য রান করে অবদান রাখতে পারে নি।
এদিনে জালমির হয়ে সফল বোলার ছিলেন ওয়াহাব রিয়াজ। ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রানের খরচায় নেন ৩টি উইকেট। আরশেদ ইকবালও সমান ৩টি উইকেট নিজের নামের পাশে লিখান। এছাড়া আজমতউল্লাহ ওমারজাই ২টি এবং আমীর জামাল ১টি উইকেট পেলেও আফগান সেনসেশন মুজিবুর রহমান ছিলেন উইকেটশূন্য।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পেশোয়ার জালমিঃ ২০৭/১০ (২০ ওভার), সাইম আইয়ুব ৬৮(৩৬), বাবর আজম ৫০(৪১),, মোহাম্মদ হারিস ৯(৬), টম কোহলার ক্যাডমোর ৩৬(১৬), রোভমান পাওয়েল ৯(৫), হাবিবুল্লাহ খান ১২(৭), আমীর জামাল ৫(৩), আজমতউল্লাহ ওমারজাই ০(২), ওয়াহাব রিয়াজ ০(১), মুজিবুর রহমান ১(১), আরশেদ ইকবাল ১(২); শাহীন শাহ আফ্রিদি ৪-০-৩১-৪, হারিস রউফ ৪-০-৩৫-২, জামান খান ২.৩-০-৩০-২, সিকান্দার রাজা ১-০-২১-০, রাশিদ খান ৪-০-৪১-২, ডেভিড ভিসা ৪-০-৩৯-০
লাহোর কালান্দার্সঃ ১৭২/১০ (১৯.৪ ওভার), শাওয়াইজ ইরফান ০(৬), ফখর জামান ১১(১১), আব্দুল্লাহ শফিক ৭(১২), স্যাম বিলিংস ০(১),
হুসেইন তালাত ৬৩(৩৭), শাহীন শাহ আফ্রিদি ৫২(৩৬), সিকান্দার রাজা ২০(৭), ডেভিড ভিসা ০(২), রাশিদ খান ২(৩), জামান খান ৪(৩), হারিস রউফ ০(০); আরশেদ ইকবাল ৪-০-২৭-৩, আজমতউল্লাহ ওমারজাই ৪-০-৪০-২, মুজিবুর রহমান ৪-০-৪৪-০, ওয়াহাব রিয়াজ ৪-১-১৭-৩, আমীর জামাল ৩.৪-০-৩৮-১
পেশোয়ার জালমি ৩৫ রানে বিজয়ী
ম্যাচ সেরা : সায়িম আইয়ুব (পেশোয়ার জালমি)।